লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬ - লিথুনিয়া বেতন কত ও খরচ জানুন

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা - লিথুনিয়া, ইউরোপ মহাদেশের অন্যতম সুন্দর ও উন্নত রাষ্ট্র, সম্প্রতি অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বাংলাদেশের বহু মানুষ বর্তমানে লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দেশটিতে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী।
লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
বর্তমানে অনলাইনেই লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সহ অন্যান্য ভিসার জন্য আবেদন করা সম্ভব। তাই আজকের এই পোষ্টে লেখায় লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে, লিথুনিয়ায় বেতন কত এবং এই সংক্রান্ত আরো কিছু বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করা হবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

সাধারণত, লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলতে দেশটির কাজের ভিসাকেই বোঝানো হয়। বর্তমানে কম খরচে সরকারিভাবে লিথুনিয়া যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সরকারি প্রক্রিয়ায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরির জন্য ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
বর্তমানে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে খুব সহজে আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশ সরকার যে এজেন্সিগুলোকে অনুমোদন দিয়েছে, আপনি সেই এজেন্সিগুলোতে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে পারেন।

এভাবে, আপনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে খুব সহজে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে খরচ হয় ১২০ ইউরো থেকে ১৫০ ইউরো, যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা থেকে ১৯ হাজার টাকা।

বাংলাদেশের হাজারো মানুষের স্বপ্ন থাকে ইউরোপ মহাদেশের মধ্যে লিথুনিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া। এর কারণ হলো, ইউরোপ মহাদেশের অন্যান্য দেশের চেয়ে লিথুনিয়া অনেক উন্নত। এর ফলস্বরূপ, লিথুনিয়াতে সকল ধরনের কাজকর্মে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। এছাড়াও, অন্যান্য দেশের তুলনায় লিথুনিয়াতে অল্প পরিশ্রমেও প্রতি মাসে ভালো পারিশ্রমিক লাভ করা সম্ভব।

প্রতি বছরই লিথুনিয়া বিভিন্ন দেশ থেকে নানা ধরনের কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। এক্ষেত্রে, সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেলে খুব অল্প খরচে লিথুনিয়া যাওয়া সম্ভব হয়।

লিথুনিয়ার ভিসার সাকসেস রেট ৯৮.৭%, অর্থাৎ, ১০০০ জন লোক ভিসার জন্য আবেদন করলে, মাত্র ১৩ জন ভিসা পাবে না এবং বাকি ৯৮৭ জন ভিসা পাবেন।

লিথুনিয়াতে মূলত ৪ ধরণের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হয়ে থাকে, যেমন:
  • EU BLUE CARD WORK PERMIT
  • INTRA COMPANY TRANSFER WORK VISA
  • WORK PERMIT FOR EMPLOYMENT IN LITHUANIA
  • SEASONAL WORK VISA
লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম সাধারণত ৬ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে, এজেন্সিতে যদি আপনার চেনাজানা লোক থাকে, সেক্ষেত্রে ৫ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায়ও এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করা সম্ভব।

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যারা লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তাদের একটি বড় অংশের কাছেই আবেদন করার সঠিক নিয়ম অজানা। তবে, বর্তমান যুগে আপনি অনলাইনেই ঘরে বসে যেকোনো কাজ করতে পারেন। ঠিক একইভাবে, আপনি আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করে ঘরে বসেই লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বর্তমানে লিথুনিয়ার কাজের ভিসার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। উপরন্তু, লিথুনিয়া সরকার সম্প্রতি নতুন করে বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

আপনি যদি লিথুনিয়ার সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করতে চান, তাহলে প্রথমে Google Chrome এ প্রবেশ করতে হবে। এরপর সার্চ অপশনে "lithuania visa application" লিখে সার্চ করলেই আপনি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটি পেয়ে যাবেন।

সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনাকে ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করে নিতে হবে। এরপর ফর্মটিতে সব ধরনের সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করে বাংলাদেশের কোনো অনুমোদিত এজেন্সিতে আবেদন ফরমটি জমা দিন এবং লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সম্পূর্ণ টাকা জমা দিলেই আপনি লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন।

