দুবাই যেতে কত টাকা লাগে - দুবাই স্টুডেন্ট ও কোম্পানি ভিসার দাম ২০২৬
আপনি কি এই মুহূর্তে দুবাই যেতে কত টাকা লাগে, সেই বিষয়ে অনলাইনে তথ্য খুঁজছেন?
যদি আপনার উত্তর 'হ্যাঁ' হয়ে থাকে, তবে আপনি একেবারেই সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের
এই পোস্টে আমরা দুবাইতে স্টুডেন্ট ভিসা খরচ, ট্যুরিস্ট ভিসা খরচ, দুবাই যেতে কত
বছর বয়স লাগে এবং ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
মূলত উন্নত জীবনযাপন এবং উচ্চ বেতন পাওয়ার আশায় আমরা অনেকেই দুবাইতে প্রবাসী
হিসেবে যেতে খুবই আগ্রহী। কারণ, বিদেশে গিয়ে যদি বেশি পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা
না যায়, তবে যাওয়া আর না যাওয়া একই কথা। ঠিক এই কারণেই আমরা দুবাইকে বেশি
গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
আপনার চিন্তাভাবনা যদি এমন হয় যে, আপনি দুবাই যাবেন এবং সেখানে গিয়ে উচ্চ বেতনে
চাকরি করবেন, তাহলে এই লেখাটি বিশেষভাবে আপনার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। তাই, অনুরোধ
রইল আজকের এই পোষ্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
দুবাই যেতে কত টাকা লাগে
দুবাই একটি উন্নত রাষ্ট্র হওয়ায় বাংলাদেশের বহু মানুষ সেখানে যেতে আগ্রহী। তাই
বর্তমানে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, দুবাই যেতে মোট কত টাকা খরচ হতে পারে? আসলে
দুবাই যাওয়ার মোট খরচ বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, বিশেষ করে আপনি কোন
ক্যাটাগরির ভিসা নিচ্ছেন তার ওপর।
এছাড়া বিমান খরচ, ভিসা প্রক্রিয়াকরণের ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ বাবদ
খরচ মিলিয়ে এই মোট অর্থের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশ
থেকে দুবাই যাওয়ার জন্য আপনার সর্বনিম্ন ৩ লক্ষ টাকা থেকে প্রায় ৭ লক্ষ
টাকার মতো খরচ হতে পারে।
📌আরো পড়ুন👉পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে জেনে নিন
সাধারণত, বিভিন্ন ভিসার প্রসেসিংয়ের সময়ে আপনার ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা,
বা ক্ষেত্র বিশেষে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে, যদি আপনি কোনো
এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার মোট খরচটা তুলনামূলকভাবে
বেশি হবে।
যদি আপনি এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে বিমান ভাড়া, ভিসা প্রক্রিয়া এবং দুবাই
পৌঁছানো পর্যন্ত সমস্ত ব্যবস্থা করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার মোট খরচ ৫ লক্ষ
থেকে ৮ লক্ষ টাকার মতো হতে পারে। চলুন, এবার জেনে নেওয়া যাক কাজের ধরনের ওপর
ভিত্তি করে কোন ভিসার জন্য কেমন খরচ হতে পারে।
কোম্পানি ভিসাঃ অনেকেই কোম্পানি ভিসায়
দুবাই যেতে চান, কারণ এই ক্ষেত্রে কোম্পানি কর্মীদের সকল দায়দায়িত্ব বহন
করে। দুবাই যেহেতু একটি বড় অর্থনৈতিক কেন্দ্র, তাই এখানে বিভিন্ন ধরনের বড় বড়
কোম্পানি রয়েছে। এই কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক নিয়োগ
করে থাকে।
মূলত তাদের কাজের ধরন ও চাহিদা অনুযায়ী তারা লোকবল সংগ্রহ করে। এক্ষেত্রে
আপনি যদি দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে ভালো কোনো কোম্পানি ভিসায় দুবাই যেতে
চান, তবে এই পুরো প্রক্রিয়ায় আপনার খরচ ৩ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ টাকার
মতো হতে পারে।
কাজের ভিসাঃ বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বহু
লোক কাজের ভিসায় দুবাই যাচ্ছেন। বিশেষ করে, যাদের বিভিন্ন ধরনের কাজের
অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা সহজেই দুবাই যেতে পারছেন এবং দুবাই সরকারও তাদের বিশেষ
সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। তাই, আপনার যদি কোনো কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, তবে সেই
কাজের ওপর ভিত্তি করে আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
যদি আপনি সরাসরি কাজের ভিসায় যেতে চান, তবে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ২ লক্ষ
৫০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ টাকার মতো। আর যদি আপনি কোনো বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে
