নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে - নিউজিল্যান্ড বেতন কত ২০২৬
বাংলাদেশ থেকে অনেকেই নিউজিল্যান্ড যেতে আগ্রহী। এই কারণে দেশটিতে যেতে আগ্রহীদের
অবশ্যই জানা দরকার যে, নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে। মনে রাখা ভালো,
নিউজিল্যান্ড ইউরোপের কোনো দেশ নয়, বরং এটি ওশেনিয়া মহাদেশের শিল্পে উন্নত একটি
রাষ্ট্র। নিউজিল্যান্ডের সরকার প্রতি বছরই প্রচুর সংখ্যক বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে।
এই দেশে কাজের বেতন সাধারণত অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। কাজের
দক্ষতা অনুযায়ী, দক্ষ শ্রমিকরা এখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে কাজ করার ভালো
সুযোগ পান। এই আর্টিকেলটি আপনি শেষ পর্যন্ত পড়লে জানতে পারবেন নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা
লাগে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে
নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে
আপনি যদি আজকের দিনে বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ড যেতে চান, তাহলে আপনার অবশ্যই এই
ভ্রমণের মোট খরচ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। চলুন, আর দেরি না করে
নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার জন্য একাধিক ভিসা ক্যাটাগরি রয়েছে, যার মধ্যে ওয়ার্ক
পারমিট ভিসা অন্যতম। ভিসার ধরনের ওপর ভিত্তি করে এগুলোর খরচও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে
থাকে। যেমন, সাধারণত ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম অন্যান্য ভিসা, যেমন ভিজিট বা
স্টুডেন্ট ভিসার চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি হয়ে থাকে।
তবে বাংলাদেশের লোকজন সাধারণত কাজের উদ্দেশেই নিউজিল্যান্ডে বেশি যান। যেহেতু
এই ভিসার মাধ্যমে সেখানে কাজ করা যায়, তাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার চাহিদা খুবই
বেশি। আপনি যদি সরকারিভাবে এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডে যেতে
চান, সে ক্ষেত্রে আপনার আনুমানিক ৭ লক্ষ টাকা থেকে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে
পারে।
📌আরো পড়ুন👉পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে? বিস্তারিত জানুন
তবে, আপনি যদি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান, তবে আপনার প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা থেকে
১৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অন্যদিকে, যদি আপনি কোনো কোম্পানির মাধ্যমে
সরাসরি চাকরির অফার পান, তাহলে নিজেই ভিসার জন্য আবেদন করে যেতে পারেন।
আর নিউজিল্যান্ডে যদি আপনার কোনো আত্মীয়-স্বজন থাকেন এবং তাদের মাধ্যমে আপনি
যেতে পারেন, সেক্ষেত্রে আপনার খরচ কিছুটা কম হবে আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬
লক্ষ টাকা মতো লাগতে পারে।
এছাড়াও, যদি আপনি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে নিউজিল্যান্ডে যেতে চান, তবে আপনাকে
স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে আপনার
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফার লেটার সহ অন্যান্য কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। যদি সব
ঠিকঠাক থাকে, তাহলে স্টুডেন্ট ভিসা করতে আপনার আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৪
লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
তাছাড়া, আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় নিউজিল্যান্ডে যান, তাহলে আপনার প্রায় ৪
লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এছাড়াও, শুধু ভিসা আবেদন ফি
বাবদ আপনার সাধারণত ১৫ হাজার টাকা থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। এর
বাইরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন: ব্যাংক স্টেটমেন্ট, মেডিকেল সার্টিফিকেট
ইত্যাদি সংগ্রহের জন্যেও কিছু অতিরিক্ত খরচ হবে।
এছাড়াও, নিউজিল্যান্ডে প্রতিদিন থাকা-খাওয়ার খরচ আপনার ভিসার ধরনের উপর
নির্ভরশীল।
- থাকার খরচ: নিউজিল্যান্ডে থাকার জন্য আপনার প্রতিদিন প্রায় ১,৫০০ টাকা থেকে ২,৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এই খরচ মূলত নির্ভর করে আপনি কেমন ধরনের বাসস্থান বা হোটেলে থাকছেন তার ওপর।
- খাওয়ার খরচ: সেখানকার কোনো রেস্টুরেন্টে একবেলা খাবার খেতে আপনার আনুমানিক ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
দৈনন্দিন বাজার করা এবং অন্যান্য সব খরচ মিলিয়ে এক মাসে আপনার মোট ২০ হাজার
টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অন্যদিকে, গাড়ি ভাড়া বা বিভিন্ন
স্থানে ভ্রমণের জন্য অতিরিক্ত আরও ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হতে
পারে।
নিউজিল্যান্ড বেতন কত
নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে, তা জানার পাশাপাশি অন্যান্য দেশের তুলনায়
সেখানে কাজের বেতন কত সেটি জানা অত্যন্ত জরুরি। সাধারণভাবে বলতে গেলে,
নিউজিল্যান্ডে কাজের বেতন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
বিশেষ করে, যারা অভিজ্ঞ ও দক্ষ শ্রমিক, তাদের আয়ের পরিমাণ অন্যদের চেয়ে
উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হয়ে থাকে।
📌আরো পড়ুন👉পর্তুগাল সর্বনিম্ন বেতন কত? বিস্তারিত জানুন
একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নিউজিল্যান্ডে একজন শ্রমিক মাসিক ২ লক্ষ টাকা থেকে ৩
লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন। এছাড়াও, যে সব শ্রমিক অভিজ্ঞ এবং বেশি সময়
ধরে ওভারটাইম করেন, তাদের মাসিক বেতন গড়ে ৪ লক্ষ টাকা থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার
উপরেও হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া প্রবাসীরা নিউজিল্যান্ডে অনেক ধরনের কাজ করে থাকেন, যেমন:
কৃষি কাজ, রেস্টুরেন্টের কাজ, ক্লিনার, এবং ফাস্টফুড প্যাকেজিং ইত্যাদি। এখানে
কাজের বেতন সাধারণত ঘণ্টা হিসেবে দেওয়া হয়। প্রতি ঘণ্টায় সাধারণত ১০ থেকে ১৫
নিউজিল্যান্ড ডলার দেওয়া হয়ে থাকে।
সাধারণত, নিউজিল্যান্ডে আপনি সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন। তবে
যদি এর চেয়ে বেশি কাজ করেন, তাহলে সেই অতিরিক্ত সময়ের জন্য আপনি ওভারটাইম
হিসেবে বেতন পাবেন।
এখানে কাজ করে আপনি মাসিক ২ হাজার থেকে ৩ হাজার নিউজিল্যান্ড ডলার পর্যন্ত আয়
করতে পারবেন, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৭০ হাজার
টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন বেতন কত
নিউজিল্যান্ড একটি উন্নত দেশ হওয়ায় এখানে বিভিন্ন সেক্টরে নানা ধরনের
কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। এই দেশে শ্রমিকদের কাজের জন্য একটি সর্বনিম্ন বেতন
কাঠামো নির্ধারিত আছে।
বর্তমানে, নিউজিল্যান্ডে একজন শ্রমিককে প্রতি ঘণ্টায় ২৩.১৫ নিউজিল্যান্ড ডলার
মজুরি প্রদান করা হয়। সপ্তাহে সাধারণত ৩৮ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এই দেশের
মাসিক সর্বনিম্ন বেতন সাধারণত ৩,৭০৪ নিউজিল্যান্ড ডলার হয়ে থাকে। যদি কেউ
নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি কাজ করেন, তবে ওভারটাইম কাজের জন্য তিনি আরও বেশি
বেতন পাবেন।
নিউজিল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি
নিউজিল্যান্ডের বেশ কিছু জব সেক্টরে কর্মীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনারা যে
ক্যাটাগরিতে দক্ষ বা পারদর্শী সেই সকল সেক্টরগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করতে
