পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে - কাজের চাহিদা, বেতন ও যাওয়ার উপায় জানুন 2026
পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে: ইউরোপের দেশ পর্তুগাল যেতে বাংলাদেশ থেকে যারা
আগ্রহী তাদের অবশ্যই জানতে হবে। পর্তুগালে অভিবাসী অনেক বেশি। পর্যটকদের কাছে
অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পর্তুগাল। পর্তুগালের নাম শুনলে ফুটবল প্রেমীদের চোখের
সামনে ভেসে উঠে রোনালদোর মুখ।
বাংলাদেশের অনেক মানুষ এই পর্তুগালে গিয়ে কাজ করছে। তাই আপনিও যদি যেতে চান সে
ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক ও বৈধ পন্থায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই পর্তুগাল যেতে কত
টাকা লাগে? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশের বহু শ্রমিক পর্তুগাল যেতে আগ্রহী। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে,
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে ঠিক কত টাকা লাগে? এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানার জন্য
আজকের আর্টিকেলটি পড়ুন। চলুন, পর্তুগালে যাওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য খরচ সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
📌আরো পড়ুন👉মালদ্বীপ ভ্রমণের আনুমানিক খরচ ২০২৬
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কাজের জন্য পর্তুগালে যান, তাই আপনাকে ওয়ার্ক
পারমিট ভিসা করতে হবে। এই ভিসায় খরচটা হয়তো একটু বেশি হবে, কিন্তু এই ভিসা
নিয়ে গেলে আপনি সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করার সুযোগ পাবেন। এই ভিসা থাকলে
আপনি বিশেষ করে কৃষি কাজ, ফ্যাক্টরির কাজ, ক্লিনার ইত্যাদির মতো কাজগুলো
ভালোভাবে করতে পারবেন।
এই ভিসা করার ক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৮ থেকে ১২ লাখ টাকা
পর্যন্ত। তাই এই বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যেন কোনো
দালাল চক্রের খপ্পরে না পড়েন। মেডিকেল সংক্রান্ত কারণে অথবা মেডিকেল
পড়াশোনার জন্য এই দেশে যেতে চাইলে আপনার অবশ্যই আপনার ভার্সিটি বা
প্রতিষ্ঠানের মেডিকেল সার্টিফিকেট-এর প্রয়োজন হবে।
মেডিকেল ভিসার মাধ্যমে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ৫ থেকে ৬
লক্ষ টাকা। তাছাড়া যদি ফ্যামিলি ভিসার মাধ্যমে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনার
যেতে খরচ হবে ৫ লক্ষ টাকার মতো। যদি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে চান সেক্ষেত্রে
স্কলারশিপ নিয়ে গেলে খুবই কম টাকায় যেতে পারবেন।
এতে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত লাগবে। যদি স্কলারশিপ না পান সেই ক্ষেত্রে যদি
যান ১৬ লক্ষ টাকার মত লাগতে পারে। অনেকেই আছেন যারা ভ্রমণ করার জন্য পর্তুগাল
যেতে পছন্দ করেন, তাই অনেকেই ট্যুরিস্ট ভিসায় যান। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে
অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
সাধারণত ভ্রমণ ভিসার মেয়াদ থাকে ৯০ দিন। এই সময়ের মধ্যেই আপনাকে অবশ্যই
দেশে ফিরে আসতে হবে। যদিও কখনও কখনও এটি ছয় মাস পর্যন্তও দেওয়া হয়, কিন্তু
তিন মাসের মেয়াদটিই প্রধান এবং এর মধ্যেই আপনাকে দেশে ফেরা নিশ্চিত করতে হবে।
আপনি যদি ট্যুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে পর্তুগাল যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার প্রায়
৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো খরচ হতে পারে। এছাড়াও, ভ্রমণের জন্য আপনি অন্য
গন্তব্য হিসেবে চীনে যেতে পারেন।সেখানে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হবে এবং আপনি
অনেক নতুন কিছু শিখতে পারবেন। আশা করছি পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে আ জানতে
পেরেছেন।
পর্তুগাল ভিসার দাম কত ২০২৬
পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে জানার পাশাপাশি পর্তুগাল যেতে আগ্রহী
আবেদনকারীর যেমন মোট খরচ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, ঠিক তেমনই জানতে হবে
পর্তুগাল ভিসার দাম কত।
ভিসার এই অফিসিয়াল খরচটি সাধারণত ভিসা ক্যাটাগরি এবং আবেদনকারীর বয়সের ওপর
নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন হয়। বর্তমানে পর্তুগাল ভিসার দাম প্রায় ৪০ ইউরো
থেকে ১৫০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
