সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে - সুইডেনে বেতন কত ২০২৬ (আপডেট তথ্য)
সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে: বর্তমানে জীবিকার সন্ধানে বাংলাদেশের বহু মানুষ
পৃথিবীর নানা দেশে যাচ্ছেন। একটি উন্নত জীবনযাত্রা, উচ্চ আয়ের সুযোগ এবং নিরাপদ
ভবিষ্যতের আশায় আজকের দিনে অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে ইউরোপের
দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন বাংলাদেশি প্রবাসীদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য।
তবে সুইডেন যাওয়ার আগে অনেকে খরচ এবং ভিসা প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধায়
ভোগেন। অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে সুইডেন যেতে আসলে কত টাকা লাগে? আর সেখানে গিয়ে
একজন বাংলাদেশি ঠিক কত টাকা আয় করতে পারে? এই আর্টিকেলটি পড়লে, সুইডেন যেতে কত
টাকা লাগে, সেখানে বেতনের পরিমাণ এবং ভিসা আবেদনের বিস্তারিত প্রক্রিয়া সম্পর্কে
আপনার সব বিভ্রান্তি দূর হবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন একটি শক্তিশালী ও পরিচ্ছন্ন রাষ্ট্র
হিসেবে পরিচিত। উন্নত জীবনযাপন ও ভালো আয়ের সুযোগের সন্ধানে বাংলাদেশের বহু
শ্রমিক এই দেশটি বেছে নিতে চান। কিন্তু তাদের অনেকেরই সঠিক তথ্য জানা থাকে না
সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে।
📌আরো পড়ুন👉
বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে?
মনে রাখবেন, সুইডেন যেতে আপনার কত টাকা লাগবে, তা পুরোপুরি নির্ভর করে আপনার
ভিসার ক্যাটাগরির ওপর। তাই আমরা আপনাদের সুবিধার কথা ভেবে নিচে ভিসার ক্যাটাগরি
অনুযায়ী মোট কত খরচ হবে তা উল্লেখ করা করেছি।
সুইডেন কাজের ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে কাজের ভিসা নিয়ে ইউরোপের দেশ সুইডেনে যেতে আনুমানিক প্রায় ১০ লক্ষ
টাকা থেকে ১২ লক্ষ টাকা লাগে। সুইডেনে কাজ করতে যাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই
ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের অনুমতি নিতে হবে, যা এক ধরনের রেসিডেন্স পারমিট।
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশের কিছু কিছু শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসায়
যেতে আগ্রহী। তবে তাদের অনেকেরই জানা নেই যে এই ভিসার জন্য ঠিক কত টাকা খরচ
হয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে, অন্যান্য ক্যাটাগরির ভিসার তুলনায় সুইডেনে ছাত্র
ভিসার খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
যদি আপনি স্কলারশিপ পেতে সক্ষম হন, তাহলে সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে আপনার
মোটামুটি ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে, যদি আপনি কোনো এজেন্সির
মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ায় যেতে চান, তাহলে খরচ বেড়ে ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা
পর্যন্ত হতে পারে।
সুইডেন টুরিস্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে ভ্রমণ অনেকেরই খুব পছন্দের একটি বিষয়। তাই এখন অনেকেই সুইডেন
ভ্রমণের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসায় সেখানে যেতে চান। তবে সুইডেন ট্যুরিস্ট ভিসায়
যেতে ঠিক কত টাকা লাগে, তা অনেকেরই জানা নেই।
সাধারণত, অন্যান্য ভিসার চেয়ে ট্যুরিস্ট ভিসার খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়। তবে
আপনি যদি বেশি দিনের জন্য ভ্রমণ করতে চান, তাহলে খরচ কিছুটা বেড়ে যাবে।
