বেলারুশ যেতে কত টাকা লাগে ২০২৬ - কাজের চাহিদা ও বেতন কত জানুন
আমরা অনেকেই জানতে চাই বেলারুশ যেতে ঠিক কত টাকা খরচ হয়। আপনার মনেও কি অনলাইনে
এই বিষয়টি খোঁজার আগ্রহ আছে? যদি উত্তর 'হ্যাঁ' হয়, তবে আপনি একেবারেই সঠিক
জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের এই পোস্টে আমরা বেলারুশ যেতে প্রয়োজনীয় সব বিষয়, যেমন
কী কী লাগে, সেখানে বেতন কত টাকা এবং কোন কাজের চাহিদা কেমন সেই সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য জানব।
বর্তমানে ইউরোপে অনেক উন্নত দেশ আছে যেখানে আপনি কাজের জন্য যেতে পারেন। এদের
মধ্যে বেলারুশ অন্যতম এটি মধ্য ইউরোপের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এখানে
আপনার কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং বেতনের হারও বেশ ভালো।
যদি আপনার পরিকল্পনা থাকে ইউরোপে গিয়ে অর্থ উপার্জন করার, তবে বেলারুশ হতে পারে
আপনার জন্য সঠিক গন্তব্য। এখন আমরা এই বেলারুশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানব।
আপনি যদি সত্যিই এই বিষয়ে জানতে আগ্রহী হন, তবে লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
বেলারুশ যেতে কত টাকা লাগে
অনেকেরই প্রশ্ন থাকে, বেলারুশ যেতে আসলে কত টাকা খরচ হয়? সত্যি বলতে, এই খরচটা
মূলত নির্ভর করে আপনি কোন কাজের ভিসা নিয়ে যাচ্ছেন এবং কোন এজেন্সির মাধ্যমে
প্রক্রিয়াটি করছেন তার ওপর। চলুন, বিষয়টি একটু বিস্তারিতভাবে জানা যাক।
📌আরো পড়ুন👉আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে
যেসব এজেন্সি সরকারিভাবে অনুমোদিত, তাদের মাধ্যমে গেলে আপনার খরচ হয়তো একটু
বেশি হবে। সেক্ষেত্রে বেলারুশ যাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে
সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে আপনি যদি সরকারি নিয়ম মেনে
সরাসরি যাওয়ার চেষ্টা করেন, তবে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হবে এক্ষেত্রে প্রায় ৪
থেকে ৫ লাখ টাকার মতো লাগতে পারে।
তবে সবচেয়ে কম খরচ সাধারণত হয় স্টুডেন্ট এবং টুরিস্ট ভিসায়। আপনি যদি
স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান, তাহলে প্রায় ১ থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো লাগতে পারে। এর
বাইরে অন্যান্য খরচ বাবদ আরও ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা অতিরিক্ত লাগতে পারে।
অন্যদিকে, কেউ যদি কৃষি কাজ করার জন্য যেতে চান, সেক্ষেত্রে এই ভিসার জন্য ৪
থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
আসলে এখানে যে ভিসা খরচের কথা বলা হলো, সেটা মূলত নির্ভর করে এজেন্সির ওপর। যদি
কোনো বিশ্বস্ত বা পরিচিত এজেন্সির মাধ্যমে যেতে পারেন, তবে খরচ কম হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনার চেষ্টা করা উচিত, যদি বেলারুশে কোনো পরিচিত বা আপনজন
থাকেন, তবে তাদের মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা। এতে ভিসা খরচ অনেকটাই কম
পাওয়া যাবে।
বেলারুশ যেতে কি কি লাগে
বেলারুশ ইউরোপের একটি দেশ, যেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। আপনি
সেখানে কাজ করে ভালো অঙ্কের বেতন পেতে পারেন। কাজের বেতন সাধারণত প্রায় ৩৫০
