এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬ - এস্তোনিয়া বেতন কেমন জানুন
এস্তোনিয়া একটি শেনজেন ভুক্ত দেশ হওয়ায় কাজের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই
কারণে এস্তোনিয়া সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে
কর্মী নিয়োগ দেবে। তাই বাংলাদেশ থেকে যারা এস্তোনিয়া ওয়ার্ক ভিসার মাধ্যমে
যেতে আগ্রহী, তাদের এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানা আবশ্যক।
অনেকেই আছেন যারা এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানতে গুগলে অনুসন্ধান
করেন। এই লেখার মাধ্যমে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য তুলে ধরা হবে। আপনারা যদি সম্পূর্ণ লেখাটি পড়েন, তবে আশা করা যায়
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসাসহ দেশটির আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সন্ধান
পাবেন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬
শেনজেন ভুক্ত দেশ এস্তোনিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়ায় বেশ
কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাই এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য
আবেদন করার আগে অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়ম-কানুন জেনে নিতে হবে। এই নিবন্ধটিতে
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে
উল্লেখ করা হবে।
📌আরো পড়ুন👉ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬
আপনি যদি এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে চান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন
বহির্ভূত দেশের নাগরিক হন, তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে স্বল্প সময়ের জন্য
(সর্বোচ্চ ছয় মাস) ভিসা নিতে হবে। আর এই ভিসার জন্য আপনাকে ডি-ভিসার (D-Visa)
জন্য আবেদন করতে হবে।
মনে রাখা জরুরি, ডি-ভিসার জন্য আবেদন করার আগে আপনার চাকরিদাতাকে অবশ্যই
স্থানীয় পুলিশ এবং বর্ডার গার্ডের অফিসে আপনার সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। এটি
ছাড়া আপনি কখনোই এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন না। আপনি যদি ছয় মাসের
বেশি সময় সেখানে থাকতে চান, তবে অবশ্যই আপনাকে রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন
করতে হবে।
বৈধ রেসিডেন্স পারমিট ছাড়া আপনি ছয় মাসের বেশি এস্তোনিয়ায় থাকতে পারবেন না।
প্রথমে আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। এই
রেসিডেন্স পারমিটের মাধ্যমে আপনি সর্বোচ্চ দুই বছর সেখানে কাজ করার সুযোগ
পাবেন।
সেখানে দুই বছর সন্তোষজনকভাবে কাজ করলে পাঁচ বছরের জন্য রেসিডেন্স পারমিটের
আবেদন করার সুযোগ পাবেন। আর আপনি যদি এস্তোনিয়ায় স্থায়ীভাবে থাকতে চান,
সেক্ষেত্রে এই পাঁচ বছরের রেসিডেন্স পারমিটের ওপর ভিত্তি করে সেখানে
স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ওয়ার্ক পারমিটের ধরন
এস্তোনিয়াতে আপনার কাজের ধরন ও পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো:
- শর্ট-টার্ম ওয়ার্ক পারমিট: এটি সাধারণত স্বল্প সময়ের জন্য দেওয়া হয়, যেমন কোনো বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে।
- লং-টার্ম ওয়ার্ক পারমিট: এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রদান করা হয়, যা সাধারণত এক বছর বা তার বেশি সময়ের হয়ে থাকে।
- ব্লু কার্ড (Blue Card): উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের জন্য এই ভিসা, যার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বেতনের একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করতে হয়।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ
করতে হবে, যেমন:
- এস্তোনিয়ার কোনো কোম্পানি থেকে চাকরির প্রস্তাবপত্র থাকা চাই।
- আপনার পদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
- কিছু ক্ষেত্রে এস্তোনিয়ান বা ইংরেজি ভাষায় আপনার দক্ষতা থাকতে হতে পারে।
- এস্তোনিয়ায় থাকাকালীন সময়ের জন্য আপনার স্বাস্থ্য বীমা থাকতে হবে।
- আবেদনের জন্য আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?