বর্তমানে সুইডেন ট্যুরিস্ট ভিসায় যেতে আপনার মোটামুটি ৫ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ
টাকা খরচ হতে পারে।
সুইডেন বিজনেস ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
অনেকেই এখন সুইডেনকে ব্যবসার জন্য আদর্শ জায়গা মনে করেন। কারণ, অন্য অনেক
দেশের তুলনায় সুইডেনে ব্যবসার পরিবেশ অনেক ভালো। একারণেই অনেকে বিজনেস ভিসায়
সেখানে যেতে চান।
কিন্তু বেশিরভাগ মানুষেরই জানা থাকে না যে সুইডেন বিজনেস ভিসায় যেতে আসলে কত
টাকা খরচ হয়। এই বিস্তারিত তথ্য জানার জন্যই অনেকে অনলাইনে খোঁজ করেন।
বর্তমানে আপনি যদি সুইডেন বিজনেস ভিসায় যেতে চান, তাহলে আপনার ৩ লক্ষ থেকে ৫
লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
সুইডেন ফ্যামিলি ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে এমন অনেকেই আছেন যারা সুইডেনে পরিবারসহ অর্থাৎ ফ্যামিলি ভিসায় যেতে
চান। এক্ষেত্রে আপনার পরিবারের মোট কতজন সদস্য যাবেন, তার ওপর খরচ নির্ভর
করে।
কারণ খুবই সহজ, আপনার পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি হলে খরচও বেশি হবে, আর সদস্য
সংখ্যা কম হলে খরচ কম হবে। সাধারণভাবে, আপনি যদি সুইডেন ফ্যামিলি ভিসায় যেতে
চান, তাহলে প্রতিটি সদস্যের জন্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
খরচ হতে পারে।
সুইডেনে বেতন কত
অনেকেই বাংলাদেশ থেকে সুইডেনে যেতে চান, কিন্তু হয়তো জানেন না যে সুইডেনে
আসলে কত টাকা বেতন পাওয়া যায়। চলুন, কোন ধরনের কাজে কী পরিমাণ আয় হতে
পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মনে রাখবেন, সুইডেন যেহেতু সেনজেনভুক্ত দেশ, তাই কাজ করার উদ্দেশ্যে সেখানে
যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে হবে। এই ভিসা পেলে আপনি
সুইডেনে বৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের কাজ করার সুযোগ পাবেন।
📌আরো পড়ুন👉 ২০২৬ সালে দুবাই ড্রাইভিং ভিসার বেতন কত জেনে নিন
যদি আপনার কাজের ভালো অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনার বেতনও
স্বাভাবিকভাবেই বেশি হবে। সুইডেনে সাধারণত ঘণ্টা হিসেবে বেতন নির্ধারণ করা
হয়। একজন কর্মী সপ্তাহে প্রায় ৪০ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। তবে আপনি যদি
ওভারটাইম করেন, তাহলে অনেকেই সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্তও কাজ করে থাকেন।
সুইডেনে প্রতি ঘণ্টার গড় বেতন সাধারণত ১২ থেকে ১৩ ডলার হয়ে থাকে, যা
বাংলাদেশি টাকায় ১৩৫০ টাকার মতো (বিনিময় হার অনুযায়ী)। এই হিসাবে, যদি কেউ
মাসে গড়ে ১২০ ঘণ্টা কাজ করেন, তাহলে তার মাসিক বেতন ২ লক্ষ টাকার উপরে হবে।
অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অনেকে মাসে ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্তও বেতন পান।
সুইডেন একটি অত্যন্ত উন্নত রাষ্ট্র এবং সেখানকার মানুষের শিক্ষাগত যোগ্যতা
ও দক্ষতা অনেক বেশি। তাই আপনি যদি অভিজ্ঞতা ছাড়া সেখানে কাজ খুঁজতে যান,
তবে কাজ পাওয়া কঠিন হতে পারে। অভিজ্ঞতা থাকলে, আপনি সহজেই মাসে ২ লক্ষ থেকে
৩ লক্ষ টাকার মতো বেতন পেতে পারেন।
সুইডেনে সাধারণ কাজগুলোর মধ্যে যেমন ড্রাইভিং বা রেস্টুরেন্টের কাজ করে
প্রতি মাসে ২ লক্ষ টাকার উপরে আয় করা সম্ভব। এছাড়া যারা প্লাম্বিংয়ের কাজ
করেন, তারা মাসে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মতো বেতন পান।
তাছাড়া, গ্লাস ফিটিংয়ের কাজেরও সেখানে প্রচুর চাহিদা আছে। এই কাজ জানলে