পারেন। আপনি বাংলাদেশ বা পৃথিবীর যেকোনো দেশেই থাকুন না কেন, এই সুযোগ কাজে
লাগিয়ে স্পন্সরশিপ ভিসার মাধ্যমে কোম্পানির খরচে সরাসরি নিউজিল্যান্ডে ওয়ার্ক
ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন।
নিউজিল্যান্ডে যেসব কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, সেগুলো হলো:
📌আরো পড়ুন👉দুবাই কোন কাজের চাহিদা বেশি? জেনে নিন
- হোটেল বা রেস্টুরেন্ট জব
- ডেলিভারি ম্যান
- ড্রাইভার
- কৃষিকাজ সেক্টর
- নির্মাণ শ্রমিক
- ইলেকট্রনিক্স এর কাজ
- মেকানিক্যাল
- শপিংমলে বিক্রয় কর্মী
- ক্লিনার
- নার্সিং
- ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টর
- আইটি নির্মাণ
- হসপিটালিটি এন্ড ট্যুরিজম সেক্টর
চাকরির জন্য আবেদন করার সময় অবশ্যই আপনার সিভি এবং কভার লেটার দুটোই যেন
নিউজিল্যান্ডে প্রচলিত ফরম্যাট অনুযায়ী তৈরি করা হয়। সেই ফরম্যাট অনুযায়ী
সবকিছু গুছিয়ে আপনি আপনার জবের জন্য আবেদন করা শুরু করে দিতে পারেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার প্রতিটি ডকুমেন্ট যেন খুব উচ্চ
মানসম্পন্ন ও পেশাদার হয়। খেয়াল রাখবেন, কোম্পানির কর্মকর্তারা যেন আপনার
কাগজপত্র দেখেই আপনার প্রতি আগ্রহী হন এবং আপনার সিভি ও কভার লেটার দেখেই যেন
তারা আপনাকে নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হন।
নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার
স্বপ্ন দেখছেন, তাদের অবশ্যই আগে থেকে জেনে নেওয়া উচিত যে, সেখানে যেতে মোট কত
টাকা খরচ হতে পারে। নিউজিল্যান্ড দেশটি তার অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উন্নত
জীবনযাত্রা এবং ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগের জন্য বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত।
নিউজিল্যান্ডে কাজ করার জন্য আপনার একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা থাকা প্রয়োজন।
মূলত এটি হলো একটি আইনগত অনুমোদন পত্র, যা আপনাকে নিউজিল্যান্ডে একটি নির্দিষ্ট
সময়ের জন্য কাজ করা বা বসবাস করার অনুমতি দেবে। নিউজিল্যান্ড সরকার বিভিন্ন
ধরনের ওয়ার্ক ভিসা প্রদান করে থাকে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- এসেনশিয়াল স্কিলড ওয়ার্ক ভিসা।
- স্পেসিফিক পারপাস ওয়ার্ক ভিসা । নির্দিষ্ট প্রকল্প বা ইনভেন্টরি কাজের জন্য দেওয়া হয় ।
- পোস্ট স্টাডি ভিসা । এই ভিসাতে আপনি পড়াশোনা শেষ করে কাজের জন্য সুযোগ পাবেন ।
- ওয়ার্ক হলিডে ভিসা এই ভিসায় ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে যারা কাজের পাশাপাশি ভ্রমণ করতে চায়।
নিউজিল্যান্ডে কাজ করার জন্য এসেনশিয়াল স্কিলড ওয়ার্ক ভিসাহলো সবচেয়ে
জনপ্রিয় ভিসা। এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনার কিছু নির্দিষ্ট
যোগ্যতা থাকতে হবে।
এর মধ্যে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আপনার কাছে একটি চাকরির অফার
লেটার থাকতে হবে। এই চাকরিটি অবশ্যই নিউজিল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের
তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। এর সঙ্গে, আপনার কাজের ক্ষেত্রে যথেষ্ট দক্ষতা ও
অভিজ্ঞতা থাকাটাও জরুরি।
নিউজিল্যান্ড ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বাংলাদেশ থেকে আপনি নিউজিল্যান্ড যেতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনাকে জেনে নিতে হবে
নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে। ওশেনিয়া মহাদেশের একটি উন্নত দেশ হলো
নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডে অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আছে । কিন্তু
সেখানে যথেষ্ট পরিমাণ কর্মী না থাকার কারণে নিউজিল্যান্ডর সরকার প্রতিবছর বেশ
কিছু বিদেশী কর্মী নিয়োগ করে থাকে।