লিথুনিয়া কাজের ভিসা দাম কত

ইউরোপ মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি মানুষ কাজের জন্য লিথুনিয়াতে যাচ্ছেন। এর প্রধান কারণ হলো, ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় লিথুনিয়ায় কাজের মান উন্নত এবং প্রতি মাসে ভালো অঙ্কের টাকা ইনকাম করা সম্ভব। 
তবে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার আগে অনেকেই জানতে চান যে লিথুনিয়া কাজের ভিসার দাম কত বা ভিসা করতে কত টাকা খরচ হয়। সাধারণত, অন্যান্য বড় দেশের তুলনায় লিথুনিয়ার কাজের ভিসা বা অন্যান্য ভিসার খরচ অনেক কম।
লিথুনিয়া কাজের ভিসা দাম কত
তবে, বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করতে কিছুটা বেশি খরচ হতে পারে। কিন্তু, আপনি সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক, লিথুনিয়া কাজের ভিসার দাম কত বা কাজের ভিসা করতে কত টাকা খরচ হয়:

লিথুনিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে চাইলে আবেদন ফি বাবদ ১২০ ইউরো দিতে হবে। বাংলাদেশী টাকায় হিসেব করলে এই পরিমাণটি প্রায় ১৮ হাজার টাকার মতো। বর্তমানে লিথুনিয়া কাজের ভিসার মোট খরচ হচ্ছে ৭ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা।

তবে, সময়ের সাথে সাথে এই খরচ কম-বেশি হতে পারে। সর্বমোট ৭ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা খরচ হলেই আপনি লিথুনিয়া কাজের ভিসায় যেতে পারবেন।

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

লিথুনিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। নিচে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো ছাড়া লিথুনিয়া কাজের ভিসার প্রসেসিং করা যায় না:
  • পাসপোর্ট
  • আবেদনকারী সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ভোটার আইডি কার্ড
  • ইউরোপিয়ান স্টাইলে সিভি
  • আইইএলটিএস স্কোর (যদি লাগে)
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
  • স্কিল সার্টিফিকেট
  • কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
  • কাজের অফার লেটার
  • ওয়ার্ক পারমিট
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন ফরম।

লিথুনিয়া ভিসার দাম কত

লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানার পাশাপাশি অনেকেই ভিসার দাম কত সে বিষয়ে জানতে আগ্রহী হন। লিথুনিয়াতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে।

সাধারণত, ভিসার দাম ভিসা ক্যাটাগরির ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ, আপনি কোন প্রকারের ভিসায় দেশটিতে যেতে চান, তার ওপরই খরচ নির্ধারিত হয়। নিচে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসার দাম সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
  • কোম্পানি ভিসা: এই ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে খরচ হবে ৪ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা।
  • স্টুডেন্ট ভিসা: স্টুডেন্ট ভিসায় লিথুনিয়া যাওয়ার জন্য খরচ হবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা।
  • ট্যুরিস্ট বা ভ্রমণ ভিসা: এই ভিসার জন্য দাম পড়বে ২ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা।
  • ফ্যামিলি ভিসা: পরিবার নিয়ে দেশটিতে পাড়ি জমাতে চাইলে ভিসার খরচ হবে ২ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা।
  • ড্রাইভিং ভিসা: ড্রাইভিং ভিসায় লিথুনিয়া যেতে চাইলে ৪ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হবে।

লিথুনিয়া বেতন কত

বর্তমানে বাংলাদেশের হাজারো মানুষ লিথুনিয়াতে কাজের জন্য যেতে আগ্রহী, কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশেরই লিথুনিয়ায় বেতন কত তা জানার আগ্রহ রয়েছে। এজন্য অনেকেই অনলাইনে এই বিষয়ে অনুসন্ধান করেন।
লিথুনিয়ায় বেতন মূলত আপনার কাজের ক্যাটাগরি এবং কাজের অভিজ্ঞতার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে। এছাড়াও, লিথুনিয়াতে ঘন্টার ওপর ভিত্তি করে বেতন অর্থাৎ ইউরো প্রদান করা হয়। আপনি যদি লিথুনিয়ায় নতুন শ্রমিক হয়ে থাকেন, তবে প্রতি মাসে ৫০০ ইউরো থেকে ৬০০ ইউরো পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা।