আপনি মাসে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মতো বেতন পেতে পারেন। আবার অনেকে হোটেল বা
রেস্টুরেন্টের ওয়েটার হিসেবে কাজ করে থাকেন, যেখানেও তারা ১ লক্ষ টাকার
উপরে বেতন পেয়ে থাকেন।
সুইডেন সর্বনিম্ন বেতন কত
সুইডেনে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোনো সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো নেই। তবে
সাধারণত, সুইডেনের নাগরিকরা প্রতি সপ্তাহে চল্লিশ ঘণ্টা কাজের জন্য
সর্বনিম্ন প্রায় ৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন।
যদি আপনি রেগুলার সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত কাজ করেন, তবে তা ওভারটাইম হিসেবে
গণ্য হবে। সাধারণত, সুইডেনের কর্মীরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা পর্যন্ত
ওভারটাইম কাজ করতে পারেন।
সুইডেন কোন কাজের বেতন বেশি
যারা কাজের ভিসা নিয়ে সুইডেনে যেতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই সুইডেনে কোন
কাজের বেতন কেমন, সে সম্পর্কে একটি ধারণা নেওয়া উচিত। সুইডেন একটি
শিল্পোন্নত দেশ হওয়ায়, সেখানে আইনজীবী, ডাক্তার, সিইও, পাইলট,
ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজার, ফাইন্যান্সিয়াল ব্রোকার ইত্যাসি এইসব পেশার
বেতন সবচেয়ে বেশি।
তবে, বাঙালি প্রবাসীদের মধ্যে সাধারণত প্লাম্বিং, ইলেকট্রনিক্স (যেমন
ইলেকট্রিশিয়ান), ড্রাইভিং এবং ফুড ডেলিভারির মতো কাজগুলোতেও বেশ ভালো বেতন
পাওয়া যায়।
সুইডেনে কোন কাজের চাহিদা বেশি ২০২৬
সুইডেনে কাজের সুযোগ আসলে অনেক ক্ষেত্রে বিস্তৃত, তবে কিছু পেশার চাহিদা
অন্যগুলোর চেয়ে বেশি। যারা সুইডেনে কাজ খুঁজতে চান, তাদের জন্য নিজের
দক্ষতা অনুযায়ী সঠিক পেশা বেছে নেওয়া খুব জরুরি। বর্তমানে সুইডেনে
ক্লিনিং, হাউজ কিপিং, ইলেকট্রিশিয়ান, ডেলিভারি ম্যান, ওয়েল্ডিং এবং
প্লাম্বিংয়ের মতো কাজগুলোর বেশ চাহিদা রয়েছে।
📌আরো পড়ুন👉 ২০২৬ সালে পর্তুগালে কোন কাজের চাহিদা বেশি জানুন
বিভিন্ন খাতে দক্ষ কর্মীদের প্রয়োজন থাকায়, আপনার যদি নির্দিষ্ট কাজে
অভিজ্ঞতা এবং সুইডিশ বা ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগের সক্ষমতা থাকে, তবে এই
দেশটিতে কাজ পাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হতে পারে। উন্নত জীবনমান এবং
স্থিতিশীল অর্থনীতির কারণে সুইডেনে কাজের পরিবেশ খুবই আরামদায়ক। আর এই
কারণেই সুইডেন অভিবাসীদের জন্য একটি দারুণ আকর্ষণীয় গন্তব্য।
সুইডেন ভিসা পাওয়ার উপায় ২০২৬
সুইডেনে যেতে হলে অবশ্যই আপনার একটি বৈধ ভিসা লাগবে। আপনার উদ্দেশ্য
অনুযায়ী তা পড়াশোনা হোক, ভ্রমণ হোক বা কাজ আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসা,
ট্যুরিস্ট ভিসা অথবা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
প্রথমে ভিসা ক্যাটাগরি ঠিক করার পর আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে
হবে।
মনে রাখবেন, ভিসার ধরনের ওপর নির্ভর করে কাগজপত্রের তালিকা সামান্য ভিন্ন
হতে পারে। আবেদনের জন্য সুইডেনের মাইগ্রেশন ওয়েবসাইট থেকে ফর্মটি ডাউনলোড
করে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
এরপর সমস্ত কাগজপত্র সংযুক্ত করে নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রটি
সুইডেনের ঢাকার গুলশান-২ এ অবস্থিত দূতাবাসে জমা দিতে হয়। দূতাবাস আপনার
আবেদন যাচাই-বাছাই করবে এবং আপনি যোগ্য হলে আপনাকে ভিসা প্রদান করা হবে।
সুইডেন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
সুইডেনে যেতে চাইলে আপনার একটি বৈধ ভিসা থাকা জরুরি। আপনার মূল উদ্দেশ্য
