আমেরিকা ভিসার দাম কত ২০২৬ - আমেরিকায় বেতন কত (আপডেট তথ্য)

বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে পৃথিবীর সেরা দেশ আমেরিকায় যেতে চায়। বর্তমানে সুপার পাওয়ার হিসেবে পরিচিত আমেরিকা। বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনা কিংবা কাজের উদ্দেশ্যে সেখানে যেতে আগ্রহীদের আমেরিকার ভিসা খরচ এবং সম্ভাব্য বেতন সম্পর্কে ধারণা রাখা প্রয়োজন।
আমেরিকা ভিসার দাম কত
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসীরা নানা উদ্দেশ্য নিয়ে এই উন্নত দেশটিতে যাচ্ছে। প্রবাসীদের কাছে এটি সুযোগের দেশ হিসেবে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন সেক্টরে কাজের অফুরন্ত সুযোগ থাকায়, স্টুডেন্ট কিংবা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে আগ্রহীদের আমেরিকার বেতন ও ভিসার দাম সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

আমেরিকা ভিসার দাম কত

বর্তমানে সরকারিভাবে আমেরিকা ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অন্যদিকে, বেসরকারি কোনো এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চাইলে এই খরচ প্রায় ১০ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আমেরিকা ভিসার দাম মূলত ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। নিচে ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী খরচের বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। কোন ভিসায় কত টাকা খরচ হতে পারে তা জানতে পারবেন।

আমেরিকা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ কত

আমেরিকা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের বহু প্রবাসগামী তাদের স্বপ্নের দেশটিতে পাড়ি জমানোর আকাঙ্ক্ষা রাখেন। তবে দেশটিতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে ঠিক কত টাকা খরচ হতে পারে, সে সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। আমেরিকায় প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে, তাই প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকলে সহজেই কাজ খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শ্রমিকের কাজের চাহিদা যেমন বেশি, তেমনি বেতনের পরিমাণও বেশি হয়ে থাকে। আমেরিকা ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে যেতে কেমন খরচ হতে পারে, তা নিচে জেনে নেওয়া যাক।

সরকারিভাবে আমেরিকা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে খরচ হতে পারে প্রায় ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে, কোনো বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় ১০ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। তবে এই খরচের পরিমাণ কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।

আমেরিকা ড্রাইভিং ভিসা খরচ কত

আমেরিকাতে গাড়ির ড্রাইভিং কাজের চাহিদা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেশি। আর এই কারণে ড্রাইভিং ভিসার খরচ পূর্বের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে আমেরিকাতে যেতে আগ্রহী, ড্রাইভিং ভিসাতে কেমন খরচ হতে পারে সে সম্পর্কে জানতে নিচে পড়ুন।

আমেরিকাতে সরকারিভাবে ড্রাইভিংয়ের মাধ্যমে যেতে চাইলে আপনার ন্যূনতম খরচ হতে পারে প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। তবে, যদি কোনো বেসরকারি এজেন্সির সাহায্যে যান, তাহলে সর্বনিম্ন ৬ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

আমেরিকা কোম্পানি ভিসার খরচ কত

আমেরিকাতে বহু বড় কোম্পানি আছে, যারা কাজের চাহিদা অনুযায়ী সরকারি এবং বেসরকারিভাবে কর্মী নিয়োগ করে। আপনারা যারা কাজের উদ্দেশ্যে কোম্পানি ভিসা নিয়ে দেশটিতে যেতে চাইছেন, তাদের জন্য নিচে আলোচনা করা হলো যে এক্ষেত্রে সাধারণত কত টাকা খরচ হতে পারে।

কোম্পানি ভিসায় আমেরিকাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারিভাবে সাধারণত খরচ ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মধ্যে থাকে। অন্যদিকে, বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে গেলে এই খরচ সর্বনিম্ন প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আমেরিকা ক্লিনার ভিসার খরচ কত

আমেরিকাতে ক্লিনিং কাজের প্রচুর চাহিদা থাকায় অনেকেই ক্লিনার ভিসা নিয়ে সেখানে যেতে আগ্রহী হন। ক্লিনার ভিসা মূলত ওয়ার্ক পারমিট ভিসার অন্তর্ভুক্ত।