এই প্রক্রিয়ায় যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার খরচ ৩ লক্ষ ২০ হাজার থেকে প্রায় ৪
লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।
ফ্রি ভিসাঃ অনেকেই হয়তো দুবাইয়ের ফ্রি
ভিসা সম্পর্কে জানেন না। চলুন, এই ফ্রি ভিসার সুযোগ সুবিধাগুলো সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। আপনি যদি এই ভিসায় দুবাই যেতে পারেন, সেক্ষেত্রে
আপনি অনেক সুবিধা পাবেন এবং বাংলাদেশ থেকে এই ভিসার মাধ্যমে সেখানে যাওয়া
সম্ভব।
ফ্রি ভিসার একটি বড় সুবিধা হলো, সেখানে আপনি নিজের ইচ্ছা মতো কাজ করার অনুমতি
পাবেন। আপনি যদি দুবাইতে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করতে চান এবং ইচ্ছামতো ইনকাম
করতে চান, তাহলে আপনার ফ্রি ভিসায় যাওয়া উচিত। এই ভিসায় আপনি যেকোনো কাজ
করার স্বাধীনতা পান।
বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ের ফ্রি ভিসায় যাওয়ার জন্য আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৫
লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মতো। যারা দুবাইতে বিভিন্ন ধরনের বা নিজের পছন্দ
অনুযায়ী কাজ করতে চান, তাদের জন্য ফ্রি ভিসা একটি ভালো বিকল্প।
ভিজিট ভিসাঃ বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষই
দুবাই ভ্রমণ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। এই উদ্দেশ্যে সেখানে যেতে হলে আপনাকে
ভিজিট ভিসার (পর্যটন ভিসা) জন্য আবেদন করতে হবে। চলুন, এই ভিসায় কীভাবে দুবাই
যেতে পারবেন এবং এর জন্য আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত
তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ের ভিজিট ভিসায় যান,
সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় আড়াই লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকার মতো।
অন্যদিকে, আপনি যদি সরকারিভাবে বা নিজে সরাসরি ভিসার আবেদন করেন, তবে আপনার
মোট খরচ কমে ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।
স্টুডেন্ট ভিসাঃ বাংলাদেশের বহু
ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার জন্য দুবাই যেতে আগ্রহী। এই উদ্দেশ্যে সেখানে যেতে
হলে আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজন হবে, কিন্তু হয়তো আপনি এর খরচ সম্পর্কে
সঠিক তথ্য জানেন না। চলুন, স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে,
সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
তবে মনে রাখবেন, যদি আপনি সরকারিভাবে স্কলারশিপ নিয়ে দুবাই যাওয়ার সুযোগ পান,
সেক্ষেত্রে আপনার মোট খরচ অনেকটাই কমে যাবে। এজন্য আপনি যদি সরকারিভাবে
স্কলারশিপ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে দুবাই যাওয়ার ইচ্ছা করেন, সেক্ষেত্রে আপনার
খরচ হবে মাত্র দেড় লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো।
অন্যদিকে, যদি বেসরকারিভাবে সেখানে যেতে চান, তবে আপনার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য
খরচ হবে প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মতো।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসাঃ আপনি যদি দুবাইতে
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চান, তবে এই ভিসাই হলো কাজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।
যদি আপনি সরকারিভাবে অথবা সরাসরি কোম্পানির মাধ্যমে এই ভিসা পান, তবে আপনার
খরচ হতে পারে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মতো।
আর যদি আপনি কোনো বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান, সেক্ষেত্রে খরচ বেড়ে ৫
লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।
এছাড়াও, দুবাইয়ের কোম্পানিগুলো সরাসরি কর্মী বা শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে,
যার ফলে বাংলাদেশের বহু মানুষ সেখানে যাওয়ার সুযোগ পান। অনেকে আবার স্পন্সর
ভিসার মাধ্যমেও দুবাই যেতে পারেন। এই ভিসাগুলো ছাড়াও বাংলাদেশে দুবাইয়ের
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যাওয়ার অনুমোদন রয়েছে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে কর্মীদের জন্য বিমান ভাড়া সহ ভিসার খরচ—সবকিছুই বহন করা
হয়ে থাকে। তবে এই সুযোগ সবাই পান না। যারা এই সুবিধা পান, সেক্ষেত্রেও