অনুযায়ী আপনাকে সঠিক ভিসা ক্যাটাগরি বেছে নিতে হবে। ধরুন, আপনি শিক্ষার
জন্য যাচ্ছেন তাহলে লাগবে স্টুডেন্ট ভিসা। যদি ঘুরতে যান তাহলে ট্যুরিস্ট
ভিসা। আর কাজের জন্য গেলে নিতে হবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
আপনার জন্য উপযুক্ত ভিসা ক্যাটাগরি ঠিক করার পরই, সেই ভিসা অনুযায়ী
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সংগ্রহ করে প্রস্তুত রাখতে হবে। সুইডেন ভিসার
জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- ভিসার আবেদনপত্র (অনলাইনে পূরণ)
- পাসপোর্ট (ন্যূনতম ছয় মাসের মেয়াদ)
- দুটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ভ্রমণ বীমা
- থাকার বাসস্থানের প্রমাণ
- আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বেতনের স্লিপ ইত্যাদি)
- কাজের ছুটির প্রমাণ (যদি চাকরিজীবী হন)
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ (যদি শিক্ষার্থী হন)
- কাজের দক্ষতা সার্টিফিকেট
- কাজের অফার লেটার (ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য)
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
- ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (যদি প্রয়োজন হয়)
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- মেডিকেল সনদ
ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কিছুটা আলাদা হতে পারে, তবে
মূল নথিগুলো প্রায় একই থাকে। সব কাগজপত্র সংগ্রহ করার পর, আপনাকে সুইডিশ
মাইগ্রেশন ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করে তা সঠিকভাবে পূরণ করতে
হবে। এরপর আবেদনপত্রের সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে ভিসা
আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
আবেদনপত্র এবং কাগজপত্রগুলো আপনাকে ঢাকার গুলশান-২ এ অবস্থিত সুইডিশ
দূতাবাসে জমা দিতে হবে। দূতাবাস আপনার আবেদনটি যাচাই-বাছাই করবে। আপনার
আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে আপনি ভিসা পাবেন। এছাড়াও, সুইডেন যেহেতু শেনজেনভুক্ত
একটি দেশ, তাই আপনি চাইলে শেনজেন ভিসার জন্যও আবেদন করতে পারেন।
সুইডেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬
বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ জীবিকার সন্ধানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় সুইডেনে কাজ
করতে যেতে আগ্রহী। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই যে সুইডেন যেতে আসলে কত টাকা
খরচ হয় বা শুধু ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্যই বা কত টাকা লাগে। মনে রাখতে
হবে, সুইডেনের অন্যান্য ভিসার তুলনায় এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ কিন্তু
তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেশি।
📌আরো পড়ুন👉পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬
তবে, প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে সুইডেন সরকার কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ
দিয়ে থাকে। এই সুযোগ কাজে লাগালে আপনারা তুলনামূলক অল্প খরচে সুইডেনের
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করিয়ে নিতে পারবেন। বর্তমানে, যদি আপনি কোনো এজেন্সির
মাধ্যমে সুইডেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান, তাহলে আপনার ১২ লক্ষ থেকে ১৫
লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
সুইডেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং
অনেকেই সুইডেনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান, কিন্তু এই ভিসা