ডলার থেকে ৪৫০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশী টাকায় এই পরিমাণ প্রায় ৪৫
হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার কাছাকাছি।
যদি আপনি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে বেলারুশ যেতে পারেন, তবে সেখানে জীবনযাত্রা
শুরু করা এবং কাজ পাওয়া খুব কঠিন হয় না। তাই বেলারুশে কাজের ভিসা ও বেতন সম্পর্কে
জেনে, সেখানে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে বেলারুশ যেতে যে সকল কাগজপত্র লাগবে তা হলো:
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ।
- জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি (প্রয়োজন হলে জমা দিতে হবে)।
- ন্যূনতম তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ।
- মেডিকেল রিপোর্ট ।
- অনলাইন ভিসা আবেদন পূরনকৃত ফরম ।
- ভিসা আবেদন ফি পরিষদের রশিদ ।
- দক্ষতার সার্টিফিকেট ইত্যাদি ।
বেলারুশ বেতন কত ২০২৬
বেলারুশ পূর্ব ইউরোপের একটি মধ্যম আয়ের দেশ। এই দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা
ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। যারা কাজের ভিসা নিয়ে এখানে যেতে আগ্রহী, তাদের জন্য
বেলারুশে বেতনের হার কত, তা জানা জরুরি।
বেলারুশে কাজের বেতন মূলত কাজের ক্যাটাগরি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দক্ষতা এবং
অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে আলাদা হয়ে থাকে। বর্তমানে বেলারুশে কাজের বেতন
সাধারণত প্রায় ৪০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
বেলারুশ কোন কাজের বেতন কত
অনেকেই কাজের ভিসা নিয়ে বেলারুশ যেতে আগ্রহী হন, তাই বেলারুশে কাজের বেতন কত,
সে সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। বেলারুশে বিভিন্ন কাজের জন্য বেতনের পরিমাণ ভিন্ন
ভিন্ন হয়। চলুন, কোন কাজের বেতন কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
এ দেশে আপনারা বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন, তবে কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে
বেতন-ভাতা সাধারণত আলাদা হয়। যদিও এ দেশের সরকার সাধারণত শ্রমিকদের জন্য একটি
বেতন কাঠামো তৈরি করে দেয়। সেই অনুযায়ী, বেলারুশে সর্বনিম্ন কাজের বেতন মাসে
প্রায় ৪৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো হয়ে থাকে।
📌আরো পড়ুন👉কাতারে কোন কাজের বেতন কত
তবে আপনি যদি উচ্চপদস্থ কোনো কাজ করেন, সেক্ষেত্রে আপনার মাসিক বেতন সর্বনিম্ন
৭০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ওপরেও হতে পারে। আপনার
অভিজ্ঞতা যত বেশি থাকবে, বেতন তত বেশি পাবেন। চলুন, এবার কোন কাজের জন্য কেমন
বেতন দেওয়া হয়, সে সম্পর্কে জানা যাক।
আপনি যদি এ দেশে কাজ করার জন্য যেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট
ভিসায় যেতে হবে। কাজের ভিসা নিয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে আপনি মাসে কমপক্ষে প্রায় ৪০
থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন। সর্বোচ্চ বেতন ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার
ওপরেও হতে পারে।
