বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬

বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬ নিয়ে লেখা আর্টিকেল টি পড়ে আপনি আপনার বাংলাদেশ থেকে নেপাল যাওয়ার জন্য কি কি করতে বিশেষক বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। নেপালের রাজধানী হল কাঠমান্ড। এই কাঠমান্ডু শহরটি হল পাহাড় পাহাড় দিয়ে ঘেরা ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির এক মনোমুগ্ধকর সমরাহ। 
বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬
বাংলাদেশের ভ্রমণ পিয়াসী মানুষেরা প্রায়ই কাঠমান্ডুর এই মনোমুগ্ধ করবে দেখতে যান। বাংলাদেশের মানুষের কাঠমুন্ডি ভ্রমণের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো নেপাল বাংলাদেশেরদের জন্য visa free country। তাই আপনার যুদ্ধই যথেষ্ট পরিমাণ বাজেটে থাকে এবং আপনার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক থাকে , তাহলে আপনি visa ছাড়া কাঠমুন্ডু শহরের মনমুগ্ধ পরিবেশটি উপভোগ করে আসতে পারেন।

নেপাল যেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

নেপাল যদিও আপনার জন্য ভিসা ফ্রি কান্ট্রি তারপরেও আপনি যখন এয়ারপোর্ট কিংবা সীমান্ত পার হবেন তখন আপনার কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই কাঠমুন্ডো যেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে।

পাসপোর্ট: আপনি যদি বিমানযোগে কাঠমান্ডুতে যেতে চান ,তাহলে আপনার অবশ্যই একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে। আপনার সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ অবশ্যই ছয় মাসের বেশি থাকতে হবে। কেবলমাত্র পাসপোর্ট এর মেয়াদ ছয় মাসের বেশি কিংবা ছয় মাস থাকলেই আপনি বিমানযোগে কাঠমান্ডুতে যেতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র: অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি কার্ডটি সঙ্গে নেবেন। কারণ আপনার জাতীয়তা নিশ্চিতের জন্য অনেক সময় বিভিন্ন চেকাপের সম্মুখীন হতে পারেন। তখন আপনার এই জাতির পরিচয় পত্র বা এন আই ডি কার্ড টি লাগবে। তাই আপনি অবশ্যই আপনার এনআইডি কার্ডটি সঙ্গে নিবেন।

ফ্লাইটের টিকেট কিংবা বাস ট্রাভেলস এর কনফার্মেশন: আপনি যদি বিমানে যেতে চান তাহলে আপনার যাওয়ার ও আসার কনফার্মেশন টিকেট প্রয়োজন হবে। এছাড়া যদি আপনি বাসেও যেতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রেও আপনার কনফার্মেশন টিকেটের প্রয়োজন হবে। তাই আপনি যেভাবে যান না কেন তার একটা কনফার্মেশন কাগজে প্রয়োজন হবে।

হোটেল বুকিং রিসিট: আপনি যদি কাঠমান্ডুতে ভ্রমণে যেতে চান, তাহলে আপনাকে আগে থেকেই হোটেল বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। এবং আপনার সঙ্গে সে হোটেল বুকিংয়ের একটি রিসিট থাকতে হবে।

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট: আপনি যদি কাঠমান্ডু যেতে চান তাহলে আপনার আরেকটা যেয়ে কাগজের প্রয়োজন হবে সেটা হলো কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট। এ সার্টিফিকেট আপনার সর্বনিম্ন তিনটা ভ্যাকসিন কমপ্লিটের একটি সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।

ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা ক্যাশ প্রমাণ: আপনি যদি কাঠমুন্ডুতে যেতে চান তাহলে আপনাকে আপনি আপনার খরচ বহন করতে সক্ষম কিনা তার প্রমাণ হিসেবে আপনাকে একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে অথবা এক্ষেত্রে আপনি নগদ টাকাও দেখাতে পারেন।

ছবি: এই ভ্রমণের সময় আপনার কাছে আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি থাকা ভালো। কেননা অনেক সময় এই ছবিটি আপনার কোন কাজে আসতে পারে।

কাগজপত্র গুলো যেভাবে তৈরি করবেন

পাসপোর্ট: আপনি যদি ফ্লাইটে যেতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই একটি পাসপোর্ট লাগবে। এই পাসপোর্টটি আপনি আপনার স্থায়ী পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করে প্রয়োজনীয় ফ্রম ফিলাপ ও ফি প্রদান করে যথারীতি নিয়মে আপনি আপনার পাসপোর্টটি সংগ্রহ করুন।

এনআইডি কার্ড: আপনি আপনার নিকটস্থ উপজেলা নির্বাচন কমিশনার অফিস থেকে অথবা সরকারি ওয়েবসাইট www.nidw.gov.bd থেকে বের করে নিন।

ফ্লাইট বুকিং: আপনি যদি ফ্লাইটে যেতে চান তাহলে আপনি এটা অনলাইন প্লাটফর্ম GoZayaan, ShareTrip, Biman BD, US-Bangla ,Shohoz এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি থেকে আপনি আপনার পছন্দমত ফ্লাইট বুকিং দিতে পারেন।