তবে একটি বিষয় মনে রাখবেন, যদি কোনো এজেন্সির সাহায্য না নিয়ে আপনি নিজে সব
প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন, তাহলে খরচ অনেকটাই কম হবে। কিন্তু এজেন্সির
মাধ্যমে গেলে সার্ভিস চার্জের কারণে খরচ কিছুটা বেড়ে যেতে পারে।
বর্তমানে পর্তুগালের লোকসংখ্যা প্রায় এক কোটি চার লাখ ১১ হাজার। দেশটি
ইউরোপের অনেক দেশের চেয়ে ছোট এবং এর প্রচুর এলাকাই গ্রামীণ প্রকৃতির।
পর্তুগালের মোট আয়তন প্রায় ৯২ হাজার ২২৫ বর্গ কিলোমিটার, অর্থাৎ এটি
বাংলাদেশের আয়তনের চেয়ে প্রায় দেড় গুণ ছোট।
পশ্চিম ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগাল বেশ পকেট ফ্রেন্ডলি।
- বিমান ভাড়া: ঢাকা বা কলকাতা থেকে রিটার্ন টিকিট কাটলে খরচ হতে পারে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা।
- থাকা-খাওয়া: লিসবনে হোস্টেলে থাকার খরচ প্রতি রাতে মাত্র ২০ থেকে ৩০ ইউরো, যা ভ্রমণকারীদের জন্য সত্যিই দারুণ খবর।
অর্থাৎ, কম খরচে ইউরোপ ভ্রমণের জন্য পর্তুগাল একটি চমৎকার বিকল্প।
পর্তুগাল যেতে কত বয়স লাগে
পর্তুগাল যেতে আগ্রহী আবেদনকারীদের অবশ্যই জেনে রাখা প্রয়োজন যে পর্তুগালে
ভিসা আবেদনের জন্য সাধারণভাবে বয়সের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। দক্ষিণ-পশ্চিম
ইউরোপের এই দেশ, যা অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের
লীলাভূমি, সেখানে নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা না থাকায় প্রায় যেকোনো বয়সের
মানুষই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
📌আরো পড়ুন👉বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ যাওয়ার উপায়
টুরিস্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদনকারীকে
ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সী হতে হয়। তবে আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি বা ২১ বছরের
কাছাকাছি হয়, তাহলে আপনি কাজের ক্ষেত্রে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা বা ভালো সাড়া
পেতে পারেন।
অর্থাৎ, কাজের সুযোগের জন্য ১৮ বছরের বেশি বয়স হওয়াটা বেশ সুবিধাজনক। তবে
টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে, যাদের বয়স ১৮ বছরের কম, তাদের অবশ্যই অভিভাবকের
অনুমতি নিতে হয়। বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পর্তুগাল যাওয়া
অপেক্ষাকৃত সহজ।
আর এই সুযোগে শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজও করতে
পারে। এতে তাদের জীবনযাপন আরও সুন্দরভাবে চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
তবে সাধারণত ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে পর্তুগালে যাওয়াটা সবচেয়ে
সুবিধাজনক।
পর্তুগাল ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে
পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে তা আবেদনকারীকে যেমন জানা প্রয়োজন , তেমনটি
প্রয়োজন হবে পর্তুগাল ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে। একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
হলো, পর্তুগালে বৈধভাবে পাঁচ বছর স্থায়ীভাবে বসবাস করার পর আপনি
নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়াটি ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায়
কিছুটা সহজ। তবে এর জন্য আপনাকে পর্তুগিজ ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর একটি
পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে পর্তুগালেই সবচেয়ে
দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রীন কার্ড ও লাল পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ থেকে খুব সহজে যে দুটি ভিসা নিয়ে পর্তুগাল আসা যায়, তা হলো
স্টুডেন্ট ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আপনি
পর্তুগালে থাকা কোনো পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে অথবা কোনো বিশ্বস্ত এজেন্সির
সাহায্যে আবেদন করতে পারেন।
আর তাই, পর্তুগাল ভিসার জন্য আবেদন করার আগে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ
কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হবে। নিচে সেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা দেওয়া
হলো:
📌আরো পড়ুন👉নেপাল যেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগবে?