নিচে কাজের ধরণ অনুযায়ী বেলারুশ কোন কাজের বেতন কত তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হলঃ
➡️রেস্টুরেন্টঃ আপনি যদি রেস্টুরেন্টের কাজ করেন, সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে ৭০
হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন। আর যদি দক্ষতা আরও বাড়াতে পারেন,
তবে বেতন ১ লক্ষ টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতোও হতে পারে।
➡️ড্রাইভিংঃ আপনার যদি ড্রাইভিংয়ের কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে
ড্রাইভিংয়ের কাজ করে আপনি মাসে প্রায় ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার
মতো বেতন পেতে পারেন।
➡️ইলেকট্রিশিয়ানঃ যেহেতু বেলারুশ একটি উন্নত রাষ্ট্র, তাই সেখানে বিভিন্ন
ধরনের নির্মাণ কাজের জন্য ইলেকট্রিশিয়ানের প্রচুর চাহিদা থাকে। এই কারণে একজন
ইলেকট্রিশিয়ান মাসে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৭৫ হাজার টাকার মতো বেতন
পেয়ে থাকেন।
➡️ওয়েল্ডারঃ আপনি যদি ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করেন, সেক্ষেত্রে মাসে ৫০ হাজার
টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
➡️টাইলস এর কাজঃ আপনার যদি টাইলস বসানোর কাজে অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে সে ক্ষেত্রে
আপনি মাসে ৪৫ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো বেতন পেতে পারেন।
➡️কনস্ট্রাকশনঃ যেহেতু বেলারুশে বিভিন্ন ধরনের ভবন নির্মাণের কাজ করতে হয়,
সেক্ষেত্রে আপনি যদি কনস্ট্রাকশনের কাজ করেন, তাহলে মাসে ৪৮ হাজার টাকা থেকে
শুরু করে ৬৫ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
➡️প্লাম্বারঃ আপনি যদি প্লাম্বার হিসেবে চাকরি করেন, সেক্ষেত্রে মাসে ৬৫ হাজার
টাকা থেকে ৮৫ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
➡️কৃষি কাজঃ আপনি যদি কৃষি কাজের ক্ষেত্রে কাজ করতে চান, যেমন ফার্মিং বা
বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদের কাজে আপনার অভিজ্ঞতা থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনি মাসে
প্রায় ৩৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকার মতো বেতন পেতে পারেন।
➡️কোম্পানির কাজঃ আপনি যদি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, তাহলে
মাসে আপনার বেতন প্রায় ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫৫ হাজার টাকার মতো হবে।
➡️প্যাকেজিংঃ খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় অনেক ক্ষেত্রে প্যাকেজিংয়ের কাজ করতে
পারেন। অথবা আপনি যদি সুপারভাইজারের পদে চাকরি করেন, সেক্ষেত্রে মাসে ৫৫ হাজার
টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন।
➡️ক্লিনারঃ আপনি যদি কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্টে ক্লিনার হিসেবে অথবা রান্নার
সহায়ক হিসেবে কাজ করেন, সেক্ষেত্রে মাসে ৩৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০,০০০
টাকার মতো বেতন পাবেন।
➡️শেফঃ অন্যদিকে, আপনি যদি কুক বা শেফ হিসেবে চাকরি করতে পারেন, তাহলে মাসে
আপনার বেতন প্রায় ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো হবে।
➡️ফ্যাক্টরি শ্রমিকঃ সাধারণ ফ্যাক্টরি শ্রমিক হিসেবে কাজ করলে মাসে ৪০ হাজার