হোটেল বুকিং: আপনি যেহেতু কাঠ মন্ডতে যেতে চাচ্ছেন এবং আপনাকে পূর্বে থেকেই হোটেল বুকিং করতে হবে সে ক্ষেত্রে আপনি Booking.com, Agoda, Airbnb এই অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী আপনার পছন্দমত হোটেল বুকিং করতে পারেন।

কোভিড সার্টিফিকেট: আপনার একটি অতি প্রয়োজনীয় যে কাগজটি হলো সেটি হল কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট। এখানে আপনার সর্বনিম্ন দুইডোজ কমপ্লিট এর একটি সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। আপনি এই সার্টিফিকেটটি www.surokkha.gov.bd থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আপনি সার্টিফিকেটটি ডাউনলোড ডাউনলোড করুন।

ব্যাংক স্টেটমেন্ট: আপনি আপনার খরচ বহন করতে সক্ষম কিনা তার প্রমাণ হিসেবে আপনাকে একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার নিঃস্ব ব্যাংক শাখা থেকে শেষ তিন মাসের একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করুন।

বাংলাদেশ থেকে কাঠমুন্ডু যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬ থেকে আমরা নেপাল যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ থেকে কাঠমুন্ডু যেতে চান তাহলে আপনি দুইটি উপায়ে যেতে পারেন। এক নম্বর হলো আকাশপথে এবং দ্বিতীয় টি হল সড়ক পথে। আপনি আকাশ এবং সড়ক এই দুই পথেই যেতে পারবেন তবে সবচাইতে ভালো উপায় হল আকাশ পথ। চলুন আমরা জেনে নেই আকাশ পথে যাওয়ার উপায়।

বিমান পথ : আপনি খুব সহজেই Biman Bangladesh, US-Bangla, Himalaya Airlines কোম্পানিগুলো থেকে খুব সহজেই ঢাকা টু কাঠমুন্ডু সরাসরি ফ্লাইট ক্রয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার রিটার্ন ক্রিকেট ফি পড়বে প্রায় ১৮ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। আপনি এই বাজেটের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট টিকেট ক্রয় করে এক ঘন্টা 15 মিনিটের মধ্যেই সরাসরি ফ্লাইটে কাঠমুন্ড পৌঁছাতে পারেন।

বাস + ট্রেন + গাড়ি (সড়কপথে): আপনার বিমান পথ ছাড়াও বাস ট্রেন্ড অথবা গাড়িতে চড়ে কাঠমান্ডুতে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে যাত্রাপদটি হবে অনেকটা দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ এবং জটিল বিষয়। চলুন আমরা জেনে নেইবাস + ট্রেন + গাড়ি (সড়কপথে) সম্পর্কে।

ঢাকা → সিলেট/রংপুর → শিলিগুড়ি → পানিতংকি → কাঁকরভিটা(ভারত-নেপাল সীমান্ত) → কাঠমুন্ডু (নেপালি বাস)।

ট্রানজিট ভিসা: আপনার ভারতের ট্রানজিট ভিসা লাগবে।

সময় লাগবে: সড়ক পথে আপনার যেতে সময় লাগবে প্রায়  ৩০-৪০ ঘণ্টা।

খরচ: সড়ক পথে আপনার সব মিলয়ে খরচ হবে  আনুমানিক ৮,০০০ - ১২,০০০ টাকা (বাস ভাড়া + খাবার + থাকার জন্য)।

কাঠমুন্ডু ভ্রমণের আনুমানিক খরচ (৩ রাত ৪ দিন)

আপনি যদি কাঠমুন্ডু যেতে চান তাহলে আপনার বাজেট কেমন হবে তার একটা তালিকা নিচে প্রদান করা হলো।
 খরচের খাত            আনুমানিক খরচ (টাকা)
  • ফ্লাইট টিকিট (রিটার্ন)    ১৮,০০০ – ৩০,০০০
  • হোটেল (প্রতি রাত ১২০০–২০০০)৩,৬০০-৬,০০০
  • খাবার                       ২,০০০ – ৩,০০০
  • স্থানীয় ভ্রমণ ও দর্শনীয় স্থান ১,৫০০ – ৩,০০০
  • অন্যান্য (স্যুভেনির, টিপস, এন্ট্রি ফি)        ১,০০০ – ২,০০০
  • মোট খরচ           ২৬,০০০ – ৪৪,০০০ টাকা

কাঠমুন্ডুর সেরা দর্শনীয় স্থান। বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি নেপালের কাঠমুন্ডু। নেপালের কাঠমান্ডুতে রয়েছে বহু সুন্দর ও অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা সম্পূর্ণ কিছু স্থান। যেমন স্বয়ম্ভুনাথ (Monkey Temple) বৌদ্ধ মন্দির , পশুপতিনাথ মন্দির ,ভক্তপুর দরবার স্কয়ার ,নাগারকোটা, পাটানি স্কয়ার, থামেল এলাকা সহ আরো বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। এরমধ্যে বেশ কিছু স্থান গুলোকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বলেও অবহিত করেছেন। তাহলে চলুন আমরা এ সকল দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করি।