- বৈধ পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তির অফার লেটার
- কাজের দক্ষতার সনদ
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
- জব অফার লেটার
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতা
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট
- ট্রাভেল রেকর্ড
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
পর্তুগাল যেতে মোট কত টাকা খরচ হবে এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কীভাবে করতে
হয়, তা একজন আবেদনকারী হিসেবে আপনার জানা অত্যন্ত জরুরি। দক্ষিণ-পশ্চিম
ইউরোপের দেশ পর্তুগালে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া
বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে অনেকেরই আগ্রহ থাকে, কীভাবে অপেক্ষাকৃত সহজে
পর্তুগালের এই ভিসাটি পাওয়া যেতে পারে।
পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া কঠিন হলেও, কিছু নির্দিষ্ট উপায়ে এই
দেশে ভিসা পাওয়া সম্ভব। এজন্য বেশ কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
পর্তুগালের ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হলে যিনি দেশটিতে যাবেন, তার অবশ্যই
একটি জব অফার লেটার থাকতে হবে।
অর্থাৎ, আপনার কাছে নিয়োগকর্তার সাথে কাজের চুক্তিপত্র থাকতে হবে। ভিসা
আবেদনের জন্য সব ধরনের ডকুমেন্ট প্রস্তুত থাকলে পর্তুগাল আপনাকে ওয়ার্ক
পারমিট ভিসায় যাওয়ার সুযোগ করে দেবে। এছাড়াও, যদি সরাসরি ওয়ার্ক পারমিট
ভিসা পাওয়া না যায়, তাহলে প্রথমত আপনাকে বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ
বিজ্ঞপ্তিগুলোতে নিয়মিত চোখ রাখতে হবে।
এরপর আপনার যোগ্যতার ভিত্তিতে সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে আবেদন করতে হবে।
যদি আপনি নিয়োগকর্তার মনোনীত প্রার্থী হন, তাহলে তারা আপনাকে জব অফার
লেটার দেবে। সেই অফার লেটার হাতে পাওয়ার পরেই আপনি পর্তুগাল ওয়ার্ক
পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়াও, পর্তুগালে আপনার কোনো পরিচিত আত্মীয় থাকলে তাদের মাধ্যমেও ওয়ার্ক
পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায়
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। অর্থাৎ, কাজের ভিসায়
যেতে সব মিলিয়ে আপনার ১০ লাখ থেকে ১১ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
পর্তুগাল ভিসা আবেদন করার নিয়ম
পর্তুগালের আকৃতি মোটামুটি আয়তাকার। এর উত্তরাংশ পর্বতময় ও সবুজে ঢাকা।
এই অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং আবহাওয়া শীতল থাকে। এই সুন্দর,
স্বর্গখ্যাত পর্তুগালে যাওয়ার জন্য আপনাকে ভিসা আবেদন করতে হবে। তবে,
পর্তুচট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচীগাল ভিসার আবেদন করার জন্য
যদি আপনার সঠিক দক্ষতা ও জ্ঞান থাকে, তবে ভিসা পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হয়ে
থাকে।
📌আরো পড়ুন👉চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচী
পর্তুগাল আপনি বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই
অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদনের জন্য পর্তুগালের অফিসিয়াল
ওয়েবসাইট www.pt.indeed.com-এ গিয়ে ফর্মটি সব তথ্য দিয়ে সঠিকভাবে পূরণ