এই ভিসায় সরকারিভাবে যেতে আনুমানিক খরচ হতে পারে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে, কোনো বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে গেলে খরচ প্রায় ১২ লক্ষ টাকা হতে পারে।

আমেরিকা ভিসার আবেদন খরচ কত

আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকাতে চার ক্যাটাগরিতে ভিসা আবেদন করা যাচ্ছে সেগুলি হলো স্টুডেন্ট ভিসা, কাজের ভিসা, চিকিৎসার ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসা।
এই চার ক্যাটাগরির ভিসাতেই আপনারা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে পারবেন। তাই আপনারা যারা আমেরিকা ভিসার দাম কত জানতে চাইছিলেন, তাদের জন্য নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আমেরিকা ভিসার আবেদন খরচ কত
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসাঃ বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে চাইলে আপনার খরচ হবে প্রায় ২২,৫২৫ টাকা। অর্থাৎ, প্রায় ২৩ হাজার টাকা দিয়ে আপনি অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তবে মনে রাখবেন, এই ভিসার জন্য আবেদন করতে আপনার রেজাল্ট ভালো হতে হবে এবং আইইএলটিএস স্কোর বেশি থাকা আবশ্যক। আপনারা এই https://bd.usembassy.gov/visas/ ওয়েবসাইটে গিয়ে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে পারেন।

আমেরিকা কাজের ভিসাঃ বাংলাদেশ থেকে যারা আমেরিকার কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট পেতে চান, তাদের অনলাইনে আবেদন করতে ২৪,৯৬০ টাকা লাগবে।

অর্থাৎ, আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার কাজের ভিসার জন্য আবেদন করেন, তবে আপনার ২৪,৯৬০ টাকা খরচ হবে। তবে মনে রাখবেন, যে কাজে আপনি আমেরিকাতে যেতে চান, সেই কাজ সম্পর্কে আপনার প্রচুর অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক।

আমেরিকা টুরিস্ট ভিসাঃ আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা টুরিস্ট ভিসা বা ভ্রমণ ভিসায় ঘুরতে যেতে চান, তাদের অনলাইনে আবেদন করতে ২২,৫২৫ টাকা খরচ হবে।

আপনি আমেরিকার ছয় মাসের মেয়াদী একটি ভ্রমণ ভিসা পাবেন। তবে আমেরিকা যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে পাঁচটি থেকে ছয়টি দেশ ভ্রমণ করতে হবে, যেমন নেপাল, ভারত, ভুটান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া এরকম আরও বিভিন্ন দেশ।

আমেরিকা চিকিৎসা ভিসাঃ আমেরিকা একটি উন্নত দেশ হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থাও অনেক উন্নত। ফলে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক রোগী চিকিৎসার জন্য সেখানে যান। বর্তমানে আমেরিকা চিকিৎসা ভিসা পেতে আপনাকে অনলাইনে ২২,৫২৫ টাকা দিয়ে আবেদন করতে হবে। তবে ভিসা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।

আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে সেটা জানার পাশাপাশি, চলুন এবার দেশটির ভিসার দাম বা আবেদন খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আমেরিকায় বেতন কত ২০২৬

আমেরিকাতে একজন প্রবাসী কর্মীর বেতন সাধারণত ঘণ্টা প্রতি নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ, একজন শ্রমিক কত ঘণ্টা কাজ করেছেন, তার ওপর নির্ভর করে বেতন নির্ধারিত হয়। 
আমেরিকায় বেতন কত
আমেরিকার সরকার কর্তৃক সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারিত হয় $৭.২৫ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রতি ঘণ্টায় দাঁড়ায় প্রায় ৮৬৩.৬২ টাকা।
আমেরিকাতে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শ্রমিকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, তাই দেশটিতে সহজেই কাজ পাওয়া যায়। দক্ষ শ্রমিকের জন্য সেখানে বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেশি।

আমেরিকাতে কাজের উদ্দেশ্যে গেলে আপনি প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৮১৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।