স্বয়ম্ভুনাথ (Monkey Temple) বৌদ্ধ মন্দির : স্বয়ম্ভুনাথ শব্দের অর্থ স্বয়ম্ভু মানে স্বয়ং উদ্ভূত অর্থাৎ ঈশ্বরের সৃষ্টি। এটি প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো স্থাপত্য যেটি হিন্দু ও বৌদ্ধ উভয় ধর্ম অনুসারীদের কাছে পবিত্র স্থান বলে পরিচিত। ঐতিহাসিক এই স্থাপত্যকে Monkey Temple বলে অভিহিত করা হয়। কারণ এখানে প্রচুর বানর এর সমাগম থাকে। 

এই স্থাপত্যটি কাঠমান্ডু শহর থেকে পশ্চিমে একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই পুরো শহরটাকে দেখতে পাবেন।। স্থাপত্য শিল্পটিকে ইউনেস্কো world heritage site বলে ঘোষিত করেছেন। এটি Thamel থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তামিল থেকে আপনি হেঁটে ট্যাক্সি কিংবা যেকোনো লোকাল বাসে চড়ে যেতে পারবেন। 

আপনি যদি হেঁটে যেতে চান তাহলে আপনার সময় লাগতে পারে আনুমানিক 3০ থেকে ৪০ মিনিট। ঐতিহাসিক স্থানটি প্রতিদিন খোলা পাবেন সকাল 5.00 থেকে রাত্রি 8.00 পর্যন্ত। আপনি যদি এই ঐতিহাসিক স্থানটি পরিদর্শন করতে চান তাহলে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট প্রবেশ ফিরিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এখানকার প্রবেশ ফ্রি প্রায় ২০০ নেপালি রুপ। 

তবে যারা নেপালি নাগরিক রয়েছে তাদের জন্য এটা সম্পূর্ণ ফ্রি। আপনি যদি এই মধুরটির শীর্ষ উঠতে চান তাহলে আপনাকে ৩৬৫ ধাপের সিঁড়ি উপরে উঠতে হবে। উপরে উঠলে দেখতে পাবেন আপনি বিশাল সাদা গম্বুজ এর উপরে স্বর্ণের টাওয়ার এবং তার চারিদিকে বুদ্ধের চোখ আঁকানো। এ বুদ্ধ মন্দির এর চারদিকে চারটি চোখ রয়েছে যেটাকে দিব্যদৃষ্টি বলে বৌদ্ধধর্ম অবলম্বনকারীরা বিশ্বাস করে থাকেন। এছাড়া আপনি দেখতে পাবেন অসংখ্য বানরের দল। 

এখানকার বানরগুলো খুবই মজাদার কিন্তু আপনাকে খাবার গুলোর সবসময় সাবধানে রাখতে হবে। এছাড়া আপনি পাহাড়ের উপর থেকে কাঠমুন্ডু শহরের একটা সুন্দর ভিউ পাবেন। যেটা খুবই অসাধারণ বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময় একটা অপলক দৃশ্য দেখতে পাবেন আপনার মনকে খুবই তৃপ্তি প্রদান করবে এবং যার ফলে আপনি বারবার এই দৃশ্যটি উপভোগ করতে হাসতে চাইবেন। 

আরেকটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন আপনি যখন ফ্রি বেয়ে উপরে উঠবেন তখন আপনার অনেক কষ্ট হতে পারে তাই তাড়াহুড়ো করবেন না ধীরে ধীরে উপরে উঠুন এবং অবশ্যই আপনার সঙ্গে পানির বোতল এবং হালকা নাস্তা রাখুন। কাঠমুন্ডু গিয়ে আপনি যদি এই মন্দিরটি প্রদর্শন না করেন তাহলে আপনি আপনার ভ্রমণটি সম্পূর্ণ হয়েছে এটা বলতে পারবেন না।

পশুপতিনাথ মন্দির: পশুপতিনাথ মন্দিরটি নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডু শহরের পূর্ব পার্শে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাগমতী নদীর কিরে অবস্থিত। এই স্থাপত্যটি লিচ্ছবি রাজবংশ চতুর্থ ও পঞ্চম শতাব্দি হতে ধর্মীয় ভাবে ব্যবহার করলেও বর্তমানে মন্দিরটি মূলত ১৭ শতকের দিকে রাজা ভূপতীন্দ্র মল্ল কর্তৃক নির্মিত হয়। 

এই মন্দিরটি হিন্দুদের জন্য ঐতিহাসিক এবং অত্যন্ত পবিত্র তীর্থস্থান বলে মনে করেন। পশুপতি নাথ মন্দিরটি হিন্দু ধর্মীদের অন্যতম প্রধান দেবতা শিব পশুপতিনাথ কে উৎসর্গ করেন। এই মন্দিরটি শুধু মাত্র নেপালিদের জন্য নয় এটি সমগ্র ভারতীয়দের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রাচীন শিব মন্দির হিসেবে পরিচিত। এই মন্দিরটিকে ইউনেস্কো ১৯৭৯ সালে ঐতিহাসিক স্থানের মর্যাদা দিয়েছেন।