অনেকেরই প্রশ্ন থাকে, এস্তোনিয়া কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কী কী
নথিপত্রের প্রয়োজন হয়। নিচে এস্তোনিয়া ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়
কাগজপত্রগুলো তুলে ধরা হলো:
📌আরো পড়ুন👉ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কি কি লাগে?
- ছয় মাস মেয়াদ সম্পন্ন একটি পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি কার্ড) ফটোকপি লাগবে।
- আবেদনকারী ব্যক্তির পাসপোর্ট আকারের ৪ কপি ছবি লাগবে।
- ইন্স্যুরেন্স পলিসি বা বীমা থাকতে হবে।
- পূর্বে অন্য কোনো দেশে ভ্রমণ করেছেন কিনা, তার প্রমাণপত্র লাগবে।
- বিমান টিকিটের ফটোকপি লাগবে।
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হলে এই নথিগুলো অবশ্যই প্রস্তুত রাখতে
হবে। এছাড়াও, যদি অতিরিক্ত কোনো নথিপত্রের প্রয়োজন হয়, তবে তা কনস্যুলেটের
মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
এস্তোনিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে হলে আপনাকে দূতাবাসের মাধ্যমে
আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত অনেক এজেন্সি রয়েছে, যাদের মাধ্যমেও
এস্তোনিয়া ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য সাধারণত ৭
থেকে ১০ লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে।
তবে কেউ যদি দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেস করেন, তাহলে
তার খরচ প্রায় ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মতো পড়তে পারে। তবে জেনে রাখা ভালো,
বর্তমানে এস্তোনিয়া ভিসা ফি হিসেবে প্রায় ১২০ ইউরোর মতো নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে এস্তোনিয়ায় লোকবল নিয়োগ চলছে।
বিভিন্ন দেশ থেকে এই দেশে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, ফলে অনেকে উন্নত জীবনযাপন
এবং মোটামুটি ভালো বেতনের আশায় এস্তোনিয়ায় যেতে আগ্রহী হচ্ছে।
আপনি যদি সরকারিভাবে বৈধ উপায়ে যেতে চান, তবে ভালো একটি রিক্রুটিং এজেন্সির
মাধ্যমে যাওয়ার চেষ্টা করুন, যাদের RL নম্বর আছে এবং যারা বাংলাদেশ নির্ধারিত
লাইসেন্স দ্বারা পরিচালিত। এতে আপনার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
এস্তোনিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে, ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার
ধাপগুলো আপনার খুব ভালোভাবে জানা প্রয়োজন। তাহলে এস্তোনিয়ায় আসা আপনার জন্য
সহজ হবে এবং আপনি সঠিকভাবে আসতে পারবেন। উন্নত জীবনযাপনের জন্য এস্তোনিয়া
আপনার জন্য অন্যতম একটি দেশ হতে পারে, যেখানে ভিসা পাওয়ার হার ৯৮%।
একই হারে বাংলাদেশিদেরও ভিসা দেওয়া হচ্ছে। এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার
প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে মাত্র ৩০ দিন সময় লাগে। এস্তোনিয়া ওয়ার্ক ভিসার ফি হলো
১০০ ইউরো। বর্তমানে ১০০ জন আবেদনকারীর মধ্যে প্রায় ৯৮ জনকেই এস্তোনিয়া ভিসা
দিচ্ছে, যা বাংলাদেশি আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই আপনি যদি এস্তোনিয়া
আসার সিদ্ধান্ত নেন, তবে নিশ্চিন্তে আবেদন করতে পারেন।
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা কিছুটা জটিল মনে হতে পারে, তবে
সঠিক নির্দেশিকা মেনে চললে তা সহজ হয়ে যাবে। ধাপগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
- অনলাইনে আবেদন: প্রথমে এস্তোনিয়ান পুলিশ অ্যান্ড বর্ডার গার্ড বোর্ডের (Estonian Police and Border Guard Board) ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদনপত্রটি অনলাইনে পূরণ করতে হবে।
- কাগজপত্র আপলোড: প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
- ফি পরিশোধ: ক্রেডিট কার্ড বা অন্য কোনো অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে।