কিন্তু আপনার কাজের অভিজ্ঞতা যদি ভালো থাকে, তাহলে প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পর্যন্তও ইনকাম করতে পারবেন।

যদি আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকে, তবে আপনার বেতন আরও বেশি হবে। সেক্ষেত্রে আপনি মাসে ৯০ হাজার থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা বা তার চেয়েও বেশি বেতন পেতে পারেন। আবার, অনেকের যদি ট্রাক ড্রাইভার অথবা ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসেবে কাজের দক্ষতা থাকে, তবে এই কাজগুলো করতে পারলে মাসে ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন।

এই দেশটিতে বিক্রয় কর্মী এবং সেলসম্যানের অনেক চাহিদা রয়েছে। এজন্য বাংলাদেশের অনেক মানুষ এদেশে কাজের জন্য গিয়ে থাকেন। যদিও এতে ভালো বেতন পাওয়া যায়, তবে ওভারটাইম কম থাকার কারণে অন্যান্য কাজের বেতনের তুলনায় এটি কিছুটা কম হতে পারে।

তবে, আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে এবং অল্প সময়ের মধ্যে এ দেশের ভাষা আয়ত্ত করতে পারলে আপনার কাজের অভাব হবে না। সেক্ষেত্রে কাজ করলে প্রতি মাসে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার মতো বেতন পেতে পারেন। তবে, বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন রকম বেতন দিয়ে থাকে।

আপনি যদি ফুড প্যাকেজিং বা ফ্যাক্টরির বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে যেতে চান, সেক্ষেত্রেও কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে বেতন কমবেশি হয়। একজন ফ্যাক্টরির কর্মী হিসেবে কাজ করলে আপনার বেতন ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।

আপনি যদি ফুড ডেলিভারির ম্যান হিসেবে কাজ করতে চান, সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন। এই কাজটি পূর্ণকালীন এবং অনেকেই পার্ট-টাইম হিসেবেও করে থাকেন। এর পাশাপাশি অন্য কোনো কাজ করলে, সব মিলিয়ে আপনি ১ লক্ষ টাকার উপরে অতিরিক্ত বেতনও পেতে পারেন।

এই দেশে কৃষি কাজের অনেক মর্যাদা এবং শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। তাই বাংলাদেশের বহু শ্রমিক এই কাজের জন্য সেখানে যান। এক্ষেত্রে তারা প্রতি ঘন্টায় ৬ থেকে ১০ ইউরোর মতো বেতন দিয়ে থাকে। যদি আপনার অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে এর চেয়েও আরও বেশি বেতন পাবেন।

লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বর্তমানে বাংলাদেশের হাজারো মানুষ লিথুনিয়াতে কাজের জন্য যেতে আগ্রহী, কিন্তু তাদের অনেকেরই লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা জানা নেই। আপনারা সবাই জানেন যে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হলে ভিসা খরচ, বিমান ভাড়া এবং আরো কিছু খরচ বহন করতে হয়। তবে আপনারা যদি সরকারিভাবে লিথুনিয়ার কোনো ভিসা পেয়ে যান, তবে খুব অল্প টাকায় লিথুনিয়া যেতে পারবেন।
লিথুনিয়া যাওয়ার জন্য আপনি কয়েকটি ক্যাটাগরির ভিসা পাবেন। তবে, ভিসার দাম ভিসার ক্যাটাগরির ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে, কারণ একেক রকম ভিসার জন্য একেক রকম দাম নির্ধারণ করা থাকে। আপনি যদি সরকারিভাবে লিথুনিয়ার যেকোনো ভিসা পেয়ে থাকেন, তাহলে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যেই লিথুনিয়া যেতে পারবেন।