আমেরিকাতে বেতনের হিসাবটি নিম্নরূপ:
  • প্রতি ঘণ্টা: ৭.২৩ মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮৬১.২৩ টাকা)।
  • প্রতি দিন (৮ ঘণ্টা কাজ): ৫৮ মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬,৯০৮.৯৫ টাকা)।
  • প্রতি মাস (২৪ দিন কাজ): ১,৩৯২ মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১,৬৫,৮১৫ টাকা)।

আমেরিকার সর্বনিম্ন বেতন কত

আমেরিকাতে যারা বৈধ হয়েছেন, পিআর (PR) বা গ্রিন কার্ড হোল্ডার, তাদের কাজের স্যালারি সাধারণত বেশি হয় এবং তারা সর্বোচ্চ বেতনে কাজ করতে পারেন। তারা অধিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন এবং প্রতি ঘণ্টায় সর্বনিম্ন ১৫ থেকে ১৬ ডলার বেতন পান। সর্বোচ্চ বেতন ঘণ্টায় ১০০ ডলার পর্যন্তও হতে পারে।

আইটি স্পেশালিস্ট যেমন: আইটি প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডেভেলপার, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যাপস ডেভেলপার এই ধরনের জব সেক্টরে আমেরিকাতে সর্বোচ্চ বেতনে চাকরি করা যায়।

সর্বোচ্চ বেতন ১০০ ডলার পর্যন্ত পার ঘণ্টায় হয়ে থাকে। ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার, পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার অর্থাৎ সব ধরনের ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন সর্বনিম্ন ৫০ ডলার হয়ে থাকে। তবে যারা ডাক্তার, যেমন এফসিপিএস বা আরও উচ্চ মানের ডিগ্রিধারী, তারা ১০০ ডলার পার ঘণ্টায় পেয়ে থাকেন। একটি কথা মনে রাখতে হবে, আপনি যে কাজই করুন না কেন, আপনাকে ওই দেশে ট্রেনিংপ্রাপ্ত হতে হবে।

তবে আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে শেফের কাজ শিখে যেতে পারেন এবং ড্রাইভিংয়ে ভালো প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে আমেরিকাতে আপনি ভালো বেতনে চাকরি করতে পারবেন। মনে রাখতে হবে, কাজের জন্য আপনাকে অবশ্যই এক মাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত ট্রেনিং নিতে হবে।

আমেরিকায় প্রবাসীদের বেতন কত

উন্নত দেশ আমেরিকাতে কাজের জন্য বিভিন্ন দেশের মানুষ পাড়ি জমান। সেখানে কাজের ও চাকরির ধরনের ওপর ভিত্তি করে বেতন নির্ধারিত হয়। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, আমেরিকায় প্রবাসীদের বেতন কত? এ বিষয়ে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো।
আমেরিকায় প্রবাসীদের বেতন কেমন হবে, তা কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন— পেশার ধরন, কাজের অবস্থান, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কোম্পানির আকারের ওপর। আমেরিকায় যে প্রবাসীরা স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি খাতে চাকরি করেন, তাদের বেতন সাধারণত সর্বোচ্চ বেশি হয়ে থাকে।

বিভিন্ন পেশার বার্ষিক আয়ের চিত্র:
  • একজন নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার বছরে প্রায় ৯৮ হাজার ডলার ইনকাম করেন।
  • একজন ডাক্তার প্রতি বছর ২ লক্ষ ৬ হাজার ডলার আয় করে থাকেন।
  • শিক্ষক-শিক্ষিকারা বছরে প্রায় ৬০ হাজার ডলার আয় করেন।
  • ব্যাংকারদের বার্ষিক আয় প্রায় ৪৫ হাজার ডলার।
প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্র ও আয়ের তথ্য: অনেক প্রবাসী রেস্টুরেন্টে কাজ করে থাকেন। যারা রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করেন, তারা সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করলে তাঁদের সাপ্তাহিক বেতন সাধারণত ১,০০০ থেকে ১,২০০ ডলার হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক প্রবাসী ট্যাক্সি ক্যাব চালনাকেও পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।

যারা ট্যাক্সি ক্যাব চালান, তারা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করলে প্রায় ১,০০০ ডলার মতো আয় করতে পারেন। নিজের ট্যাক্সি থাকলে খুবই ভালো মানের ইনকাম করা সম্ভব।