করতে হবে এবং আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো স্ক্যান করে জমা দিতে পারবেন।
যদি ভাষা বুঝতে অসুবিধা হয়, তবে ফর্মটি ইংরেজিতে অনুবাদ করে নিতে পারেন।
সকল তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে, সাবমিট বাটনে ক্লিক করে আবেদনটি জমা দিন। এরপর
ইমেইলের মাধ্যমে আপনাকে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানানো হবে এবং আপনি
অ্যাম্বাসিতে যোগাযোগ করে আপনার ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।
পর্তুগালে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা দেওয়া হয়, যেমন: স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট
ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। এছাড়াও, আপনি জব সার্চ ভিসা নিয়েও সেখানে
যেতে পারেন। ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য পর্তুগাল সরকারের অনুমোদিত সংস্থা
VFS-এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। মনে রাখবেন, পর্তুগাল একটি শেনজেনভুক্ত দেশ।
পর্তুগাল যেহেতু শেনজেনভুক্ত দেশ, তাই সেখানে যেতে আপনার শেনজেন ভিসার
প্রয়োজন হবে। সুখবর হলো, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকেই এই শেনজেন ভিসার
প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। আপনাকে শুধু আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য অনুযায়ী
ভিসার ক্যাটাগরিটি ঠিক করতে হবে।
এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে আপনাকে অনলাইনে আবেদনটি করতে হবে।
ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া যদি নিজে নিজে সম্পন্ন করতে পারেন, তবে তা বেশি
ফলপ্রসূ হবে। তবে আপনি চাইলে বিশ্বস্ত কোনো এজেন্সির মাধ্যমেও আবেদন
প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্য আপনার খরচ কিছুটা বেশি হবে।
পর্তুগাল বেতন কত
পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে তা আবেদনকারীকে যেমন জানা প্রয়োজন , তেমনটি
প্রয়োজন হবে পর্তুগাল বেতন কত? চলুন, কোন কাজে কেমন বেতন পাওয়া যায়, সে
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক। পর্তুগালের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে
রিসিপশনিস্ট পদে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই পদে মাসিক বেতন সাধারণত ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে
থাকে। অন্যদিকে, যারা রেস্টুরেন্ট বা হোটেলে ওয়েটার হিসেবে কাজ করেন,
তাদের মাসিক বেতনও প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো হয়ে থাকে।
আপনি যদি ক্লিনার হিসেবে কাজ করেন, সেক্ষেত্রে মাসে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার
থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার মতো বেতন পেতে পারেন। এছাড়াও, পর্তুগালে
বিভিন্ন গার্মেন্টস সেক্টর রয়েছে। সেখানে গার্মেন্টস অপারেটর হিসেবে কাজ
করলে মাসিক বেতন প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতো হয়ে
থাকে।
পর্তুগালের বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার জন্য ডেলিভারি
ম্যান নিয়োগ করে থাকে। আপনি এই কাজ করতে পারেন এবং এতে আপনার মাসিক বেতন
প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতো হতে পারে। এছাড়াও,