- সাক্ষাৎকার: কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিসা সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হতে পারে।
- সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা: আপনার আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করার পর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
সঠিকভাবে নিয়ম অনুসরণ করে ধাপে ধাপে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে আপনি খুব
সহজে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন।
এস্তোনিয়া ভিসা ফর বাংলাদেশী
যারা বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া যেতে চান, তাদের জন্য এস্তোনিয়া ভিসা কেমন
হবে—এই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে আপনারা বাংলাদেশে অবস্থিত এস্তোনিয়া ভিসা
এজেন্সি বা অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
এছাড়াও, এস্তোনিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে
https://visathing.com/estonia.com এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সকল তথ্য জেনে নিতে
পারবেন। আপনি বাংলাদেশ থেকে চাইলে অনলাইনে খুব সহজে আবেদন করে কম খরচে
এস্তোনিয়াতে যেতে পারবেন।
এজন্য আপনাকে চাকরির ওয়েবসাইটে গিয়ে কাজ খুঁজে আবেদন করতে হবে। আপনার
আবেদনপত্রে সকল তথ্য সঠিক থাকলে আপনি খুব সহজে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন
এবং এরপর দূতাবাস বা অ্যাম্বাসির প্রক্রিয়া শেষ করে অল্প খরচে এস্তোনিয়াতে
যেতে পারবেন।
এছাড়াও বাংলাদেশে অসংখ্য রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে, যারা কম খরচে এস্তোনিয়াতে
লোক পাঠিয়ে থাকে। অবশ্যই রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স আছে কিনা, তা যাচাই করে
নিবেন। এস্তোনিয়াতে কয়েক ধরনের ভিসা ব্যবহার করে খুব সহজে যাওয়া যায়।
বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়াতে যেতে হলে টুরিস্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং
স্টুডেন্ট ভিসা—এই ভিসাগুলোর মাধ্যমে যেতে পারবেন।
এই ভিসাগুলো ব্যবহার করে ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়াতে খুব সহজে যাওয়া সম্ভব।
এস্তোনিয়া হতে পারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আদর্শ দেশ। দেশটির
সরকার তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পুরোপুরি আন্তর্জাতিক করে তোলার চেষ্টা করছে
এবং এই কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছে।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজিতে ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি, ডক্টরাল এবং
শর্ট কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া এস্তোনিয়াতে কাজের অনেক সুযোগ-সুবিধা
রয়েছে, যার কারণে প্রবাসীদের জন্য এই দেশটি অনেক পছন্দের। আর বাংলাদেশীদের
জন্য এটি এস্তোনিয়া যাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ হতে পারে।
এস্তোনিয়া বেতন কেমন
এই বিষয়টি মূলত ভিসার প্রকারভেদের ওপর নির্ভর করে। আপনি কোন ভিসায় এবং কী
ধরনের কাজের মাধ্যমে যাবেন, তার ওপর বেতন নির্ভর করে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার
অধীনে বিভিন্ন কাজের ভিসা সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
📌আরো পড়ুন👉লিথুনিয়া কাজের বেতন কত জানুন
তাই কোন কাজের বেতন কেমন হবে, তা সহজেই বুঝতে পারছেন। যেমন: ইঞ্জিনিয়ারিং ভিসা
এবং কৃষি ভিসার চাহিদা এস্তোনিয়ায় সবচেয়ে বেশি এবং বেতনও অনেক বেশি।
এই ধরনের ভিসাগুলোতে যদি ভালো অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে প্রতি মাসে বেতন বাংলাদেশি
টাকায় এক লক্ষ আশি হাজার টাকা থেকে শুরু করে তিন লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।
অন্যদিকে, ক্লিনার ভিসা বা গার্মেন্টস ভিসার চাহিদা থাকলেও তাতে খুব একটা বেশি