টাকা থেকে ৫৫ হাজার টাকার মতো বেতন পাবেন। তবে, যারা বিভিন্ন ফ্যাক্টরির মেশিন
অপারেটর হিসেবে চাকরি করেন, তাদের ক্ষেত্রে মাসে ৫৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকার
মতো বেতন পাওয়া যায়।
➡️অদক্ষ শ্রমিকঃ যে সকল বাংলাদেশী শ্রমিকের কাজের কোনো অভিজ্ঞতা নেই, তারা যদি
এ দেশে কাজ করেন, তাহলে মাসে প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো বেতন
পাবেন। তবে যাদের কাজের দক্ষতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মাসে বেতনের পরিমাণ প্রায়
৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
অনেক কোম্পানিই বিভিন্ন দেশ থেকে লোক নিয়োগের সময় কর্মীদের বেতন-ভাতার
পাশাপাশি থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা বিনামূল্যে করে থাকে। এর ফলে শ্রমিকদের বেতনের
টাকা খরচ করতে হয় না। এর সঙ্গে কিছু কোম্পানি স্বাস্থ্য বীমা ও যাতায়াতের
খরচও বহন করে। এছাড়া, অনেক কোম্পানি বছরে একবার দেশে আসা-যাওয়ার খরচও দিয়ে
থাকে।
এসব দেশে কাজের সময় সাধারণত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা হয়ে থাকে এবং সপ্তাহে ৫ থেকে ৬
দিন কাজ করতে হয়। সাধারণত সপ্তাহে একদিন ছুটি থাকে। যদি কেউ ওভারটাইম করেন,
তবে বেতনের সাথে অতিরিক্ত টাকা যোগ হয়।
সবশেষে বলা যায়, কাজের দক্ষতা থাকলে যেকোনো কোম্পানি আপনাকে বেশি বেতন-ভাতা
দেবে এবং কাজ পছন্দ হলে আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা দেবে। তাই বাংলাদেশ থেকে বেলারুশ
যাওয়ার সময় অবশ্যই কাজের ওপর অভিজ্ঞতা নিয়ে যাওয়া উচিত।
বেলারুশ সর্বনিম্ন বেতন কত
বেলারুশে কাজের জন্য একটি সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো নির্ধারিত আছে। বর্তমানে এই
সর্বনিম্ন বেতন প্রায় ২৫ হাজার টাকা। প্রতি সপ্তাহে সাধারণত ৪০ ঘণ্টা মূল
ডিউটি থাকে।
তবে আনন্দের বিষয় হলো, বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকেরা সাধারণত এই সর্বনিম্ন
বেতনের চেয়ে অনেক বেশি টাকা উপার্জন করে থাকেন। যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই এই
সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো প্রযোজ্য হয়।
বেলারুশ কোন কাজের বেতন বেশি
পূর্ব ইউরোপের দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ বেলারুশে বিভিন্ন খাতে কাজের সুযোগ রয়েছে।
তবে সাধারণত দক্ষতাসম্পন্ন কারিগরি বা টেকনিক্যাল কাজের বেতন তুলনামূলকভাবে
বেশি হয়, কারণ এসব কাজে অভিজ্ঞতা ও বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়।
📌আরো পড়ুন👉কাতারে কোন কাজের বেতন বেশি?
১। ইলেকট্রিশিয়ান: এদের কাজটা কারিগরি এবং ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে যারা শিল্প
বা কল-কারখানার মতো জটিল বৈদ্যুতিক কাজ করতে পারেন, তাদের চাহিদা ও বেতন সাধারণ
ইলেকট্রিশিয়ানের চেয়ে অনেক বেশি।
২। ওয়েল্ডার: অত্যন্ত দক্ষ ওয়েল্ডারদের চাহিদা সবখানেই বেশি। বিশেষ করে যারা
বিশেষায়িত ওয়েল্ডিং (যেমন আর্কে ওয়েল্ডিং) বা নির্মাণ শিল্পে কাজ করেন, তাদের
বেতন অন্যান্য শ্রমিকের চেয়ে বেশি থাকে। একটি তথ্য অনুযায়ী, একজন ওয়েল্ডারের গড়
বেতন অন্যান্য শ্রমিকের চেয়ে ভালো।