ড্রাইভিংয়ের কাজ করলে আপনি মাসে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ
টাকার মতো বেতন পেতে পারেন।
এছাড়াও, নির্মাণ শ্রমিক, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, শেফ এবং কৃষিকাজ-এর
মতো কাজগুলোতে মাসে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো বেতন
পাওয়া যায়। তুলনামূলকভাবে, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সৌদি আরব গেলেও, সৌদি
আরবের চেয়ে পর্তুগালে বেশি বেতন দেওয়া হয়। তাই, আপনি কাজের উদ্দেশ্যে
পর্তুগাল যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন।
পর্তুগাল সর্বনিম্ন বেতন কত
পর্তুগাল একটি মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ায় এখানে প্রবাসী কর্মীদের জন্য
কর্মসংস্থানের ভালো সুযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, যারা স্টুডেন্ট ভিসায় যান,
তারাও পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজ করার সুযোগ পান। তবে মনে রাখতে
হবে, খণ্ডকালীন কাজের ক্ষেত্রে সাধারণত দেশের সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো
প্রযোজ্য হয় না।
পর্তুগালে যেতে পারলে সেখানে সুযোগ-সুবিধা নেহাত কম নয়। অনেক দেশের তুলনায়
এই দেশে কর্মীরা তুলনামূলক উচ্চ বেতন পেয়ে থাকেন। সেখানে মাসে সর্বনিম্ন
বেতন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
পর্যন্ত হতে পারে।
এছাড়াও, পর্তুগালে প্রতি ঘণ্টায় ৬.১২ ইউরো সর্বনিম্ন মজুরি হিসেবে ধরা
হয়, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৬০ টাকার সমান। এই দেশে কর্মীরা সপ্তাহে
৪০ ঘণ্টা বেসিক ডিউটি পালনের সুযোগ পান। তাই যদি আপনি ওভারটাইম কাজ করেন,
তবে স্বাভাবিক বেতনের চেয়েও বেশি মজুরি পাবেন।
তবে প্রথম অবস্থায় বেতন কম পেলেও, সময়ের সাথে সাথে আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতার
ওপর নির্ভর করে আপনি বড় বড় কোম্পানিতে কাজ পাওয়ার সুযোগ পাবেন। এর ফলে
আপনার বেতন কাঠামোও বাড়তে থাকবে।
পর্তুগালে কোন কাজের চাহিদা বেশি
পর্তুগালে কোন কাজের চাহিদা বেশি, ভিসার জন্য আবেদন করার আগে আপনার তা
অবশ্যই জেনে নিতে হবে। এছাড়াও, পর্তুগাল যেতে আপনার মোট কত টাকা খরচ হবে,
সে সম্পর্কেও ধারণা রাখা জরুরি। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় পর্তুগালে
কাজ পাওয়াটা কিছুটা কঠিন।
কারণ হলো, পর্তুগালে যারা ইতোমধ্যেই ইমিগ্রেট করেছেন, তারা খুব দ্রুত তাদের
কাগজপত্র পেয়ে যান। শুরুতে কাগজপত্রের এই জটিলতার কারণেই নতুনদের কাজ পেতে
অসুবিধা হয়। তাই, যারা নতুন করে পর্তুগালে আসতে চাইছেন, তারা অবশ্যই মনে
রাখবেন সেখানে আসার পর আপনাকে অনেকটা সংগ্রাম করতে হবে।
তবে যদি আপনি শুরুতে কষ্ট করে কিছুদিন পর্তুগালে থাকতে পারেন, আপনার
রেসিডেন্স কার্ড হয়ে গেলে আপনি সহজেই যেকোনো কোম্পানিতে ভালো বেতনে কাজ
নিতে পারবেন। এছাড়া অনেক কোম্পানি আছে, যারা শুরুতেই কাগজপত্র ছাড়াই কিছু
শ্রমিককে কাজে নেয়। এই কাজগুলো পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু বাধার
সম্মুখীন হতে হবে।
কারণ আপনার মতোই আরও অনেকেই পর্তুগালে কাজের জন্য সংগ্রাম করছেন। তাই
অন্যদের থেকে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হলে, আপনার ইংরেজি অথবা পর্তুগিজ ভাষায়