বেতন পাওয়া যায় না।
এর পরেও, এই ধরনের ভিসাগুলোতে এস্তোনিয়া সর্বনিম্ন বেতন ৫০ হাজার টাকা থেকে
শুরু করে ৮০ হাজার টাকার মতো দিয়ে থাকে। এস্তোনিয়াতে যারা নির্মাণ কাজ করেন,
তারা মাসে ৮০০ থেকে ১,২০০ ইউরো আয় করেন। আর যারা বাসা-বাড়ি সহ অন্যান্য কাজ
করেন, তারা প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ৯০০ ইউরো বেতন পান।
আবার, যারা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ওয়েব ডেভেলপার, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
এবং প্রোগ্রামার, তারা প্রতি মাসে ১,০০০ থেকে ১,৫০০ ইউরো পর্যন্ত বেতন পান।
এছাড়া, যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ভালো এবং কোনো কাজের বিষয়ে ভালো দক্ষতা আছে,
তারা এস্তোনিয়াতে গিয়ে বেশি টাকা আয় করতে পারেন। এ থেকে বোঝা যায় যে, দক্ষ
কর্মীদের চাহিদা এস্তোনিয়াতে অনেক বেশি।
এস্তোনিয়া ভিসার দাম ২০২৬
বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া যাওয়া সম্ভব।
এস্তোনিয়া ভিসার দাম সাধারণত ভিসার প্রকারভেদের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
যেমন:
- এস্তোনিয়া ড্রাইভিং ভিসার খরচ ন্যূনতম প্রায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা।
- এস্তোনিয়া ক্লিনার ভিসার খরচ ন্যূনতম প্রায় ৪ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
- এছাড়া, এস্তোনিয়া কোম্পানি ভিসার খরচ ন্যূনতম প্রায় ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
তবে, ভিসা তৈরির প্রক্রিয়া এবং সময়ের ওপর নির্ভর করে এস্তোনিয়া ভিসার দামে
ন্যূনতম প্রায় ৪০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কম বা বেশি হতে পারে।
এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা ২০২৬
উপরে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য বিস্তারিতভাবে
উল্লেখ করা হয়েছে। এই অংশের নিবন্ধে এস্তোনিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা সংক্রান্ত
বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো। তাই এস্তোনিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা সম্পর্কিত
বিস্তারিত তথ্য জানতে মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
📌আরো পড়ুন👉সুইডেন টুরিস্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
উন্নত প্রযুক্তি এবং মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে প্রতি বছর বিভিন্ন
দেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক মানুষ এস্তোনিয়া ভ্রমণ করতে যায়। তাই আপনিও চাইলে
এস্তোনিয়া ঘুরে আসতে পারেন। তবে এস্তোনিয়া যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে ভিসা
নিতে হবে।
ফ্রেশার হিসেবে আপনি এস্তোনিয়ার ভিসা পাবেন না। এস্তোনিয়ার ভিসা পেতে হলে
আপনাকে অবশ্যই পূর্বে কোনো শেনজেন ভুক্ত দেশ ভ্রমণ করতে হবে। যদি আপনি পূর্বে
শেনজেন ভুক্ত কোনো দেশ ভ্রমণ করে থাকেন, তবেই আপনি এস্তোনিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা
পাবেন, অন্যথায় নয়।
আর বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ভারতের
দিল্লিতে অবস্থিত এস্তোনিয়া দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। যদিও বাংলাদেশে
এস্তোনিয়ার কনস্যুলেট রয়েছে, তবে এর মাধ্যমে আপনি ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন
করতে পারবেন না।
ভ্রমণের জন্য এস্তোনিয়া একটি জনপ্রিয় দেশ। বর্তমানে একজন বাংলাদেশী নাগরিক
ট্যুরিস্ট ভিসার সাহায্যে ৯০ দিন পর্যন্ত এস্তোনিয়া ভ্রমণ করতে পারেন।
বর্তমানে এস্তোনিয়া ট্যুরিস্ট ভিসার খরচ সর্বনিম্ন প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার
টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার
টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এস্তোনিয়া ভিজিট ভিসা ২০২৬