এছাড়াও, যদি বাংলাদেশের কোনো এজেন্সির মাধ্যমে লিথুনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে চান, তাহলে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অন্যদিকে, আপনারা যদি লিথুনিয়া কাজের ভিসা করতে চান, তাহলে আপনাদের মোট খরচ ৭ লক্ষ থেকে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পড়বে। তবে, আপনাদের সব সময় চেষ্টা করা উচিত লিথুনিয়ার যেকোনো ভিসা সরকারিভাবে তৈরি করে নেওয়ার।

লিথুনিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি

বাংলাদেশের হাজারো মানুষ লিথুনিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাইছেন, কিন্তু তাদের অনেকেরই লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে ধারণা নেই। বর্তমানে লিথুনিয়াতে কয়েক ধরনের কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া, লিথুনিয়ায় কাজের চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিকের সংখ্যাও অনেক কম।
লিথুনিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
এজন্য প্রতি বছর লিথুনিয়া সরকার বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। আপনারা যারা লিথুনিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাচ্ছেন, তারা অবশ্যই লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জেনে নিবেন। কারণ লিথুনিয়াতে কাজের ওপর ভিত্তি করে বেতন দেওয়া হয়।

এছাড়াও, আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং কাজের ক্যাটাগরি অনুযায়ী বেতন কমবেশি হতে পারে, যা সম্পূর্ণ আপনার ওপর নির্ভর করে। তাই, লিথুনিয়ায় কোন কাজের চাহিদা বেশি, সেগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:
  • কনস্ট্রাকশনের কাজ।
  • ইলেকট্রিক্যালের কাজ।
  • ওয়েল্ডারের কাজ।
  • ড্রাইভিং এর কাজ।
  • রেস্টুরেন্ট এর কাজ।
  • ক্লিনারের কাজ।
  • ফ্যাক্টরির কাজ ইত্যাদি।
১. কনস্ট্রাকশনের কাজঃ যেহেতু এই দেশটি উন্নত রাষ্ট্র, সে ক্ষেত্রে নির্মাণ কাজের জন্য প্রচুর পরিমাণে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কেননা বিভিন্ন আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, রাস্তা, সেতু অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করার জন্য শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে যদি দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি কনস্ট্রাকশন ভিসার মাধ্যমে যেতে পারেন। যেমন কাঠ মিস্ত্রি, প্লাম্বার, পেইন্টার ইত্যাদি কাজের উপর যেতে পারবেন।

২. ইলেকট্রিক্যাল কাজঃ যেহেতু শিল্পকল কারখানা এবং বড় বড় ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ইলেকট্রিক্যাল কাজের চাহিদা আছে, সে ক্ষেত্রে যদি আপনার ইলেকট্রিক্যাল কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি যেতে পারেন। যদি আপনি ইলেকট্রিশিয়ান হয়ে থাকেন অথবা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হন সে ক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা এবং সার্টিফিকেট যদি থাকে তাহলে ভালো জব করতে পারবেন এবং অনেক টাকা বেতন পাবেন।

৩. ওয়েল্ডিং এর কাজঃ যেহেতু বিভিন্ন ধরনের শিল্প কলকারখানা নির্মাণ করার ক্ষেত্রে ওয়েল্ডারের প্রয়োজন আছে, সে ক্ষেত্রে আপনার যদি এই ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি কনস্ট্রাকশন ভিসার উপরে যেতে পারেন।

৪. ড্রাইভিং এর কাজঃ যদি আপনার এই ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি এর উপরে ভিসা করতে পারেন। কারণ এই দেশটিতে এই কাজের অনেক গুরুত্ব রয়েছে এবং ব্যক্তিগত কাজের ক্ষেত্রেই অনেকের ড্রাইভার এর প্রয়োজন হয়। তাই তারা প্রতিবছরে ড্রাইভার নিয়োগ দিয়ে থাকে। বিশেষ করে ট্রাক ড্রাইভার, বাস ড্রাইভার, ডেলিভারি ড্রাইভার ইত্যাদি ধরনের ড্রাইভার এর প্রয়োজন থাকে। তাই ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা যদি থাকে তাহলে আপনি অনেক টাকায় বেতন পাবেন।