আবাসিক হোটেলগুলোতে কর্মরত প্রবাসী কর্মীদের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ২০ হাজার ডলারের মতো হতে পারে। এই কাজটিকে অনেক ভালো এবং উচ্চমানের বেতনের একটি উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, যারা সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করেন, তাদের বছরে প্রায় ৩৫ হাজার ডলার আয় হয়ে থাকে।

তবে বেতনকে নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ, অনেক কাজে অভিজ্ঞতা, উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা, এবং ভালো মানের কোম্পানির উপর বেতন নির্ভর করে তা অনেক বেশি হতে পারে। এছাড়াও, একই ধরনের কাজ হলেও ছোট এলাকার তুলনায় বড় এলাকা বা মেট্রো শহরগুলোতে বেতনের পরিমাণ সাধারণত বেশি হয়ে থাকে।

আমেরিকার শ্রমিকের বেতন কত?

আমেরিকা একটি উন্নত দেশ হওয়ার কারণে এখানে বিভিন্ন সেক্টরে কাজের সুযোগ রয়েছে। যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে ফেডারেল কর্তৃক নির্ধারিত আমেরিকার সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো প্রযোজ্য হয়।

এই দেশে বিভিন্ন ধরনের শ্রমিক রয়েছে। যেমন: কনস্ট্রাকশন শ্রমিক, ওয়েল্ডিং শ্রমিক, কারখানা শ্রমিক, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার ইত্যাদি। বর্তমানে আমেরিকার শ্রমিকদের বেতন প্রায় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা থেকে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হয়ে থাকে।

আমেরিকা কোন কাজের বেতন বেশি?

আমেরিকা পৃথিবীর অন্যতম একটি শিল্প উন্নত দেশ। এই দেশে বিভিন্ন ধরনের কাজ বিদ্যমান, যার মধ্যে বাঙালি প্রবাসীরা সাধারণত দক্ষতা নির্ভর কাজগুলো বেশি করে থাকেন।

বর্তমানে আমেরিকায় যেসব কাজে বেতন বেশি হয়ে থাকে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ফুড ডেলিভারি সার্ভিস, উবার ড্রাইভিং, প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মী, কনস্ট্রাকশন, ট্রাক ড্রাইভার এবং ফ্যাক্টরি শ্রমিক।

আমেরিকা ভিসা আবেদন ২০২৬

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ (B-1/B-2) বা অন্য নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।
প্রথমে, অনলাইনে DS-160 ফর্ম পূরণ করে কনফার্মেশন পৃষ্ঠা প্রিন্ট নিতে হয়। এরপর, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড বা স্কাই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১৮৫ ডলার সমমূল্যের ফি জমা দিতে হবে। ফি জমা দেওয়ার পর USTravelDocs-এ একটি প্রোফাইল খুলে সাক্ষাৎকারের তারিখ বুক করতে হয়।

সবশেষে, ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নির্ধারিত দিনে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে ইন্টারভিউ দিতে হবে। সাক্ষাৎকারের সময় কর্মকর্তাকে দেখাতে হবে যে আপনার বাংলাদেশে শক্তিশালী পারিবারিক ও পেশাগত বন্ধন রয়েছে এবং ভ্রমণ শেষে আপনি দেশে ফিরে আসবেন।

ভিসা অনুমোদন পেলে পাসপোর্টে ভিসা সিল হয়ে কুরিয়ার বা পিক-আপের মাধ্যমে তা আপনার কাছে পৌঁছে যায়। বর্তমানে পুরো প্রক্রিয়ায় গড়ে ১২-১৪ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে, জরুরি চিকিৎসা বা পারিবারিক কারণে প্রমাণ দেখিয়ে দ্রুত ইন্টারভিউয়ের আবেদন করা যায়।

আমেরিকা ভিসা প্রসেসিং করার নিয়ম

আমেরিকার ভিসা পাওয়ার জন্য যোগ্যতা থাকলে প্রথমে উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসা ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবে। এরপর অনলাইনে DS-160 ফর্ম পূরণ করতে হয় এবং ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা আবেদন ফি পরিশোধ করতে হয়।

ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আমেরিকার দূতাবাসে নির্ধারিত তারিখে সাক্ষাৎকার দিতে হবে। ইন্টারভিউ বোর্ডে ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও আমেরিকায় অবস্থান সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করা হয়। সাক্ষাৎকার দেওয়ার পরে ভিসা অনুমোদনের ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হয়।

কেউ চাইলে বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমেও আমেরিকা ভিসার প্রসেসিং করতে পারেন। সেক্ষেত্রে এজেন্সিকে ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এজেন্সি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি নিয়ে ভিসা আবেদনকারীর পক্ষ হয়ে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে থাকে।

আমেরিকা যাওয়ার উপায়

আমেরিকা পৃথিবীর উন্নতমানের একটি দেশ। সেখানকার বিশাল বিশাল ভবন, আকর্ষণীয় নানা জায়গা, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এসব একত্রে নিয়ে এটি খুবই চমৎকার একটি দেশ। একারণেই আমেরিকা অনেকের কাছে খুবই পছন্দের একটি স্থান।
বিভিন্ন কারণে অনেকে আমেরিকা যেতে চান: কেউ চাকরির জন্য, কেউ কর্মের উদ্দেশ্যে, কেউ পড়াশোনা করতে, আবার কেউবা ঘুরতে। আমেরিকা একটি উন্নতশীল দেশ হওয়ায় সেখানে যাওয়ার আগ্রহ অনেকেরই বেশি। আপনি যে কারণেই আমেরিকা যেতে চান না কেন, আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে।

চলুন তাহলে আমেরিকা যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

আমেরিকাতে বেশ কয়েকটি ভিসা ক্যাটাগরিতে ভিসা পাওয়া যায়। এর মধ্যে শিক্ষা ক্যাটাগরিতে ভিসা পাওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ। শিক্ষা ক্ষেত্রে বা যারা স্থায়ীভাবে চাকরির ভিসা পেতে চান, তাঁদেরকে ইবি সিরিজের ক্যাটাগরি ১ থেকে ৫ এর অধীনে আবেদন করতে হবে। ইবি ক্যাটাগরি ছাড়াও আমেরিকা যাওয়ার জন্য আরও বেশ কিছু ক্যাটাগরি রয়েছে।

EB-1 ভিসা: এই ক্যাটাগরিতে আমেরিকা যাওয়ার আবেদন করতে হলে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কোনো বিষয়ের ওপর বিশেষ দক্ষতা বা গবেষণা ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকলে এই ক্যাটাগরিতে আবেদন করে ভিসা পাওয়া সম্ভব।

EB-2 ভিসা: আপনি যদি কোনো উচ্চতর বিষয়ে দক্ষ হন, তবে এই ভিসা সহজেই পেতে পারেন। তবে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে, সেটি হলো আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির অফার লেটার (Job Offer Letter) আপনার থাকতে হবে।

EB-3 ভিসা: এই ক্যাটাগরিতে ভিসা পেতে হলে আপনাকে পেশাগতভাবে দক্ষ বা একজন অভিজ্ঞ কর্মী হতে হবে। দক্ষতার পাশাপাশি আমেরিকার কোনো সংস্থা থেকে চাকরির অফার লেটার থাকা বাধ্যতামূলক।

EB-4 ভিসা: বিশেষ অভিবাসীদের জন্য আমেরিকা এই ক্যাটাগরিতে ভিসা দেয়। এদের মধ্যে চিকিৎসক, ন্যাটো (NATO) সামরিক বাহিনীর সাবেক কর্মী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, ইরাক ও আফগানিস্তানের ভাষা জানেন এমন ব্যক্তি, এবং ইংরেজি অনুবাদে দক্ষ ব্যক্তিরা অন্যতম।

EB-5 ভিসা: যাঁদের আমেরিকায় গিয়ে উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হওয়ার মতো যথেষ্ট অর্থ থাকে, তাঁরা এই ভিসা পেয়ে থাকেন। আপনার যদি সেই পরিমাণ অর্থ থাকে, তবে আপনিও এই ভিসা সহজে পেয়ে যাবেন। তবে, ভিসা পেতে হলে আপনাকে প্রথমে সেখানে গিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে এবং কমপক্ষে ৫ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করতে হবে।