এস্তোনিয়া ভিজিট ভিসার মাধ্যমে ৯০ দিন পর্যন্ত পরিবার নিয়ে অথবা ব্যবসায়িক
উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা যায়। তবে মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করার মাধ্যমে এই
ভিসার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব।
বর্তমানে এজেন্সির মাধ্যমে এস্তোনিয়া ভিজিট ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন প্রায় ২
লক্ষ ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা
পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৬
অনেকেই ইউরোপিয়ান দেশ এস্তোনিয়ায় পড়াশোনা করার জন্য যেতে আগ্রহী হন।
এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত বা ক্রাইটেরিয়া রয়েছে,
সেগুলো পূরণ করতে পারলে আপনিও এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পেতে পারেন।
এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসার বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
📌আরো পড়ুন👉সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
যেমন: পড়ালেখা শেষ করার পর আপনি সেখানে চাকরি খোঁজার জন্য ছয় মাস সময় পাবেন।
পাঁচ বছর সেখানে বসবাস করলে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর
যদি আপনি আট বছর ভালোভাবে সেখানে বসবাস করতে পারেন, আপনার একটি স্থায়ী চাকরি
থাকে এবং আপনি যদি এস্তোনিয়ান ভাষা আয়ত্ত করতে পারেন, তাহলে এস্তোনিয়ার
নাগরিক হওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
যাই হোক, আপনি কিভাবে এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, তা
নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো। নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করলে
আশা করা যায়, আপনি এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন।
এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র
জমা দিতে হবে:
- পাসপোর্ট ও সদ্য তোলা ছবি
- মার্কশিট সহ সকল সনদপত্র
- IELTS স্কোরের সনদপত্র।
- এডমিশন লেটার
- ভিসা আবেদন ফর্ম ও টেম্পোরারী রেসিডেন্স আবেদন ফর্ম
উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র সহকারে আপনাকে দিল্লিতে অবস্থিত এস্তোনিয়ান দূতাবাসে
যোগাযোগ করতে হবে। দিল্লির এস্তোনিয়া দূতাবাসের ঠিকানা নিচে দেওয়া হলোঃ
- C15, Malcha Marg, Chanakyapuri
- New Delhi, 110 021, India
- Tel +91 11 4948 8650 । Tel (+372) 613 4850 (calls from Estonia)
- Fax +91 11 4948 8651 । Email: Embassy.New-Delhi@mfa.ee
- Visa queries: consul.delhi@mfa.ee
- Website: http://www.newdelhi.vm.ee
এস্তোনিয়া কোন কোন কাজের চাহিদা বেশি
এস্তোনিয়া আকারে ছোট একটি দেশ হলেও এটি যে একটি উন্নয়নশীল দেশ, তা বলার
অপেক্ষা রাখে না। দিন দিন এস্তোনিয়া এত দ্রুত উন্নতি করছে যে এখানকার বেশিরভাগ
কাজ আধুনিক পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। সবকিছুই ডিজিটালাইজড। এখানে খাতা-কলমের ব্যবহার
প্রায় হয় না বললেই চলে।
এই উন্নত দেশ এস্তোনিয়াতে প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে। ভালো কাজের চাহিদা রয়েছে
এমন কয়েকটি ক্ষেত্র হলো:
📌আরো পড়ুন👉সুইডেনে কোন কাজের চাহিদা বেশি ২০২৬
- আইটি সেক্টর
- ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কার
- কন্সট্রাকশন ওয়ার্কার
- হোটেল বয়
- রেস্টুরেন্ট
- ক্লিনার
- এগ্রিকালচার
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে দক্ষ কর্মীদের জন্য। এই চাহিদা কৃষি খাতেও
হতে পারে, আবার আইটি সেক্টরেও হতে পারে। এই দুটি ক্ষেত্রেই এস্তোনিয়াতে কাজের
চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এখানে প্রচলিত মুদ্রার নাম ইউরো।
বাংলাদেশে এস্তোনিয়া দূতাবাস
বাংলাদেশে এস্তোনিয়া কনস্যুলেট অফিস রয়েছে, তবে অনেকেই এই বিষয়ে জানেন না।