কোম্পানি একটি ন্যূনতম খরচ ধরে রাখে, যা প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকা হতে
পারে। আবার, কিছু ক্ষেত্রে এই খরচ পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখ টাকার মতোও হতে
পারে।
ফ্যামিলি ভিসাঃ আপনি যদি পরিবার নিয়ে
দুবাইতে উন্নত জীবন যাপন করার ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন এবং পরিবারের সকল সদস্যকে
নিয়ে সেখানে যেতে চান, তাহলে মোট খরচ আপনার সদস্য সংখ্যা বা পরিবারের আকারের
ওপর নির্ভর করবে। সাধারণত, পরিবারের সদস্য সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আপনার
ফ্যামিলি ভিসার খরচ প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।
বিঃদ্রঃ সব সময় দুবাই ভিসা করার সময়
খেয়াল রাখতে হবে যেন অসাধু দালাল বা এজেন্সি দের লোভনীয় ভুল তথ্য থেকে
সাবধান থাকি।
দুবাই স্টুডেন্ট ভিসার দাম কত
বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে দুবাই পড়াশোনা করতে
চায়। দুবাই স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অফার লেটার
পেতে হয়। ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক স্টেটমেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে থাকে। বর্তমানে দুবাইতে স্টুডেন্ট ভিসা করার জন্য আপনার সব মিলিয়ে
প্রায় ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে দুবাই যেতে বিশ্বস্ত এজেন্সির শরণাপন্ন
হতে পারেন। ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে পারলে
এজেন্সি ছাড়া নিজে নিজে দুবাই স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং করা যায়।
দুবাই ফ্যামিলি ভিসার দাম কত
যারা দুবাই শহরে শহরের ফ্যামিলি নিয়ে জীবন যাপনের জন্য যেতে চাচ্ছেন তাদের
অবশ্যই দুবাই ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে যেতে হবে। আর এক্ষেত্রে দুবাই ফ্যামিলি
ভিসার দাম কত সেই সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। দুবাই ফ্যামিলি ভিসার খরচ
সাধারণত ফ্যামিলির মেম্বারের উপর নির্ভর করে হয়ে থাকে।
আপনার ফ্যামিলির মেম্বার যদি বেশি হয় তাহলে দুবাই ফ্যামিলি ভিসা করতে খরচ
বেশি হবে। সাধারণত দুবাই ফ্যামিলি ভিসা করতে আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা থেকে
শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগে। তবে বিভিন্ন ভিসা এজেন্সি অনুযায়ী
ভিসা খরচ কম বেশি হতে পারে।
দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ কত
অনেকের দুবাই ভ্রমণের স্বপ্ন থাকে। দুবাই ভ্রমণ করার জন্য প্রয়োজন দুবাই
ভিজিট ভিসা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঝলমলে শহর, বিলাসবহুল হোটেল, মরুভূমির
রোমাঞ্চ ইত্যাদি পর্যটকদের আকর্ষণ করে থাকে। দুবাই ভ্রমণে আগ্রহীদের দুবাই
ভিজিট ভিসা খরচ কত জানতে হবে।
📌আরো পড়ুন👉পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে দুবাই ভিজিট ভিসা নিয়ে যেতে আপনার খরচ হতে পারে
প্রায় ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো। এই ভিসার মেয়াদ সাধারণত দুই
মাস হয়ে থাকে। তবে, মনে রাখতে হবে ভিজিট ভিসার ক্যাটাগরি এবং আপনি কতদিনের
জন্য ভিসা নিচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে এই খরচ ভিন্ন হতে পারে।
দুবাই কোম্পানি ভিসার দাম
দুবাই কোম্পানিতে গিয়ে ভালো মানের বেতনের চাকরি করতে হলে অবশ্যই দুবাই
কোম্পানি ভিসা আবেদন করে দুবাই যেতে হবে। দুবাই কোম্পানি ভিসার বেতন কত এ
সম্পর্কে অনেকেই জানে না তাই আমরা এখন দুবাই কোম্পানির ভিসা বেতন কত
সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। দুবাই কোম্পানি ভিসা নিয়ে গেলে কোম্পানিতে
বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাবেন।
বিশেষ করে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা ও বেশি বেতন সহ অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।
দুবাই কোম্পানি ভিসার দাম আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
হয়ে থাকে। অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৫ লক্ষ টাকা হলেই দুবাই কোম্পানি ভিসা আবেদন
করে দুবাই যাওয়া যাবে। যারা কোম্পানিতে জব করতে চান তারা এই ভিসা আবেদন
করে দুবাই যাবেন এতে করে অনেক সুবিধা পাবেন।
বাংলাদেশ টু দুবাই বিমান ভাড়া কত?
বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ের বিমান ভাড়া সাধারণত প্রায় ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩
লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই ভাড়ার তারতম্য মূলত আপনার টিকিটের ক্লাস
(ইকোনমি, বিজনেস ইত্যাদি) এবং আপনি কোন এয়ারলাইন্স নির্বাচন করছেন, তার
ওপর নির্ভর করে।
দুবাই যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
আপনি যদি দুবাই যেতে চান, তবে সে ক্ষেত্রে আপনার কী কী কাগজপত্র লাগবে, তা
জানা অত্যন্ত জরুরি। আসলে, দুবাই যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজনীয়
কাগজপত্রগুলো নির্ভর করবে আপনি কোন ভিসা ক্যাটাগরি বেছে নিচ্ছেন তার ওপর।
তাই, আপনাকে প্রথমে আপনার ভিসার ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবে, আর এরপর সেই
অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করতে হবে।
যেসব ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র ছাড়া আপনি দুবাই যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করতে
পারবেন না, সেগুলো নিচে আপনাদের জানার সুবিধার্থে উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
তবে, দুবাইয়ের কোন ভিসায় বেতন কত সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে,
পড়তে থাকুন।
📌আরো পড়ুন👉পর্তুগাল ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে জানুন
- আপনার পাসপোর্ট লাগবে
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট লাগবে
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট লাগবে
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট লাগবে (কাজের ভিসার জন্য)
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ লাগবে (কাজের ভিসার জন্য)
- আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র স্ক্যান করে দিতে হবে
- চাকরিজীবী হলো অফিসিয়াল এনওসি'র স্ক্যান কপি
- আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা সকল সার্টিফিকেট লাগবে
- অন্যান্য কাগজপত্র লাগবে (যদি প্রয়োজন হয়)
দুবাই যেতে কত বছর বয়স লাগে
ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী বয়স ও আলাদা হয়ে থাকে। প্রথমে আসি ভিজিট ভিসায়
এই ভিসাতে কোন বয়সসীমা নেই । যে কোন বয়সে ভিজিট ভিসায় দুবাই আসতে
পারবেন। এর মধ্যে বয়সের কোন সীমাবদ্ধ নেই। আপনি যে কোন বয়সে এপ্লাই
করলে ভিসা পেয়ে যাবেন।
কিন্তু আপনার বয়স ১৮ বছরের কম হলে আপনার অভিভাবকের অবশ্যই অনুমতি পত্র
নিতে হবে। এটা হচ্ছে ভিজিট ভিসার ক্ষেত্রে। আরেকটি হচ্ছে ফ্যামিলি ভিসা।
ফ্যামিলি ভিসার কোন বয়সীমা নেই । এই ভিসা যে কোন বয়সেই করা যায় ।
স্টুডেন্ট ভিসায় অবশ্যই আপনাকে ১৮ বছরের উপরে হতে হবে।
কাজের ভিসা নিয়ে আসতে হলে আপনাকে ১৮ বছরের উপরে হতে হবে। আর এখানে আপনার
বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন রকম আপনার কাজে অভিজ্ঞতা অনুযায়ী ভিসা দিয়ে
থাকে। তাই আপনি যদি কাজের ভিসা নিয়ে আসতে চান তাহলে আপনাকে ২১ থেকে ২৩
বছরের মধ্যে হতে হবে ।
এর নিচে আপনার বয়স হলে কাজের ভিসা পাওয়া যাবে না। এরপর অনেকে ভিজিট
ভিসা নিয়ে আসার পর দুবাইয়ে কোন কোম্পানিতে এপ্লাই করেন। তাদের অবশ্যই
১৮ প্লাস বছর বয়স হতে হবে । তবেই ভিজিট ভিসাই এসে দুবাইয়ের কোন
কোম্পানিতে আপনি এপ্লাই করতে পারবেন।
দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি
দুবাই কোন কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জানার জন্য প্রথমে আপনাকে জেনে নিতে
হবে দুবাই যেতে কত বছর বয়স লাগে। ২০২৫ সালে আরব আমিরাতের উন্নত শহর
দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের জন্য চাকরির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। দুবাই উন্নত শহর