আপনি যদি এর মধ্যে একটি ভালোভাবে খেয়াল করে তাহলে দেখবেন যে এর কাঠামোটি অনেকটা পাগডা মত এবং এর ছাদ সোনা দিয়ে মোড়ানো। এখানে চতুর্মুখী শিবলিঙ্গ স্থাপিত রয়েছে যেটা খুবই পবিত্র হিসেবে মনে করেন হিন্দু ধর্ম অবলম্বনকারীরা। যারা হিন্দু ধর্ম অবলম্বনকারী রয়েছেন শুধু তারাই এই মন্দিরটির ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। যারা অন্য ধর্ম অবলম্বনকারী রয়েছে তারা এই মূল মন্দিরের বাইরে যে সকল ছোট ছোট মন্দির রয়েছে সে সকল মন্দির পরিদর্শন করতে পারেন।

এই মন্দিরে প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্ত অনুসারীগণ আসেন বিশেষ করে শিবরাত্রির উৎসব উপলক্ষে। এই উৎসবের সময় বিভিন্ন দেশ থেকে বহু সাজেশন্ন্যাসী ভক্তরা এসে হাজির হন। এই মন্দিরে ভক্তবৃন্দ তাদের তাদের ধ্যান প্রার্থনা এবং পূজার মাধ্যমে তাদের অন্তরের শান্তি লাভ করেন। পশুপতিনাথ মন্দিরটি শুধু একটি ধর্মীয় স্থানে নয় এর বরং এটি নেপালের সংস্কৃতি ইতিহাস ও স্থাপত্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গৌরবের প্রতীক। যেটা নেপালকে করে তুলেছে অনন্য ও অতুলনীয়।

ভক্তপুর দরবার স্কয়ার: ভক্তপুর দরবারী স্কোয়ার নেপালের সর কাঠমুন্ডু উপত্যকার একটি অন্যতম ঐতিহাসিক ও প্রাচীন সাংস্কৃতিক স্থাপনার মধ্যে অন্যতম। এটি প্রাচীন মল্ল বংশের রাজধানী ভরপুর শহরে অবস্থিত এবং ইউনেস্কো ঘোষিত একটি ঐতিহাসিক স্থান। এখানে রয়েছে বহু পুরাতন রাজপ্রাসাদ মন্দির চৌক্য স্মৃতিস্তম্ভ যা নেওয়ার স্থাপনা ও শিল্পকলার একটি অন্যতম নিদর্শন। 

এখানে যতগুলো স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে বিখ্যাত স্থাপনা হল ন্যাতাপোলা মন্দির , পঞ্চান্ন জানালার প্রাসাদ এবং গোল্ডেন গেট। এখানকার প্রতিটি স্থাপনা কাঠ ও পাথরের সূক্ষ্ম কারুকার্য দ্বারা নির্মিত হয়েছে যেটা নেপালের প্রাচীন সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিচয় বহন করে। গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপত্যটি কাঠমান্ডু থেকে প্রায় 13 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যেখানে আপনার ট্যাক্সি বা বাসে খুব সহজেই পৌঁছে যাবেন। 

ভক্তপুর স্কয়ারে প্রবেশের জন্য যারা বিদেশি পর্যটক রয়েছে তাদেরকে প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করতে হয় সেটা প্রায় ১৫০০ থেকে ১৮০০ রুপির। তবে SAARC ভুক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এ পর্যটন কেন্দ্রটি প্রতিদিন সকাল ৯ টা হতে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত দর্শণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। আপনি যদি দর্শনের এই স্থানটি পরিদর্শন করতে চান তাহলে বছরের মাস থেকে মেয়ে এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে আসবেন। 

কেননা এ সময় ঘোরাঘুরির জন্য সব চাইতে উপযুক্ত কারণ তখন আবহাওয়া খুবই মর্ম অপরিষ্কার থাকে। স্কয়ার প্রফেসর সময় দর্শনার্থীদের অবশ্যই শান্তি এবং সম্মানজনক পোষাক পরিধানের পরামর্শ দেওয়া হয় বিশেষ করে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করার সময়। আপনি যদি ফটোগ্রাফি করতে চান তাহলে একটু সাবধানতা অবলম্বন করবেন কেননা সকল জায়গায় ফটোগ্রাফির অনুমতি থাকলে বিশেষ কিছু জায়গায় ছবি তোলার নিষেধ রয়েছে। 

সেজন্য আপনি সাইনবোর্ড গুলো দেখে সতর্কতার সাথে ছবি তুলবেন। আপনি যদি ভক্তপুর দরবার স্কয়ারের টিচার্স টি অনুধাবন করতে চান তাহলে একজন গাইড ভাড়া করবেন। কারণ এই গাইডার আপনাকে প্রতিটি স্থাপনার সঠিক ইতিহাস ও প্রতিটি স্থাপনার গুরুত্ব আপনাকে বুঝিয়ে বলবে এবং আপনি সেটা মর্ম অনুধাবন করতে পারবেন। ভক্ত পুর স্কয়ারের বিশেষ খাবার হল জুজু ঢাউ যেটা ভক্তপুরের ঐতিহাসিক মিষ্টি দই হিসেবে পরিচিত। সকল দিক থেকে বিবেচনা করলে ভক্তপুর স্কয়ার পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং ধর্মের সংমিশ্রণের পূর্ণ গন্তব্য । আপনি নেপাল ভ্রমণের পূর্বে বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬ নিলেখা এ আর্টিক্যালটির সম্পূর্ণ পড়ে সকল তথ্য জানার চেষ্টা করুন