প্রসেসিং প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের তেমন কোনো ধারণা থাকে না। ওয়ার্ক
পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো সুইডেনের
কোনো কোম্পানি থেকে জব অফার লেটার এবং কাজের অনুমতি সংগ্রহ করা।
এই জব অফার লেটার পেতে হলে আপনাকে সুইডেনের বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরির জন্য
আবেদন করতে হবে। আপনি যখন কোনো কোম্পানিতে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হবেন,
তখনই তারা আপনাকে অফার লেটারটি দেবে। এরপর আপনি নিজে নিজেই ভিসার আবেদন
প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন।
তবে, আপনি যদি চান, তাহলে কোনো এজেন্সির মাধ্যমেও সুইডেন ওয়ার্ক পারমিট
ভিসা প্রসেসিং করাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে, তারা একটি নির্দিষ্ট ফি-এর
বিনিময়ে যাবতীয় কাজ নিজ দায়িত্বে সম্পন্ন করে দেবে।
একটা বিষয়ে সব সময় সতর্ক থাকবেন ভিসা পাওয়ার আগে বা প্রক্রিয়া শুরুর আগে
কখনোই কোনো এজেন্সিকে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করবেন না।
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৬
অনেকেই সুইডেনে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে চান, তাই সুইডেনের স্টুডেন্ট ভিসা
সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। পড়াশোনার খরচ সম্পর্কে তো আগেই আলোচনা
করা হয়েছে, চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার পর সুইডেনে
স্থায়ীভাবে বসবাস করা যায় কিভাবে।
অনেকেই ছাত্র হিসেবে সেখানে যাওয়ার পর স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাই
পড়াশোনার কিছু সময় পর স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য আবেদন করা সম্ভব। তবে
আপনি যদি সুইডেনে স্থায়ী হতে চান, সে ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মনে
রাখতে হবে:
- মাস্টার্স লেভেলে পড়াশোনা করলে আপনাকে ৩০ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে।
- স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করার জন্য আপনার একটি স্থায়ী চাকরি থাকতে হবে।
- আপনার মাসিক বেতন অবশ্যই দেশের নির্ধারিত মান অনুযায়ী হতে হবে (আগের তথ্যমতে, ন্যূনতম বেতন সাধারণত অনেক বেশি যেমন সাম্প্রতিক শর্তে ২৭,৩৬০ SEK-এর কাছাকাছি)।
এই শর্তগুলো পূরণ করলে আপনি স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য আবেদন করতে
পারবেন। কর্তৃপক্ষ তখন আপনার তথ্য যাচাই-বাছাই করে আপনাকে স্থায়ী বসবাসের
অনুমতি দিতে পারে।
সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং
সুইডেন যেহেতু ইউরোপের একটি দেশ, তাই বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট
ভিসা নিয়ে সেখানে পড়তে যেতে চায়। তবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই সুইডেন
স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকে না। সুইডেনের
স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে সুইডেনের কোনো একটি
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির অফার লেটার জোগাড় করতে হবে।
এই অফার লেটার পাওয়ার পর, শিক্ষার্থীর যদি আর্থিক সক্ষমতা থাকে, তবে ভিসার
জন্য আবেদন করা যায়। যদি আর্থিক সক্ষমতা ঠিক থাকে, তাহলে স্টুডেন্ট ভিসা
পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা ব্যাংকের কাছ
থেকে ঋণ নিয়েও তাদের অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয় ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে
পারে।
আপনি যদি কোনো এজেন্সির মাধ্যমে সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং করান, তবে
শিক্ষার্থীকে শুধু তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো জমা দিতে হবে। এজেন্সি
একটি নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে শিক্ষার্থীর বাকি সব কাজ নিজ দায়িত্বে করে
দেয়।
আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অফার লেটার পাওয়ার জন্য আপনাকে সুইডেনের
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেইল করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকে
যোগ্য মনে করলে তবেই তারা ভর্তির অফার দিয়ে থাকে।
সুইডেন টুরিস্ট ভিসা ২০২৬
আপনি যদি সুইডেন ভ্রমণ করতে চান, তাহলে অবশ্যই ট্যুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে
জানতে হবে। চলুন, এই ভিসায় কত টাকা খরচ হতে পারে সে বিষয়ে কথা বলা যাক।
সুইডেন যেহেতু শেনজেনভুক্ত একটি দেশ, তাই আপনি শেনজেন ভিসার মাধ্যমেই
সেখানে ভ্রমণ করতে পারবেন। এই ভিসায় সাধারণত ৩০ দিন থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত
থাকার অনুমতি পাওয়া যায়। এই ভিসার জন্য আপনি সরাসরি বাংলাদেশে অবস্থিত
সুইডিশ দূতাবাসে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের সময় আপনাকে নির্দিষ্ট ভিসা ফি জমা দিতে হবে। দূতাবাস আপনার আবেদন
যাচাই-বাছাই করবে এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অল্প দিনের মধ্যেই আপনি ভিসা
পেয়ে যাবেন, এরপরই আপনি সুইডেন ভ্রমণ করতে পারবেন।
সুইডেন যেতে কত বছর বয়স লাগে
সুইডেনে যেতে হলে শিক্ষার্থী এবং ভ্রমণকারীদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো
বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া নেই। তবে, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে
আবেদনকারীদের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। অবশ্য,
আপনি যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশের নাগরিক হন, তাহলে কাজের ভিসার
জন্য আপনার বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হলেই চলবে; সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কোনো
বয়সসীমা নেই।
সুইডেন কেমন দেশ
সুইডেন হলো উত্তর ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত একটি সুন্দর,
উন্নত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের শেনজেনভুক্ত দেশ। দেশের রাজধানী হলো স্টকহোম,
যা একই সঙ্গে সুইডেনের বৃহত্তম শহর। সুইডেনের জীবনযাত্রার মান খুবই উন্নত।
শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সুরক্ষার মতো সব দিক থেকেই এটি অত্যন্ত
উন্নত।
প্রাকৃতিক দৃশ্যের দিক থেকেও সুইডেন মন মুগ্ধকর। এখানকার মনোমুগ্ধকর বন,
হ্রদ এবং পাহাড় রয়েছে, যা পর্যটকদের ভীষণভাবে আকর্ষণ করে। এছাড়াও,
সুইডেন প্রযুক্তিগত দিক থেকেও অনেক এগিয়ে। বিশ্বের অনেক বড় বড় প্রযুক্তি
কোম্পানির জন্মস্থান এই সুইডেন, আর তাই এটি প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছেও একটি
প্রিয় দেশ হিসেবে পরিচিত।
সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
প্রশ্ন: সুইডেনের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?
উত্তর: বিনিময় হার প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়, তবে বর্তমান বাজার অনুযায়ী:
সুইডেনের ১ ক্রোনা = প্রায় ১২.৭৫ থেকে ১২.৮০ বাংলাদেশী টাকা (BDT)।
প্রশ্ন: সুইডেনের মুদ্রার নাম কি?