হওয়ায় উন্নত জীবন যাপনে বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ পরিবার নিয়ে দুবাই
যায়।
পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বেশি বেতনের কাজের সন্ধান করে। বেশি বেতনে ওভারটাইম
করা যায় এমন কাজে বেশি টাকা বেতন পাওয়া যায়।
যেমনঃ গার্মেন্টস ,শপিংমল , কনস্ট্রাকশন ,ক্লিনার , ড্রাইভিং এর কাজের
বেতন তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। এ সকল কাজের বেতন ৬০ হাজার টাকা থেকে ৮০
হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। তবে দক্ষ পেশাজীবীদের বেতন অনেক
বেশি। এরমধ্যে জনপ্রিয় কিছু চাকরির তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ
📌আরো পড়ুন👉পর্তুগালে কোন কাজের চাহিদা বেশি জেনে নিন
- শ্রমিক বা কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কারঃ ভবন নির্মাণ , টাইলস বা প্লাম্বিং কাজের জন্য শ্রমিক দরকার পড়ে।
- হোটেল বা রেস্টুরেন্টে স্টাফ হিসেবেঃ ওয়েটার , কিচেন হেল্পার এবং ক্লিনার হিসেবে কাজ পাওয়া যাবে।
- সিকিউরিটি গার্ডঃ যেমন বিভিন্ন কোম্পানি ও হোটেল নিরাপত্তা কর্মী।
- ড্রাইভারঃ ট্যাক্সি , লরি ও ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার।
- সেলসম্যান ও ক্যাশিয়ারঃ সুপারমার্কেট শপিংমল ও রিটেইল স্টোরের সেলসম্যান ,ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ পাওয়া যায় ।
- ইলেকট্রিশিয়ান , প্লাম্বার ও মেকানিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনিক্যাল সেক্টরের কাজ ।
- ডেলিভারি রাইডার যেমনঃ ডেলিভারি অনলাইন ফুড সার্ভিস । এখানে অনেক কাজ পাওয়া যায়।
দুবাই সর্বনিম্ন বেতন কত
দুবাই সর্বনিম্ন বেতন কত জানা থাকলে দুবাই কাজ করে সর্বনিম্ন কত টাকা
ইনকাম করা যাবে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বর্তমানে সংযুক্ত আরব
আমিরাতের শহর দুবাই। সর্বনিম্ন বেতন প্রায় বাংলাদেশি টাকায় ৩৮ হাজার
টাকা থেকে শুরু করে ৫৭ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
বর্তমানে দুবাই বিভিন্ন কাজের সুযোগ রয়েছে। দুবাই সাধারণ কাজের
সর্বনিম্ন বেতন ১২০০ দিরহাম থেকে ১৮০০ দিরিহাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে
দুবাই উচ্চপর্যায়ে কাজের সর্বনিম্ন বেতন ২২০০ দিরহাম থেকে ২৭০০ দিরহাম
পর্যন্ত হয়ে থাকে। যা বাংলাদেশী টাকায় ৭০ হাজার টাকা থেকে ৮৬০০০ টাকা ।
একজন ওয়েটারের সর্বনিম্ন বেতন ৪০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা ।
একজন ইলেকট্রিশিয়ান এর বেতন সর্বনিম্ন ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা ।
একজন মেকানিকের সর্বনিম্ন বেতন ৬০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা ।
একজন ডেলিভারি ম্যানের সর্বনিম্ন বেতন ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা।
দুবাই ড্রাইভিং ভিসার বেতন কত
আপনি যদি ড্রাইভিং ভিসাতে দুবাই যেতে চান, তবে অবশ্যই যাওয়ার আগে আপনার
জেনে নেওয়া উচিত যে, ড্রাইভিং ভিসার বেতন কত। সাধারণত, ড্রাইভিং ভিসায়
একজন শ্রমিকের মাসিক বেতন সর্বনিম্ন ৯০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ২০
হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশি বেতন হয়ে থাকে। ড্রাইভিং
ভিসার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার লাইসেন্স এর সার্টিফিকেট এবং ড্রাইভিং
বিষয়ে ভালো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। দুবাই বর্তমানে ডাইভিং ভিসার
ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে দুবাই যেতে পারেন।
দুবাই হোটেল ভিসা বেতন কত
দুবাইয়ের হোটেল ভিসার বেতন কত এ বিষয়ে জানার জন্য অনেকেই ইন্টারনেটে
সার্চ করে থাকেন। যারা দুবাইয়ের হোটেল ভিসাতে যেতে চাইছেন, তাঁদের
অবশ্যই জেনে যাওয়া উচিত যে, এই ভিসায় বেতন কত এবং কাজের ধরন কেমন হতে