এখানে শুধুমাত্র শিক্ষিত ও দক্ষ লোক নিয়োগ করা হয় । কারণ এখানে ইংরেজিতে
ভালো জানে এমন লোকদের মাধ্যমে কাজ করানো হয়ে থাকে । আর তাই আপনি যখন যাওয়ার
জন্য নিউজিল্যান্ড ভিসার আবেদন করবেন। নিউজিল্যান্ডের কাজ করতে যাওয়ার জন্য
কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়।
📌আরো পড়ুন👉দুবাই যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
- নিউজিল্যান্ড ভিসা আবেদন ফরম
- বৈধ পাসপোর্ট ৬ মাস মেয়াদী
- ভোটার আইডি কার্ড
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
- মেডিকেল রিপোর্ট
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অফার লেটার
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- করোনা ভ্যাকসিন এর টিকা কার্ড
নিউজিল্যান্ড ভিসা চেক
আপনাকে নিউজিল্যান্ড ভিসা চেক করার জন্য আপনার পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে
https://nzeta.immigration.govt.nz/check-status এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনাকে
ভিজিট করতে হবে।
এরপর আপনি ইয়েস বাটনে ক্লিক করে নিউজিল্যান্ড ভিসার রেফারেন্স নাম্বার এবং
আপনার পাসপোর্ট নাম্বারটি লিখবেন। এবার ন্যাশনালিটি থেকে বাংলাদেশ সিলেক্ট
করে সার্চ বাটনে গিয়ে ক্লিক করুন। তারপরে আপনি পেয়ে যাবেন আপনার
নিউজিল্যান্ড ভিসার স্ট্যাটাস চেক করা।
নিউজিল্যান্ড ভিসা চেক পদ্ধতিঃ
ভিসা চেক করার জন্য অনলাইনে যে পদ্ধতি গুলো আছে তা উল্লেখ করা হলো ধাপগুলো
ফলো করে নিউজিল্যান্ড ভিসা স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন।
১. ওয়েব সাইটে ভিজিট করুনঃ যেকোনো
ব্রাউজারে গিয়ে New Zealand Visa Check লিখে সার্চ করুন। অথবা আপনি ভিজিট
করুন https://nzeta.immigration.govt.nz/check-status ওয়েবসাইটটিতে।
২. ভিসার জন্য তথ্য দিনঃ Do you have an
NZeTA reference number? এই অপশনে গিয়ে ইয়েস সিলেক্ট করুন। এখন এন্টার
দিয়ে Do you have an NZeTA reference number এই ঘরে ভিসার জন্য যে রেফারেন্স
নাম্বারটি আছে সেটি লিখুন।
আপনার এই রেফারেন্স নাম্বারটি আপনি আপনার আবেদন পত্রে পাবেন। এরপর Enter your
passport number এই ঘরে আপনি আপনার পাসপোর্ট নাম্বারটি লিখুন। নাম্বারটি সঠিক
হতে হবে। কারণ ভুল হলে নিউজিল্যান্ড ভিসার জন্য তথ্য আসবে না।
৩. ভিসার স্ট্যাটাস চেকঃ এরপর Nationality
অপশন থেকে Bangladesh সিলেক্ট সিলেক্ট করে সার্চ বাটনে গিয়ে নিউজিল্যান্ড
ভিসা পরবর্তী স্ট্যাটাসগুলো জানতে পারবেন। এইভাবে আপনি চারটি ধাপ ফলো করলে
রেফারেন্স নাম্বার, পাসপোর্ট নাম্বার এবং জাতীয়তা সিলেক্ট করে নিউজিল্যান্ড
ভিসার তথ্য যাচাই করতে পারবেন সঠিক ভাবে।
নিউজিল্যান্ড কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়
বর্তমান সময়ে নিউজিল্যান্ড কাজের ভিসা পাওয়ার উপায় অনেক সহজ। তবে আপনাকে
কাজের ভিসা আবেদন করার প্রক্রিয়া জানতে হবে। আপনি চাইলে ঘরে বসে
নিউজিল্যান্ড কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নিউজিল্যান্ড কাজের ভিসার আবেদন করার জন্য আপনাকে www. immigration. gov.nz
ভিজিট করতে হবে । তারপর আপনি কোন ভিসা ক্যাটাগরিতে নিউজিল্যান্ড যাবেন, সেটা
সিলেক্ট করে যাবতীয় কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে।
📌আরো পড়ুন👉বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার সহজ উপায়
এর মাধ্যমে মূলত দালাল মুক্ত নিজেই নিউজিল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করতে
পারবেন। এ থেকে আপনার নিউজিল্যান্ড যাওয়ার খরচ অনেকটা কম হবে। বাংলাদেশ থেকে
আবেদনের জন্য নিউজিল্যান্ডে অফিশিয়াল ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার ভি, এ্স, সি
বা ভি, এফ, এস গ্লোবালের মাধ্যমে ডকুমেন্টাল জমা দিতে হবে।