৩। টাইলস মিস্ত্রি: সুন্দর ফিনিশিং এবং সঠিক কাজ দেওয়ার জন্য দক্ষ টাইলস
মিস্ত্রিদের আলাদা কদর রয়েছে। গড় বেতনের ক্ষেত্রে এটি অন্যান্য সাধারণ শ্রমিকের
চেয়ে কিছুটা এগিয়ে।
৪। রাজমিস্ত্রি: রাজমিস্ত্রির বেতন নির্ভর করে তার দক্ষতার ওপর। সাধারণ নির্মাণ
শ্রমিকের বেতন তুলনামূলক কম হলেও, অভিজ্ঞ এবং কাজের মান ভালো হলে আয় বাড়ে।
৫। প্লাম্বার: জটিল পাইপলাইন বা নতুন আবাসন প্রকল্পে দক্ষ প্লাম্বাররা ভালো
বেতন পান।
৬। মেশিন অপারেটর: যেসব মেশিন অপারেটর জটিল বা আধুনিক যন্ত্রপাতি চালাতে পারে,
যাদের বিশেষ লাইসেন্স বা প্রশিক্ষণ আছে (যেমন: ফর্কলিফট অপারেটর), তাদের বেতন
সাধারণ ফ্যাক্টরি শ্রমিকের চেয়ে অনেক বেশি। তাদের দক্ষতা উৎপাদনশীলতার জন্য
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭। ফ্যাক্টরি শ্রমিক: সাধারণ ফ্যাক্টরি শ্রমিক বা লেবারদের বেতন সাধারণত
বেলারুশের গড় বেতনের কাছাকাছি বা কিছুটা কম থাকে। তবে যদি আপনি বিশেষ কোনো কাজ
বা শিফটে (যেমন রাতের শিফট) কাজ করেন, তবে বেতন বাড়তে পারে।
৮। ট্যাক্সি ড্রাইভার: ট্যাক্সি ড্রাইভারদের মাসিক আয় বেশ পরিবর্তনশীল। যদি
তারা নিজেদের গাড়িতে কাজ করেন এবং ভালো টিপস পান, বিশেষ করে মিনস্ক-এর মতো বড়
শহরে, তবে তাদের আয় বেশ ভালো হতে পারে। তবে বেতনের চেয়ে আয় বেশি নির্ভর করে
কাজের সময়ের ওপর।
৯। হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মী: এই খাতের বেস স্যালারি (মূল বেতন) হয়তো খুব বেশি
নয়, কিন্তু ভালো হোটেলে বা রেস্টুরেন্টে কাজ করলে টিপস পাওয়ার দারুণ সুযোগ
থাকে। এই টিপস মিলিয়ে তাদের মোট আয় অনেক বেড়ে যায়।
১০। প্যাকেজিং: এই কাজটি সাধারণত তুলনামূলক কম দক্ষতার হয়ে থাকে। তাই এর বেতনও
সাধারণত গড় বেতনের চেয়ে কম বা মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে।
১১। কৃষি শ্রমিক: কৃষি শ্রমিকদের বেতন সাধারণত তুলনামূলকভাবে কম হয়। তবে ফসল
কাটার মতো মৌসুমী কাজের সময় ওভারটাইম বা চুক্তির ভিত্তিতে ভালো আয় হতে পারে।
উপরের তালিকা অনুযায়ী বেলারুশে সবচেয়ে ভালো বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে দক্ষ
ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার এবং বিশেষায়িত মেশিন অপারেটরদের। এরপরেই আসে টাইলস
মিস্ত্রি ও ট্যাক্সি ড্রাইভারদের।
অন্যদিকে, কৃষি শ্রমিক বা সাধারণ প্যাকেজিং কর্মীদের বেতন তুলনামূলকভাবে কম হতে
পারে। তবে মনে রাখবেন, বেতন সবসময় অভিজ্ঞতা, কাজের স্থান এবং নিয়োগকর্তার ওপরও
নির্ভর করে।
বেলারুশ কোন কাজের চাহিদা বেশি
বেলারুশে কোন কাজের চাহিদা বেশি, তা জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষই
ইন্টারনেটে খোঁজ করেন। বেলারুশ যেতে ইচ্ছুক প্রতিটি মানুষের জন্য কোন কাজের
চাহিদা বেশি তা জেনে নেওয়া জরুরি। কারণ, যাওয়ার আগে কাজগুলো সম্পর্কে জানলে
আপনি সেগুলোর ওপর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
দেশটি সবসময় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মীদের মূল্যায়ন করে, এবং তাদের
বেতনের পরিমাণও বেশি হয়ে থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কাজগুলোর
চাহিদা বেশি:
📌আরো পড়ুন👉লুক্সেমবার্গ কোন কাজের চাহিদা বেশি?