নাগারকোট: নাগারকোটা নেপালের যে সকল পর্যটক কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হিমালয় দর্শন এবং শান্ত পরিবেশের জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। নাগার কোটা পর্যটন কেন্দ্রটি নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডু হতে অবস্থিত। এবং এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২১৭৫ মিটার উচ্চতায় ভক্তপুর জেলায় অবস্থিত। 

আপনি যদি একজন পর্যটক হন তাহলে এই স্থানটি হবে আপনার জন্য এমন একটি গন্তব্যস্থান যেখানে একদিকে হয়েছে হিমালয় পর্বতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অপরদিকে রয়েছে ট্রেডিং সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দর্শন এবং স্থায়ী সংস্কৃতি সমন্বয়ের সুযোগ। মনোবদ্ধকর এ পরিগোষ্ঠী অবলোকন করার জন্য আপনি ট্যাক্সি লোকাল বাদ কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে চলে যেতে পারেন। 

এক্ষেত্রে আপনার সময় থাকতে পারে আনুমানিক ১.৫ থেকে ২ ঘন্টার মত। আপনি যদি নাগা কটায় পৌঁছান এবং আকাশ যদি পরিপূর্ণ শিক্ষার থাকে তাহলে আপনি মাউন্ট এভারেস্ট সহ মোট আটটি হিমালয়ের রেঞ্জ দেখতে পাবেন। এছাড়া আপনি আরো যেসব জিনিস দেখতে পাবেন সেগুলো হল সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় নাগরিকতা ভিউ টাওয়ার স্থায়ী সংস্কৃতি ও গ্রাম্য পরিবেশ এবং ট্রেডিং ও হ্যাকিং।

আপনি যদি নাগরকোট এ এসে অবস্থান করতে চান তাহলে আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী বিলাসবহুল মাঝারি এবং আপনার বাজেটের মধ্যে যেকোনো হোস্টেল কিংবা গেস্ট হাউসে অবস্থান করতে পারেন। আপনি যদি বিলাস বহুল হোস্টেল গুলো তে হতে চান তাহলে আপনি hotel mystic mountain , club himalaya এ অবস্থান করতে পারেন। 

এছাড়া আপনি যদি মাঝারি মানের হোস্টেলে থাকতে চান তাহলে আপনি hostel country villa, hostel view point এ থাকতে পারেন আপনার বাজেটের মধ্যে যেকোনো ছোট গেস্ট হাউস ও হোমস্টেড এ অবস্থান করতে পারেন। আপনার যদি নাগারকোটার এ সকল মনোরম দৃশ্য দেখতে চান তাহলে আপনাকে পূর্ব থেকেই কিছু সময়ই নির্ধারণ করতে হবে যখন আপনি আসলে এখানকার সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন। 

যেমন আপনি যদি অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আসেন তাহলে আপনি এখানকার পরিষ্কার আকাশ ও ঠান্ডা আবহাওয়া উপভোগ করতে পারবেন এবং হিমালয়ের পরিষ্কার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাবেন। এছাড়া আপনি যদি মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে আসেন তাহলে আপনি এখানে ফুলের সমরহ দেখতে পাবেন। এ সময়টা আবহাওয়া অনেকটা আরামদায়ক থাকে। 

তবে আপনার যদি জুন থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে আসেন তাহলে আপনি নাগারকোটা কে সবুজে ঢাকা দেখতে পাবেন। তবে আপনি এই সময়তে হিমালয়ের পরিষ্কার দৃশ্য নাও দেখতে পেতে পারেন। আপনি নাগারকোটা তে আসলে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পর্যটন ফি প্রদান করে প্রবেশ করতে হবে এক্ষেত্রে আপনাকে দুই থেকে তিনশ ত নেপালি রুপি গুনতে হতে পারে।

পাটান স্কয়ার: পাঠান দরবারী স্কয়ার নেপালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থান গুলোর মধ্যে একটি। দৌলতপুর জেলার পাঠানো শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক world heritage site স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। ঐতিহাসিক এই স্থানটি মূল্য রাজবংশের আমলে নির্মিত। এটি ছিল তৎকালীন রাজাদের প্রশাসনিক ও ধর্মীয় কেন্দ্র। 

এখানকার মন্দির রাজপ্রাসাদের কারকার্য ও সংস্কৃতি তৎকালীন সময়ের রাজাদের শিল্পচীর প্রতিফলন। এখানকার কাঠ ও পাথরের নিখুঁত খোদাই ধাতব ভাস্কর্য সোনার রঙ্গিন বৌদ্ধবিহার সবকিছু মিলিয়ে নেপালে নেওয়ার চেষ্টা উদাহরণ। পাঠান দরবার স্কয়ার নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডু থেকে ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণ অবস্থিত যেখানে ট্যাক্সি বাস অথবা প্রাইভেট গাড়িতে খুব সহজেই পৌঁছাতে পারবেন। 