৫. রেস্টুরেন্টের কাজঃ এ দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট রয়েছে এবং বিভিন্ন ক্যাফে রয়েছে। যেখানে কর্মীর প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে খাদ্য প্রস্তুত, রান্নাবান্না করার ক্ষেত্রে অথবা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে শেফ, ওয়েটার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে যেতে পারেন।

৬. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজঃ দেশটি যেহেতু উন্নত মানের দেশ সেক্ষেত্রে বিভিন্ন অফিস আদালত বা হোটেল আবাসিক এলাকা ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখার ক্ষেত্রে ক্লিনারের প্রয়োজন হয়। সেই ক্ষেত্রে তারা প্রচুর পরিমাণে লোক নিয়ে থাকে। আপনি যদি এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে হাউস কিপার, অফিস ক্লিনার হোটেল ক্লিনার ইত্যাদি ভিসায় যেতে পারেন।

৭. ফ্যাক্টরির কাজঃ যেহেতু দেশটি শিল্প কলকারখানা এবং অনেক ফ্যাক্টরি রয়েছে। সেখানে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে উৎপাদন লাইনম্যান, প্যাকেজিংয়ের কাজ, কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসার ইত্যাদি শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে আপনি প্রোডাকশন বা কুয়ালিটি অপারেটর হিসেবে যেতে পারেন।

উপরুক্ত এই কাজগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন করে যদি যেতে পারেন তাহলে আপনি অনেক জব পাবেন এবং সে অনুযায়ী ভালো বেতন পাবেন।

বাংলাদেশ থেকে লিথুনিয়া যাওয়ার উপায়

লিথুনিয়া ইউরোপের শেনজেনভুক্ত একটি দেশ। যখন বাংলাদেশ থেকে কেউ লিথুনিয়া যাওয়ার মনস্থির করেন, তখন সর্বপ্রথম জানতে ইচ্ছা করে, লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে। বিভিন্ন ধরনের ভিসার ক্যাটাগরি রয়েছে, আর সেই ভিসাগুলোর জন্য আবার ভিন্ন ভিন্ন রিকোয়ারমেন্ট (প্রয়োজনীয়তা) আছে।

বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের ভিসা নিয়ে ইউরোপের এই দেশে যাওয়া যায়। যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে চান, তবে লিথুনিয়ার যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অফার দেখাতে হবে। এর সাথে আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণেরও প্রয়োজন পড়বে।

কাজের ভিসা নিয়ে দেশটিতে যেতে হলে আপনার কাজের অফার লেটার এবং ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন হবে। আবার, লিথুনিয়ায় ভিজিট ভিসা নিয়ে যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে ট্রাভেল রেকর্ড ও আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে।

আপনি চাইলে নিজেই ভিসা প্রসেসিং করে লিথুনিয়ায় যেতে পারবেন। তবে, কিছু বেসরকারি এজেন্সি আছে, যাদের মাধ্যমে লিথুনিয়া যেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে তারা সম্পূর্ণ কাজটি আপনাকে করে দেবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন আর্থিক প্রতারণা না হয়। তাই, কাজ বুঝে পাওয়ার আগে কখনো অগ্রিম টাকা পরিশোধ করবেন না।

বাংলাদেশ থেকে যারা লিথুনিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশেরই জানা নেই যে বাংলাদেশ থেকে লিথুনিয়া কিভাবে যেতে হয়।

প্রথমত, আপনাকে একটি বৈধ পাসপোর্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর, বাংলাদেশের কোনো এজেন্সির মাধ্যমে লিথুনিয়ার যেকোনো একটি ভিসার জন্য আবেদন করে সেই ভিসাটি তৈরি করে নিতে হবে। আর এই উপায়গুলো অবলম্বন করলে আপনি খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে লিথুনিয়া যেতে পারবেন।

লিথুনিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে?