পারে।
সাধারণত, দুবাইয়ে যারা হোটেল বা রেস্টুরেন্টে শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন,
অর্থাৎ যাঁরা হোটেল ভিসায় দুবাইতে যান, তাঁদের ডিউটির সময়টা
তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হয়ে থাকে। ডিউটি বেশি হলেও, কাজগুলো অতটা বেশি
পরিশ্রমের হয় না। বর্তমানে দুবাইতে হোটেল ভিসায় কর্মীদের মাসিক বেতন
প্রায় ৩৮ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকার মতো হয়ে থাকে।
দুবাই ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত
দুবাইতে ইলেকট্রিক কাজের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তাই আপনি যদি এই
কাজের ওপর দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারেন, তবে ভালো পরিমাণ
অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এই কাজের চাহিদা খুবই বেশি। বর্তমানে
দুবাইতে ইলেকট্রিক কাজের মাসিক বেতন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮৫ হাজার
টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
দুবাই ক্লিনার ভিসার বেতন কত
দুবাই একটি পর্যটনকেন্দ্রিক দেশ হওয়ায় এখানে বিভিন্ন দেশের মানুষের
যাতায়াত রয়েছে। এর ফলে, দুবাইতে ক্লিনার ভিসার প্রচুর পরিমাণে চাহিদা
দেখা যায়।
তবে দুঃখের বিষয় হলো, ক্লিনার ভিসার চাহিদা বেশি থাকা সত্ত্বেও এর
বেতনের পরিমাণটা খুব বেশি নয়। বর্তমানে দুবাইতে ক্লিনার ভিসার মাসিক
বেতন সাধারণত ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা মাত্র দেওয়া হয়ে থাকে।
দুবাইতে ক্লিনার কাজগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ক্লিনার ভিসাতে দক্ষ ও
অদক্ষ প্রায় সব ধরনের শ্রমিকই কাজ করে থাকে। তাই, আপনারা যারা
তুলনামূলকভাবে কম শিক্ষিত, তারা ক্লিনার ভিসায় সহজেই দুবাই আসতে পারেন।
দুবাই কেমন শহর
দুবাই আসলে কেমন শহর দুবাইকে বলা হয় সিটি অফ সুপারলেটিভস বা সেরাদের
সেরা শহর। কারণ এখানে সবকিছুই সবচেয়ে বড় , সবচেয়ে উঁচু আর সবচেয়ে
সেরা । বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ খলিফা। একমাত্র সাততারাকা বুর্জ অফ
আল আরাফ। আর মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় দ্বীপ পাম জুমেরা ।
দুবাই যেন মানুষের কল্পনাকে ছাড়িয়ে গেছে। দুবাইয়ের জনসংখ্যার ৮৫ ভাগ
মানুষই বিদেশী। ২০০ এর বেশি দেশের মানুষ একসাথে কাজ করে। যা এক সত্যি
কারে গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত করেছে।
দুবাই সবচেয়ে নিরাপদ শহর গুলির একটি।। এখানকার কঠোর আইন কানুন ও
পরিষ্কার রাস্তাঘাট আপনাকে মুগ্ধ করবে । বিশাল বিশাল শপিংমল , ডিজাইনার
ব্র্যান্ড, গোল্ড সোপ থেকে শুরু করে ডেজার্ট সাফারি , স্কি দুবাই
মরুভূমির মাঝে ইনডোর রিসোর্ট বিনোদনের জন্য এখানে কি নেই ।
বুর্জ খলিফা বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবনের চূড়া থেকে সূর্যাস্ত দেখার দৃশ্য
জীবনের সেরা মনে হতে পারে। দুবাই মল ও ফাউন্টেন শো বিশ্বের এই অন্যতম
মলে শপিং করুন আর সন্ধ্যায় দেখুন দুবাই ফাউন্টেনে জাদুকরি মিউজিক্যাল
শো।
লেখকের শেষ মতামত
পরিশেষে, দুবাই যাওয়ার ক্ষেত্রে মোট খরচ ৫ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা
পর্যন্ত হতে পারে। এই বিষয়ে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন। ভিসার
প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময় কোনো দালাল বা অসাধু এজেন্সির খপ্পরে
পড়বেন না। তাদের মাধ্যমে গেলে খরচ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে এবং
আপনি প্রতারিত হতে পারেন। সবসময় সরকারিভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান বা
সরাসরি ভিসার জন্য আবেদন করার চেষ্টা করুন।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url