পাটান দরবার স্কয়ারের সবচাইতে জনপ্রিয় দর্শনের স্থান হল কৃষ্ণ মন্দির হিরণ্যবর্ণ মহাবিহার মন্দির বিশাল ঘন্টা ও স্তম্ভ সহ রাজপ্রাসাদ কমপ্লেক্স। রাজপ্রাসাদ কমপ্লেক্স এর তিনটি অংশে বা চৌক রয়েছে। চৌকোটিটি হল যথাক্রমে মূল চৌক সুন্দরী চৌকো এবং কেশব নারায়ণ চৌকো। আপনি যদি নেপালের পাটান দব্বার স্কয়ার ভ্রমণ করতে চান তাহলে আপনি অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে যাবার চেষ্টা করবেন। 

কারণ এই সময়ে এখানকার আবহাওয়া শুষ্ক পরীক্ষার এবং মনোরম থাকে। বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব যেমন কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ইন্দ্র যাত্রা উপলক্ষে একটি উৎসব মুখর থাকে। আপনি যদি ঐতিহাসিক এই স্থানটি পরিদর্শন করতে চান তাহলে পর্যটক হিসেবে আপনাকে এর প্রবেশ ফ্রি গুনতে হবে। পাঠান দরবার স্কয়ারের প্রবেশ ফি ১০০০ নেপোলিয়ন রুপি বার সময় বেঁধে পরিবর্তন হতে পারে। 

আপনি যদি এখানে যেতে চান তাহলে নয়টা হতে সন্ধ্যা পাঁচটার মধ্যে যাবার চেষ্টা করবেন। দর্শনের এই স্থানটি নয়টা হতে সন্ধ্যা ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে প্রতিদিন। আপনি প্রবেশের পর্বে অবশ্যই এর প্রধান গেটে অবস্থিত অবস্থিত হতে টিকেট সংগ্রহ করবেন। আপনি যদি সেখানকার সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চান এবং এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে চান তাহলে একজন স্থায়ী গাইডার নিয়োগ করবেন।

থামেল এলাকা : আপনি যদি একজন পর্যটক হন তাহলে থামেল এলাকার সুন্দরভাবে পরিদর্শন করতে হলে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা প্রয়োজন। থামেল নামক এই এলাকাটি মূলত বিদেশি পর্যটকদের জন্য সাজানো হয়েছে। এই এলাকাটি পর্যটকদের জন্য খুবই নিরাপদ সচল ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রে ভরপুর এটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এবং ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। 

তাই আপনি বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি প্রাইভেট গাড়ি বা রাডার শেয়ার করে খুব সহজেই থামেল এলাকাতে পৌঁছাতে পারবেন। থামেল এলাকার রাস্তাগুলো খুবই শুরু এবং লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকে তাই আপনি পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করার চেষ্টা করবেন। এখানে আপনি গেস্ট হাউস হোস্টেল মিড রেঞ্জ এবং বিলাসবহুল হোটেল দেখতে পাবেন যেগুলোতে আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী থাকতে পারবেন। 

থামেল এলাকায় রেস্টুরেন্ট গুলোতে দেশীয় ও বিদেশি নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায় যেখানে আপনি আপনার পছন্দ সেই খাবারটি খেতে পারবেন। থামেল এলাকার আশেপাশে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেগুলো আপনি খুব সহজেই ভ্রমণ করতে পারবেন। এ দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্র্যান্ড অফ ড্রিমস, কাঠ কুন্ডু দরবার স্কয়ার, শম্ভুনাথ মন্দির, পশুপতীনাথ মন্দির, বৌদ্ধনাথ মন্দির আরো বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। 

আপনি এই দর্শনীয় স্থানগুলোতে পাঁচ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে হেঁটে উক্ত দর্শনের স্থানগুলো পরিদর্শন করতে পারবেন। এলাকাটি একজন পর্যটকের জন্য দারুন একটি জায়গা যেখানে আপনি একসাথে হিমালয়ের আবহাওয়া বৈচিত্র্যময় খাবার প্রাণবন্ত জীবনধারা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন।

কাঠমুন্ডুতে থাকার ব্যবস্থা। বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬

কাঠমুন্ডিতে থাকার ব্যবস্থা বৈচিত্র্যতা রয়েছে।এখানে আপনি বিলাসবহুল হোটেল থেকে শুরু করে আপনার বাজেট অনুযায়ী বাজেট হোটেলে ও অবস্থান করতে পারেন। তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই কাঠমান্ডুতে থাকার ব্যবস্থা সম্পর্কে।

বিলাসবহুল হোটেল : আপনি যদি আরামদায়ক ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পূর্ণ সকল ব্যবস্থা পেতে চান। তাহলে আপনি কাঠমন্ডুতে আন্তর্জাতিক মালের ৪ ও ফাইভ স্টার হোটেলে অবস্থান করতে পারেন। আপনি এই লাঞ্চারাস বা বিলাসবহুল হোটেলে পাবেন সুমিংপুল জিম রেস্টুরেন্ট কনফারেন্স রুম এবং টুলস সার্ভিস পয়েন্ট। বিলাস বহুল এ হোটেল গুলোতে অবস্থানের জন্য আপনাকে ৬০ থেকে ২০০০+ডলার গুনতে হবে প্রতি রাত। বিলাসবহুল এ হোটেল গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল Hotel Yak & Yeti (Durbar Marg), Hyatt Regency Kathmandu (Boudha), Hotel Shanker (Lazimpat), Marriott Kathmandu (Naxal), Aloft Kathmandu (Thamel).