দক্ষতা থাকা জরুরি। এর পাশাপাশি, ইলেকট্রিক্যাল, ওয়েল্ডিং, মেকানিক্যাল,
প্লাম্বিং, পেইন্টিং এর মতো বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে ট্রেনিং নিয়ে নিজেকে
দক্ষ করে তারপর পর্তুগালে আসতে পারেন।
এতে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। তবে মনে রাখবেন, পর্তুগালে এসেই
যে আপনি আপনার নির্দিষ্ট সেক্টরে কাজ পেয়ে যাবেন, ব্যাপারটা মোটেও এমন
নয়। শুরুতে আপনাকে কিচেন হেল্পার বা শেফের সহকারী-এর মতো কিছু ছোটখাটো কাজ
করতে হতে পারে। পর্তুগালে মোট ৪টি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর রয়েছে, যেখানে
প্রচুর কর্মীর চাহিদা দেখা যায়।
এই ৪টি সেক্টরে কাজ করতে পারলে আপনি বেশি বেতন পাবেন। এই সেক্টরগুলো হলো:
- এগ্রিকালচার যেটা সিজনাল ভিসা বা D1 ভিসা (স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা) নামে পরিচিত।
- হসপিটালিটি এবং ট্যুরিজম সেক্টরে কর্মীর চাহিদা প্রচুর।
- কনস্ট্রাকশন ও ম্যানুয়াল লেবার সাইড।
- সার্ভিস সেক্টর।
সার্ভিস সেক্টরের অধীনে ফুড ডেলিভারি এবং বয়স্কদের সেবা প্রদানের মতো
কাজগুলো অন্তর্ভুক্ত। আর পঞ্চম সেক্টরটিতে প্রচুর চাহিদা থাকে। এই সেক্টরের
কোম্পানিগুলোতে আপনি খুব ভালো বেতনে কাজ পেতে পারেন। বিশেষ করে আপনি যদি
প্রযুক্তিএবং আইটিতে দক্ষ হন, তবে এই দেশটিতে খুব সহজে চাকরি খুঁজে নেওয়া
সম্ভব।
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার সহজ উপায়
বিভিন্ন কাজের সুযোগ থাকায় বাংলাদেশ থেকে অনেকেই পর্তুগালে যেতে আগ্রহী হন।
তাই, বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার সহজ উপায়গুলো সম্পর্কে জানা খুবই
দরকার। চলুন, কীভাবে আপনি বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে পারবেন, সে বিষয়ে
বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
📌আরো পড়ুন👉বাংলাদেশ থেকে কাঠমুন্ডু যাওয়ার উপায়
পর্তুগালে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে: প্রথমত, যদি কাজের
উদ্দেশ্যে পর্তুগাল যেতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে
হবে। এছাড়াও, পর্তুগালে যদি আপনার কোনো আত্মীয়-স্বজন থাকেন, তবে তাদের
মাধ্যমেও ভিসার আবেদন করা যেতে পারে।
তাছাড়া, আপনি যদি পর্তুগালে কাজের জন্য যেতে চান, সেক্ষেত্রে প্রথমত
কোম্পানিগুলোতে আবেদন করতে হবে। এরপর যদি কোম্পানি আপনাকে অনুমোদন দেয়,
তাহলে আপনি নিজেই অনলাইনের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করে যেতে পারবেন। তবে
অনলাইনে আবেদন করার পর আপনাকে ভারতের অ্যাম্বাসিতে যেতে হবে। কারণ,
বাংলাদেশে পর্তুগালের কোনো অ্যাম্বাসি নেই।
যদিও বাংলাদেশ থেকে অনেকে পর্তুগালে যাচ্ছেন, তবে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি
যাওয়া যায় না; আপনাকে ভারতের মাধ্যমে যেতে হবে। অনেকেই সেখানে কাজের জন্য
যান, কেউ বা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ট্যুরিস্ট ভিসা বা
মেডিকেল ভিসায় পর্তুগাল যাচ্ছেন। তবে মনে রাখবেন, এই ধরনের ভিসাগুলোতে খরচ
কিছুটা বেশি হয়।
তবে যদি আপনি সঠিকভাবে আবেদন করেন, তবে নিরাপদে পর্তুগাল যেতে পারবেন।
পর্তুগাল যাওয়ার জন্য আপনার অবশ্যই জব অফার লেটার এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
থাকতে হবে। এসব থাকলে আপনি বৈধভাবে সেখানে যেতে পারবেন। তাই বৈধ পথে যাওয়ার