- নির্মাণ শ্রমিকের কাজ
- ফ্যাক্টরি শ্রমিক এর কাজ
- গার্মেন্টস শ্রমিকের কাজ
- হোটেলের কাজ
- ডেলিভারি ম্যানের কাজ
- ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ
- কৃষি কাজ ইত্যাদি
উপরে উল্লেখ করা কাজগুলোর বেলারুশে ভালো চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি এই কাজগুলোর
ওপর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যেতে পারেন, তবে আশা করা যায় আপনি ভালো
পরিমাণ বেতন আশা করতে পারেন।
বেলারুশে থাকা-খাওয়া খরচ কেমন
বেলারুশে থাকা-খাওয়া এবং জীবনযাপন কেমন এ বিষয়ে অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে।
বেলারুশ যেহেতু একটি ইউরোপীয় দেশ, তাই অনেকে এই দেশে যেতে চাইলেও বুঝে উঠতে
পারেন না যে সেখানকার জীবনযাত্রা কেমন হবে, সেখানে টিকে থাকা আদৌ সম্ভব কিনা।
📌আরো পড়ুন👉আমেরিকা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ কত
তবে আপনাদের জন্য একটি পরামর্শ থাকবে: অবশ্যই কোনো দেশে যাওয়ার আগে বা ভিসা
লাগানোর আগে সেখানকার কাজের ধরন, থাকা-খাওয়ার পরিবেশ, বেতন ইত্যাদি সম্পর্কে
ভালোভাবে জেনে তবেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অনেক ফ্যাক্টরি বা কোম্পানি
কর্মীদের জন্য ডরমেটরি বা শোয়ার ঘরের ব্যবস্থা করে থাকে।
সাধারণত একটি রুমে ৪ থেকে ৬ জন থাকার ব্যবস্থা থাকে। কোনো রুমে সিঙ্গেল বেড
থাকে, আবার কোনো রুমে একটি বেডের ওপরে আরেকটি বেড জোড়া লাগানো থাকে। পানি,
বিদ্যুৎ, গ্যাস সবকিছুর খরচ ফ্রি থাকে। সেখানে বাংলাদেশী চাল পাওয়া যায় না,
তবে রাশিয়ান চাল পাওয়া যায়। নিজে রান্না করে খেলে মাসে বাংলাদেশী টাকায়
২০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা খরচ হতে পারে।
বেলারুশে শীতের তীব্রতা একটু বেশি, তাই শীতকালের জন্য গরম কাপড়চোপড় নেওয়া
জরুরি। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট হিসেবে বাস, মেট্রো রেল ইত্যাদি সহজলভ্য। ট্রাফিক
আইন কঠোর হলেও সুশৃঙ্খল। হোটেলে খাবার খেলে খরচ বেশি পড়বে, তবে যারা নিজেরা
রান্না করতে জানেন তাদের খরচ তুলনামূলকভাবে কম হবে।
বেলারুশ কেমন দেশ
বেলারুশ পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত একটি দেশ। রাশিয়া, ইউক্রেন, পোল্যান্ড,
লিথুয়ানিয়া এবং লাটভিয়া—এই মোট পাঁচটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সাথে বেলারুশের
আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। সাধারণত, আধুনিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক
সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক নিদর্শনের জন্য দেশটি বিখ্যাত।
প্রতিনিয়ত অসংখ্য পর্যটক বেলারুশ ভ্রমণে আসেন। মির ক্যাসল, নেসভিজ দুর্গ এবং
বেলোভেজস্কা পুশচা ন্যাশনাল পার্ক দেশটির বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে
অন্যতম। রাশিয়ান ভাষা জানা থাকলে বেলারুশ ভ্রমণে সুবিধা পাওয়া যায়। এছাড়া,
বেলারুশ তেলজাত পণ্য, কৃষিপণ্য এবং ভারী যন্ত্রপাতি রপ্তানিতে শীর্ষস্থানীয়।
তবে, বেলারুশের অর্থনীতি প্রায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল।
বেলারুশ সেনজেনভুক্ত একটি দেশ, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক নিদর্শনে