মিড রেঞ্জ হোটেল: আপনার বাজেটে যদি মাঝারি এ ধরনের হয় এবং আপনি যদি ভালো মানের হোটেল খোঁজেন তার জন্য আপনার কাছে বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে। এই হোটেলগুলো সাধারণত বেশ সুন্দর পরিপাটি রুম রেস্টুরেন্ট ওয়াইফাই এবং মাঝে মাঝে ফ্রি ব্রেকফাস্ট অফার করে। এই হোটেল গুলোতে অবস্থান করার জন্য আপনাকে প্রতি রাত ২০ থেকে ৫০ ডলার খরচ করতে হতে পারে। হোটেল গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো Hotel Friends Home (Thamel) ,Ambassador Garden Home (Thamel), Kasthamandap Boutique Hotel (Thamel), Oasis Kathmandu Hotel (Lazimpat), Hotel Moonlight (Thamel).

বাজেট হোস্টেল ও গেস্ট হাউস: আপনার কাছে যদি বাজেট কম থাকে তাহলে আপনি কম খরচে থাকার জন্য থামেল, লাজিমপাত ও ফ্রিক স্টিট এলাকায় প্রচুর বাজেট হোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে যেগুলোতে আপনি থাকতে পারেন। এই হোস্টেল ও গেস্ট হাউসে আপনি ডরমিটরি বেড, শেয়ার বাথরুম এবং কমন কিচেন সুবিধা পাবেন। অনেক সময় এগুলোতে সিঙ্গেল রুমও পাওয়া যায়। 

আপনি যদি এই সকল বাজেট হোস্টেল ও গেস্ট রুমে থাকতে চান তাহলে আপনাকে প্রতি রাত 5 থেকে 15 ডলার খরচ করতে হবে। এই সকল হোস্টেল ও গেস্ট হাউসের মধ্যে অন্যতম হলো Alobar1000 (Thamel) , Zostel Kathmandu (Lazimpat) , Hotel Silver Home (Thamel) , The Sparkling Turtle Backpackers Hostel (Swayambhu).

উল্লেখ্য যে থাকার জন্য সবচাইতে ভালো এলাকা হলো থামেল এলাকা । থামেল এলাকা সবচাইতে নিরাপদ খাবার ও যানবাহনের সহজলভ্যতা রয়েছে। তাই আপনি থামেল এলাকায় থাকার চেষ্টা করবেন।

বাংলাদেশীদের জন্য কাঠমুন্ডুর সবচেয়ে মজার খাবার

বাংলাদেশীদের জন্য কাঠমান্ডের ভ্রমণ সবচেয়ে মজার ও উপভোগ্য একটি দিক হলো এখানকার বৈচিত্র্যময় ও মুখর চর খাবার সমূহ। নেপালি খাবারের স্বাদ ও পরিবেশ সন আমাদের দেশের সাথে প্রায় মিল রয়েছে আবার কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে তবে আপনি কিছু নতুন অভিজ্ঞতাও পাবেন। আপনি নেপালের কান মুন্ডু তে যেমন দেশীয় খাবার উপভোগ করতে পারবেন তেমনি কিছু তিব্বতি, চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল রান্নার মিশ্র স্বাদ উপভোগ করতেও পারবেন। তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই বাংলাদেশী পর্যটকদের জন্য কাঠ কুণ্ড সবচেয়ে জনপ্রিয় ও মজার খাবার সম্পর্কে।

মোমো : নেপালে সবচেয়ে জরুরি খাওয়ার হচ্ছে মোমো। তবে এটি বাংলাদেশী পর্যটকদের কাছেও খুবই পছন্দের একটি খাবার। মোমো মূলত সেদ্ধ বা ভাজা আকারে পরিবেশিত ডাম্পলিং জাতীয় খাবার যেটি গরু মুরগি খাসি মাংস কিংবা সবজিরপুর দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি খাবার জন্য থাকে টমেটো ধনে ও তিল দিয়ে তৈরি এক ধরনের বিশেষ চাটনি। এই খাবারটি আপনি থামেল এলাকা, নিউ রোড এবং বৌদ্ধ এলাকায় প্রায়ই প্রতিটি রেস্টুরেন্টে আপনি পাবেন।

নেপালি থালি: বাংলাদেশী পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হলো নেপালি থালি। এটি সাধারণত বাংলাদেশ খাবারের মতোই ভাত, ডাল, সবজি, মাংস, কিংবা মাছ ,আচার এবং সালাত দিয়ে সাজানো একটি পূর্ণাঙ্গ মিল। এই থালিতে বাংলাদেশের মতো অতিরিক্ত পরিমাণে ডাল-ভাত পরিবেশন করা হয়। এটি বাংলাদেশী পর্যটকরা সাধারণত দুপুর বা রাতের খাবার হিসেবে গ্রহণ করেন।