লিথুয়ানিয়া যাওয়ার জন্য সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ বয়সসীমা নেই, তবে আপনি কী উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তার ওপর নূন্যতম বয়স নির্ভর করে:

ভ্রমণ (ট্যুরিস্ট/শেনজেন ভিসা): যে কোনো বয়সের মানুষ লিথুয়ানিয়া ভ্রমণ করতে পারে। তবে, ১৮ বছরের কম বয়সীদের সাধারণত একা ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয় না এবং ভিসা আবেদনের জন্য তাদের বাবা-মা বা আইনি অভিভাবকের জন্ম সনদ এবং লিখিত সম্মতিপত্র জমা দিতে হয়।

প্রাপ্তবয়স্কদের (১৮ বছর বা তার বেশি) জন্য এই ধরনের কোনো অতিরিক্ত নথির প্রয়োজন হয় না।

কাজ (ওয়ার্ক পারমিট ভিসা): ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো লিথুয়ানিয়াতে কাজ করার জন্য সাধারণত আপনার নূন্যতম ১৮ বছর বয়স হতে হবে, কারণ ১৮ বছর বয়স থেকে আপনি আইনিভাবে চুক্তিবদ্ধ হতে এবং পূর্ণকালীন কাজ করতে সক্ষম হন।

উচ্চশিক্ষা (স্টুডেন্ট ভিসা): উচ্চশিক্ষার জন্য আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে। যেমন: ব্যাচেলর কোর্সের জন্য আপনার HSC বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে, যা সাধারণত ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সে সম্পন্ন হয়। মাস্টার্স কোর্সের জন্য ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রয়োজন।

সংক্ষেপে, প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে একা যাওয়ার জন্য নূন্যতম বয়স হলো ১৮ বছর। শিশু বা অপ্রাপ্তবয়স্করা তাদের বাবা-মা বা অভিভাবকের সাথে যে কোনো বয়সে যেতে পারে, তবে তাদের জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র ও নিয়মাবলী প্রযোজ্য।

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

প্রশ্ন: লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কতদিন লাগে?
উত্তর: আপনি যদি সমস্ত ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দিতে পারেন, তাহলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তৈরি হতে সময় লাগবে ১২ থেকে ২৫ দিন।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে লিথুনিয়ার এম্বেসি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশে অবস্থিত লিথুনিয়ার এম্বাসি (দূতাবাস) কোথায়, তা জানা একান্ত জরুরি। লিথুনিয়ার কনস্যুলেট অফিসের ঠিকানাটি হলো:
  • 822/3 Begum Rokeya Sharani Mirpur,Dhaka 1216.
  • Phone:+8801871001399, 8802902357.
প্রশ্ন: লিথুনিয়া কাজের ভিসার মেয়াদ কতদিন?
উত্তর: লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে জানার পর এবার জানা যাক, দেশটির কাজের ভিসার মেয়াদ কত দিন। আপনি লিথুনিয়ার কাজের ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত পেতে পারেন। তবে, কোনো শ্রমিকের যদি EU BLUE CARD থাকে, তাহলে তিনি ২ বছর পর্যন্ত ভিসার মেয়াদ পেয়ে থাকেন।

প্রশ্ন: লিথুনিয়া কাজের ভিসা প্রসেসিং এর সময় কত?
উত্তর: যদি আপনার সকল ডকুমেন্ট সঠিক থাকে, তাহলে কাজের ভিসার প্রক্রিয়াকরণ ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যায়। আর যদি কোনো প্রকার জটিলতা থাকে, তবে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। সুতরাং, সকল কাগজপত্র নির্ভুল ও সঠিক হওয়া বাঞ্ছনীয়।

শেষ মতামতঃ লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে সে বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি, আপনারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ এবং লিথুনিয়ার বেতন কত সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা লিথুনিয়া সম্পর্কে সকল বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

আশা করছি, আজকের এই লেখাটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। যদি এই আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসে, তাহলে ভবিষ্যতে আরো তথ্য পেতে অবশ্যই আপনারা আমার এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url