জন্য আপনি নিজেই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।
পর্তুগাল ভিসা এজেন্সি কোথায়
অনেকেই জানতে চান পর্তুগাল ভিসার এজেন্সি কোথায়। আসলে ভিসা প্রক্রিয়ার
জন্য এজেন্সি সম্পর্কে সঠিক তথ্য এবং তাদের ঠিকানা জানা থাকলে কাজটা অনেক
সহজ হয়ে যায়। চলুন, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
পর্তুগাল যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কোনো দূতাবাস বা ভিসা সেন্টার নেই।
কারণ, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পর্তুগালের কোনো অ্যাম্বাসি তৈরি হয়নি।
এক্ষেত্রে, পর্তুগালে যেতে হলে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভারতে যেতে হবে।
নয়াদিল্লিতে পর্তুগালের দূতাবাসটি অবস্থিত, সেখান থেকেই ভিসার আবেদন
প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
ভারতের দূতাবাসের মাধ্যমে আপনি পর্তুগাল ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, তবে
আপনাকে অনলাইনেই আবেদনটি করতে হবে। সবসময় সরকার-স্বীকৃত এজেন্সিগুলোর
মাধ্যমে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। অন্যথায়, আপনি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
হতে পারেন। এছাড়াও, কোনো দালাল চক্রের খপ্পরে পড়বেন না, এতে আপনার আর্থিক
ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
পর্তুগাল ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?
পর্তুগালের মুদ্রার (ইউরো) তুলনায় বাংলাদেশের টাকার মান কম। বর্তমানে
পর্তুগালের ১ ইউরো সমান বাংলাদেশের প্রায় ১৪১ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল কত কিলোমিটার?
বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালের দূরত্ব প্রায় ৯০৪৭ কিলোমিটার।
পর্তুগাল ভিসা পেতে কত সময় লাগে?
সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে হলে এবং আবেদন প্রক্রিয়ার সঠিক তথ্য দিলে ১৫ থেকে
২০ দিনের মতো সময় লাগবে।
পর্তুগাল ভিসা প্রসেসিং হতে কত দিন সময় লাগে?
আপনি যদি আপনার ভিসার আবেদনটি সঠিকভাবে পূরণ করে থাকেন এবং কোনো ভুল তথ্য
না দিয়ে থাকেন, তবে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সাধারণত ৪৫ দিন থেকে ৯০
দিনের মতো সময় লাগতে পারে।
শেষ মতামতঃ পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে
পর্তুগাল যাওয়ার মোট খরচ ভিসার ধরন এবং ব্যক্তিগত প্রস্তুতির ওপর নির্ভর
করে। আনুমানিক খরচগুলো বাংলাদেশি টাকায় আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আশা করছি পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে তা ইতিমধ্যে ধারণা পেয়েছেন।
অন্যদিকে পর্তুগালে প্রথম দিকে বেতন কিছুটা কম হলেও, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা
বাড়ার সাথে সাথে বেতন কাঠামো উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে আইটি,
টেকনিক্যাল এবং বেশি চাহিদাসম্পন্ন সেক্টরে উচ্চ বেতন পাওয়া সম্ভব।
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা: দালাল বা অসাধু এজেন্সির খপ্পরে পড়লে এই খরচ
অনেক বেড়ে যেতে পারে, তাই সরাসরি সরকারিভাবে স্বীকৃত এজেন্সির মাধ্যমে বা
নিজে আবেদন করার চেষ্টা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url