চাউমিন: বাংলাদেশের স্টেট ফুটের মতো জনপ্রিয় একটি ফুট হল চাউমিন। এটি সাধারণত ভাজা নুডুলস মুরগি ডিম সবজি এবং সস দিয়ে মজাদার ভাবে রান্না করা হয়। এটি আপনি আপনার পছন্দমত ঝাল দিয়ে তৈরি করতে নিতে পারেন। আপনি যদি কমছাল খান তাহলে কম ঝাল দিয়ে এবং বেশি ঝাল যদি খেয়ে থাকেন তাহলে বেশি ঝাল দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন। এই খাবারটি আপনে প্রায় সব জায়গাতেই পেয়ে যাবেন।

সেল রোটি: নেপালের আরেকটি মজাদার খাবার হল সেল রোটি। যেটি চালের কুড়া এবং চিনি দিয়ে তৈরি করা গোলাকার ভাজা রুটি যেটি খেতে অনেকটা ডোনেটের মতো মনে হয়।

চা ও দুধ চা: বাংলাদেশীদের মতোই নেপালেরাও চা খেতে খুবই পছন্দ করে। এখানকার চায়ের স্বাদ অনেকটা বাংলাদেশী চায়ের স্বাদের মতোই। এখানে চায়ের সঙ্গে আপনি স্নাক্স বা সেল রুটি পাবেন , যেটি খেতে খুবই মজাদার।

হালাল খাবারের ব্যবস্থা: বাংলাদেশী মুসলমান পর্যটকদের জন্য বাজ সকল মুসলমান পর্যটকদের জন্য এখানে হালাল রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া আপনি এখানে ভারতীয় ও আরবিক খাবারের হালার রেস্টুরেন্ট ও পেয়ে যাবেন। যেখানে আপনি আপনার পছন্দ মত খাবার গুলো খেতে পারবেন।

কাঠমুন্ডুর সুবিধা ও অসুবিধা

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও ঐতিহাসিক স্থাপত্য শিল্পের সমরাহর দেশ নেপাল। এখানে দেশ বিদেশ থেকে বহু পর্যটক আসেন যারা নেপালের কাঠমন্ডের শহ র বিশেষ কিছু স্থানে সৌন্দর্য উপভোগ করেন। যারা বাংলাদেশী পর্যটক রয়েছেন তারা নেপালে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা উপভোগ করেন। তাহলে চলুন জেনে নেই আমরা কাঠমান্ডুর সুযোগ সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে।

সুবিধা
  • বাংলাদেশীদের জন্য নেপাল ভিসা ফ্রিজ দেশ
  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শনের সময়ের দেশ নেপাল।
  • এখানে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য হালাল খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে।
  • এখানকার মানুষজন অত্যন্ত অতিথি আপ্যায়ন পরায়ণ এবং খুবই সহানুভূতিশীল।
  • আপনার বাজেটের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের অনুভব।
অসুবিধা সমূহ
  • কিছু কিছু এলাকা সড়ক ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না
  • উচ্চতায় যাওয়ার ফলে কিছু মানুষের শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • পর্যটন মৌশুমে পর্যটকদের নিকট হইতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।

সারসংক্ষেপ (Checklist)। বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬

         বিষয়                          তথ্য
  • ভিসা                               দরকার নেই
  • কাগজপত্র    পাসপোর্ট, NID, টিকিট, হোটেল বুকিং, কোভিড সার্টিফিকেট
  • যাতায়াত    ফ্লাইট ভালো (১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট)
  • খরচ      আনুমানিক ২৬,০০০ – ৪৪,০০০ টাকা (৩-৪ দিনের জন্য)
  • থাকার জায়গা    Thamel এলাকার হোটেল বা হোস্টেল
  • দর্শনীয় স্থান স্বয়ম্ভুনাথ, পশুপতিনাথ, ভক্তপুর, নাগারকোট
  • খাবার     মোমো, থুকপা, ডাল-ভাত (সাশ্রয়ী)
  • সুবিধা         নিরাপদ, সুন্দর, বাজেট-ফ্রেন্ডলি
  • অসুবিধা রাস্তা কিছুটা খারাপ, পর্যটকের ভিড় বেশি

শেষ কথা:বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬

বাংলাদেশ টু নেপাল ভ্রমণ গাইড লাইন ২০২৬ নিয়ে লেখা যদি আপনি শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আপনি নেপাল ভ্রমণ সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন। তাই আপনি যদি আমাদের আর্টিকেলটি এখনো সম্পূর্ণ পড়ে না থাকেন তাহলে এখনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন এবং আপনার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। পরিশেষে অভাবের আর্টিকেলটি যদি আপনারা ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার নিকটস্থ বন্ধুদের নিকট শেয়ার করে দিন এবং তাদেরকেও নেপাল ভ্রমণ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানার সুযোগ তৈরি করে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url