যারা বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়ার ভিসা নিতে চান, তারা চাইলে সরাসরি এই
কনস্যুলেটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশে এস্তোনিয়া দূতাবাসের ঠিকানা
হলো: 9th Floor, Safura Tower, 20 Kemal Ataturk Ave, Dhaka 1213।
এস্তোনিয়া দেশ কেমন
এস্তোনিয়া হলো ইউরোপের একটি রাষ্ট্র, যা ডিজিটাল অগ্রগতির জন্য পরিচিত।
এস্তোনিয়ায় ই-গভর্নেন্স, মুক্ত ইন্টারনেট এবং উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা বিদ্যমান।
এছাড়া এস্তোনিয়া অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং খুবই উন্নত একটি দেশ। তাই
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা
সম্ভব।
আপনার মনে যদি এমন প্রশ্ন জাগে যে, এস্তোনিয়া দেশটি কেমন? তবে এই প্রশ্নের এক
কথায় উত্তর হলো: এই দেশটি ভালো। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো জোটভুক্ত এই ছোট
দেশটি উত্তর-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত। এই দেশটিতে মাত্র ১২ লক্ষ মানুষের বসবাস।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত এই দেশটিতে ই-রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ রয়েছে। দেশটি
ছোট হলেও এটি খুবই উন্নত এবং সুন্দর একটি দেশ। আপনার যদি দক্ষতা থাকে, তবে আপনি
কাজের জন্য এস্তোনিয়া যেতে পারেন। বিশেষ করে আপনার যদি EU Blue Card থাকে,
সেক্ষেত্রে আপনি এস্তোনিয়ায় খুবই ভালো মানের চাকরি পাবেন।
সাধারণ প্রশ্ন উত্তর (FAQs)
প্রশ্ন: এস্তোনিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রসেসিং টাইম সাধারণত কত দিন?
উত্তর: এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রসেসিং টাইম সাধারণত প্রায় ৩০
দিন।
প্রশ্ন: এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদনের আগে নিয়োগকর্তার ভূমিকা
কী?
উত্তর: আবেদন করার আগে আপনার নিয়োগকর্তাকে অবশ্যই স্থানীয় পুলিশ এবং
বর্ডার গার্ডের অফিসে আপনার ব্যাপারে তথ্য (রেজিস্ট্রেশন) প্রদান করতে হবে।
প্রশ্ন: এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদনের প্রথম ধাপ কী?
উত্তর: ইউরোপীয় ইউনিয়ন বহির্ভূত দেশের নাগরিক হলে প্রথমে শর্ট-টার্ম (৬
মাস পর্যন্ত) ডি-ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
প্রশ্ন: এস্তোনিয়ায় কাজ করার জন্য কী ধরনের ভিসা দরকার?
উত্তর: সাধারণত “D-Type Long-Stay Visa” অথবা “Temporary Residence Permit for
Employment” প্রয়োজন হয়, যা কাজের চুক্তির উপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায় কি?
উত্তর: হ্যাঁ, বাংলাদেশ থেকে আবেদন করা যায়। তবে বৈধ চাকরির অফার লেটার ও
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া ভিসা পাওয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: এস্তোনিয়া কি সেনজেন দেশ
উত্তর: হ্যাঁ, এস্তোনিয়া একটি শেনজেন (Schengen) ভুক্ত দেশ। এস্তোনিয়া
২০০৭ সাল থেকে শেনজেন এলাকায় যুক্ত হয়েছে। এর মানে হলো, আপনি যদি শেনজেন ভিসা
নিয়ে এস্তোনিয়াতে প্রবেশ করেন, তবে আপনি শেনজেন অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোতেও
কোনো অভ্যন্তরীণ সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবেন।
প্রশ্ন: এস্তোনিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
উত্তর: এস্তোনিয়া ১ টাকা সমান ১৪১.০০ বাংলাদেশি টাকা।
লেখকের শেষ মতামত
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কাজের ক্ষেত্রে মূল্যবান অভিজ্ঞতা এবং
আন্তর্জাতিক কর্মসংস্থান দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে
এস্তোনিয়া ভিসা তৈরির প্রক্রিয়া পূর্বের তুলনায় কিছুটা জটিল হওয়ায় অসাধু
এজেন্সি ও কর্মকর্তা থেকে সর্বদা সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ধন্যবাদ।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url