ভরপুর। এই কারণেই দেশটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। প্রতি বছর বিভিন্ন
দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে ভ্রমণে আসেন। দেশটিতে রয়েছে অসংখ্য ন্যাশনাল
পার্ক ও পর্যটন কেন্দ্র, যা ভ্রমণকারীদের দারুণ বিনোদন দেয়।
ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখানে ভালো সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। যাতায়াতের জন্য নানা
ধরনের সাশ্রয়ী যানবাহন রয়েছে, যার ভাড়া খুবই কম। স্থানীয় লোকজনও অত্যন্ত
সহযোগিতাপরায়ণ, ফলে পর্যটকদের প্রতারিত হওয়ার ভয় নেই।
সুতরাং, আপনি নিরাপদে বেলারুশ ভ্রমণ করতে পারেন। অর্থনৈতিকভাবেও বেলারুশ একটি
উন্নত রাষ্ট্র, কারণ তেলজাত পণ্য ও কৃষিপণ্য রপ্তানিতে দেশটি সাধারণত শীর্ষ
অবস্থানে থাকে।
সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
প্রশ্ন: বেলারুশ ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
উত্তর: বেলারুশের ১ টাকা বাংলাদেশী টাকায় ৩৫.৭৭ টাকার সমতুল্য। তবে, সময়ের
পরিবর্তনের সাথে সাথে এই বিনিময় হারে কম বা বেশি হতে পারে।
প্রশ্ন: বেলারুশের মুদ্রার নাম কি
উত্তর: বেলারুশের মুদ্রার নাম হচ্ছে বেলারুশিয়ান রুবল।
প্রশ্ন: বেলারুশ কি ওভারটাইম করা যায়?
উত্তর: পৃথিবীর যেকোনো দেশের মতোই, শুধুমাত্র বেলারুশ নয়, অন্যান্য দেশেও
অতিরিক্ত কাজ করলে বেশি উপার্জন করা যায়। বেলারুশের ক্ষেত্রেও এটি ব্যতিক্রম
নয়, সেখানেও ওভারটাইম করার সুযোগ আছে। আপনি যদি বেলারুশে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ
উপার্জন করতে চান, তবে অবশ্যই আপনাকে ওভারটাইম কাজ করতে হবে এবং তার সুযোগ
খুঁজে নিতে হবে।
প্রশ্ন: বেলারুশ কত ঘন্টা কাজ করতে হয়?
উত্তর: বেলারুশে সাধারণত সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করতে হয় এবং লাঞ্চের জন্য
৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। সপ্তাহে একদিন ছুটি থাকে, যা সাধারণত শনিবার অথবা
রবিবার হয়। এই নির্ধারিত কাজের পাশাপাশি আপনি অন্য কাজও করতে পারবেন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে বেলারুশ কত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে এ দেশের দূরত্ব প্রায় ৬১০২ কিলোমিটার এর মত।
লেখকের শেষ মতামত
আজকের আলোচনায় আমরা মধ্য ইউরোপের উন্নত দেশ বর্তমান সময়ে বেলারুশ যেতে কত
টাকা লাগে, কাজের ভিসার খরচ, সম্ভাব্য বেতন এবং সেখানে কোন কোন কাজের চাহিদা
বেশি, এই বিষয়গুলো বিস্তারিত তুলে ধরেছি।
আপনার যদি বিদেশে গিয়ে অর্থ উপার্জনের চিন্তা থাকে, তবে বেলারুশ হতে পারে একটি
চমৎকার গন্তব্য। তবে সেখানে যাওয়ার আগে অবশ্যই চেষ্টা করুন কোনো একটি
নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা অর্জন করে যেতে। এতে আপনি শুরু থেকেই উচ্চ বেতনে চাকরি
পেতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে বেলারুশ ভ্রমণের খরচ সিজনের ওপর নির্ভর করে কম-বেশি হতে পারে।
সাধারণত, অফ-সিজনে বাংলাদেশ থেকে বেলারুশ যেতে ন্যূনতম প্রায় ৪০ হাজার টাকা
থেকে শুরু করে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করা সম্ভব। তবে এজেন্সির মাধ্যমে
বেলারুশের ভিসা তৈরির ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। ধন্যবাদ।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url