উপরে বলা ভিসা ক্যাটাগরিগুলোতে আপনি যদি আবেদন করতে চান, তবে আবেদন করার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক। যোগ্যতা ছাড়া আমেরিকার ভিসা পাওয়া যাবে না।

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

প্রশ্ন: আমেরিকা টুরিস্ট ভিসা (B1/B2) বা সাধারণ নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার আবেদন ফি কত?
উত্তর: সাধারণত টুরিস্ট (B1/B2), স্টুডেন্ট (F), ও এক্সচেঞ্জ ভিজিটর (J) সহ বেশিরভাগ নন-পিটিশন ভিত্তিক নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার আবেদন ফি বর্তমানে $185 USD (মার্কিন ডলার)।

প্রশ্ন: কাজের ভিসা (H, L, O, P, Q, R) এবং অন্যান্য পিটিশন ভিত্তিক নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার ফি কত?
উত্তর: পিটিশন ভিত্তিক নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা যেমন টেম্পোরারি ওয়ার্কার (H, L, O, P, Q, R) ক্যাটাগরির ভিসার আবেদন ফি বর্তমানে $205 USD (মার্কিন ডলার)।

প্রশ্ন: ট্রেটি ট্রেডার/ইনভেস্টর ভিসা (E ক্যাটাগরি) এর আবেদন ফি কত?
উত্তর: ট্রেটি ট্রেডার/ইনভেস্টর (E-1, E-2, E-3) ক্যাটাগরির ভিসার আবেদন ফি সাধারণত অন্যান্য নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার চেয়ে বেশি হয় এবং বর্তমানে এটি $315 USD (মার্কিন ডলার)।

প্রশ্ন: আমেরিকায় নার্সদের বেতন কত?
উত্তর: আমেরিকাতে নার্সদের বেতন প্রায় ৬ লক্ষ টাকা থেকে ৮ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে।

প্রশ্ন: আমেরিকায় ডাক্তারের বেতন কত?
উত্তর: আমেরিকাতে ডাক্তারদের বেতন প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা থেকে ২৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

প্রশ্ন: আমেরিকায় ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কত?
উত্তর: আমেরিকাতে ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন প্রায় ৫ লক্ষ টাকা থেকে ১৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

প্রশ্ন: আমেরিকার সর্বোচ্চ বেতন কত?
উত্তর: আমেরিকার সর্বোচ্চ বেতন হলো প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা। এই বেতন সাধারণত প্রতি মাসে সার্জন ডাক্তাররা পেয়ে থাকেন।

শেষ মতামতঃ আমেরিকা ভিসার দাম কত

আমেরিকার জীবন অনেক ব্যয়বহুল। এখানে থাকা-খাওয়া সব মিলিয়ে এক অন্যরকম ব্যয়বহুল জীবন কাটাতে হয়। আমেরিকাতে কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া কাজ শুরু করলে, আমেরিকার নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিম্ন বেতন প্রতি ঘন্টায় ১৫ ডলার থেকে শুরু হয়। এখানে কাজকে ছোট-বড় করে তুলনা করা হয় না।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে 'এক নম্বর', 'দুই নম্বর' কাজ বলে সম্বোধন করা হয়। আমেরিকাতে প্রতিটি কাজকেই সমান চোখে দেখা হয় এবং কাজকে সম্মান দেওয়া হয়। কাজের দক্ষতার সাথে সাথে বেতন বাড়তে থাকে। যেমন: ১৫ ডলার দিয়ে শুরু হলে কিছুদিনের মধ্যে তা ২০ ডলার হয়ে যেতে পারে।

আপনি যদি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা কাজ করেন এবং আপনার বেতন প্রতি ঘণ্টায় ১৫ ডলার হয়, তাহলে সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করে মাসে আপনার স্যালারি প্রায় তিন হাজার ডলার আসবে। তবে এখানে মাসিক কোনো স্যালারি হয় না। এখানে স্যালারি হয় সাপ্তাহিক বা পনেরো দিনে একবার অর্থাৎ সপ্তাহে বা ১৫ দিনে বেতন দেওয়া হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url