উত্তর: সুইডেনের মুদ্রার নাম হলো সুইডিশ ক্রোনা (Swedish Krona)। এর সংক্ষিপ্ত রূপ
বা কোড হলো SEK।
প্রশ্ন: সুইডেন কোন মহাদেশে অবস্থিত?
উত্তর: সুইডেন ইউরোপ মহাদেশে অবস্থিত। এটি উত্তর ইউরোপের স্ক্যান্ডিনেভিয়ান
উপদ্বীপে অবস্থিত একটি দেশ।
প্রশ্ন: সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন ফি কত?
উত্তর: ভিসার আবেদন ফি সাধারণত ১৫০০ সুইডিশ ক্রোনা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায়
১৯,২০০ টাকা (অ্যাপ্লিকেশন ফি ৯০০ SEK বা প্রায় ১২,০০০ টাকা)।
প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের জন্য সুইডেনে মাসিক থাকা-খাওয়ার খরচ কেমন?
উত্তর: শহর ও জীবনযাত্রার মানের ওপর নির্ভর করে প্রতি মাসে প্রায় ৩০,০০০ থেকে
১,০০,০০০ টাকা (প্রায় ২৫০০ থেকে ৬,৫০০ SEK) খরচ হতে পারে।
প্রশ্ন: স্টুডেন্ট ভিসার জন্য ব্যাংক ব্যালেন্স কত দেখাতে হয়?
উত্তর: স্কলারশিপ না পেলে সাধারণত ১০ মাসের খরচ বাবদ প্রায় ৯ লাখ টাকা (৭,৩০০ SEK
প্রতি মাসে) ব্যাংকে দেখাতে হতে পারে।
প্রশ্ন: সুইডেনের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য দৈনিক কত টাকা থাকা বাধ্যতামূলক?
উত্তর: সুইডেন ভ্রমণের জন্য দৈনিক থাকা-খাওয়ার খরচ বাবদ অন্তত ৪৫০ SEK (প্রায়
৫,৭৬০ টাকা) ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখানো প্রয়োজন।
প্রশ্ন: সুইডেনে সবচেয়ে বেশি বেতনের চাকরি কোনগুলো?
উত্তর: সাধারণত আইটি (IT), এইচআর (HR), স্টেম (STEM) এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে
বেতন সর্বোচ্চ হয়, যা বছরে ২০ লাখ SEK বা তারও বেশি হতে পারে।
শেষ মতামতঃ সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে
মনে রাখবেন, সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে তা পুরোপুরি নির্ভর করে আপনি কোন
ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করছেন তার ওপর। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত, আপনার
কাজের ওপর যদি ভালো অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে আপনার আয়ও অনেক বেশি হবে।
সাধারণত, যারা নতুন অবস্থায় কাজের জন্য সুইডেন যান, তারা প্রতি মাসে
৬০,০০০ টাকা থেকে ২,৫০,০০০ টাকারও বেশি আয় করতে পারেন। এছাড়াও, যাদের
কাজের ধরন ভালো, যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে এবং যারা ওভারটাইম করার সুযোগ পান,
তারা প্রতি মাসে ২ লক্ষ টাকা থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকারও বেশি আয় করতে
সক্ষম হন।
সুইডেন বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক উন্নত একটি রাষ্ট্র। আর ঠিক এই
কারণেই, বাংলাদেশের হাজারো মানুষ এখন সুইডেনের বিভিন্ন ভিসায় যেতে আগ্রহী।
তবে, বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা থাকে যে সুইডেন যেতে আসলে কত টাকা খরচ হয়।
তাই আজকের এই পোস্টে আমরা সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে এবং সেখানে কাজের বেতন
কত সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরলাম। আশা করি, আপনারা বিভিন্ন ভিসায়
সুইডেন যাওয়ার খরচ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url