আর আপনি যদি একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে নিউজিল্যান্ডে যেতে পারেন তাহলে
কিন্তু খুব সহজে নিউজিল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে সাধারণত তিনটি প্রধান পদ্ধতি ব্যবহার করে নিউজিল্যান্ডের
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়। এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে অনেকেই খুব সহজে
কাজের ভিসা পেতে সফল হন। পদ্ধতিগুলো হলো:
- জব ওয়েবসাইটে আবেদন করে
- নিউজিল্যান্ডে বসবাসকৃত আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে
- এজেন্সি অথবা এম্বাসির মাধ্যমে
১. জব ওয়েবসাইটে আবেদন করে
আপনার কাছে যদি নির্দিষ্ট কাজের দক্ষতা থেকে থাকে, তাহলে সরাসরি
নিউজিল্যান্ডের সরকারি জব ওয়েবসাইটে কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। সেখানে
আপনি অনেক ধরনের কাজের সুযোগ খুঁজে পাবেন। আপনি যদি কাজের জন্য সঠিকভাবে
আবেদন করতে পারেন, তবে কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে আপনার একটি ভাইভা পরীক্ষা নিতে
পারে।
ভাইভা পরীক্ষায় আপনি যদি উত্তীর্ণ হতে পারেন এবং তাদের নির্দিষ্ট কিছু শর্ত
যদি পূরণ করতে পারেন, তাহলে নিউজিল্যান্ড থেকে আপনাকে কাজের ভিসা দেওয়া হবে।
এই ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদনপত্রটি হাতে পাওয়ার পর আপনারা এটি সরাসরি এম্বাসিতে
জমা দিয়ে সহজেই ভিসা সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
২. আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে
নিউজিল্যান্ডে যদি আপনার কোনো আত্মীয়-স্বজন থাকেন এবং তিনি যদি ভালো কোনো
কোম্পানিতে কাজ করেন ও সেই কোম্পানি নতুন কর্মী নিয়োগের কথা ভাবে, তবে সেই
আত্মীয় আপনার জন্য ভিসা পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারেন।
এই ভিসাটি এম্বাসিতে জমা দেওয়ার পর কিছু অতিরিক্ত শর্তাদি পূরণ করে আপনি খুব
সহজেই নিউজিল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আসতে পারবেন। আর এই
প্রক্রিয়ায় আপনার খরচের পরিমাণটাও অনেক কম হবে।
৩. এজেন্সি অথবা দূতাবাসের মাধ্যমে
বাংলাদেশে সরকারিভাবে স্বীকৃত অনেক এজেন্সি রয়েছে, যারা বিভিন্ন দেশে কাজের
জন্য ভিসা দিয়ে থাকে। আপনি যদি এই সকল এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন করেন,
তাহলে ভিসা প্রসেসিং-এর সমস্ত দায়িত্ব তারাই নিয়ে নেবে। ভিসা প্রসেসিং শেষ
হয়ে গেলে আপনি খুব সহজেই নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন।
তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই এজেন্সিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হবে।
এছাড়া, কেউ চাইলে সরাসরি নিউজিল্যান্ড এম্বাসির মাধ্যমেও ওয়ার্ক পারমিট ভিসার
জন্য আবেদন করতে পারেন।
নিউজিল্যান্ড এম্বাসি বাংলাদেশ
নিউজিল্যান্ডের মতো একটি দূরবর্তী ও উন্নত দেশে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের
আগ্রহীদের সব তথ্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে পেতে চাওয়া খুবই স্বাভাবিক। তবে
এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনার জেনে রাখা দরকার।
বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ডের কোনো পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস বা হাই কমিশন নেই। মূলত,
নিউজিল্যান্ড তাদের ভিসা ও কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি কনস্যুলেট
অফিস এবং একটি ভিএফএস কেন্দ্রের মাধ্যমে কাজ করে। এছাড়া, ভিসা আবেদনের একটি
বড় অংশ নয়াদিল্লিরনিউজিল্যান্ড হাই কমিশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ডের একটি কনস্যুলেট অফিস রয়েছে। এটি দূতাবাস বা হাই
কমিশনের মতো পূর্ণাঙ্গ মিশন নয়, কিন্তু এটি কনস্যুলার সেবা, যেমন ভিসা
সংক্রান্ত সাধারণ তথ্য প্রদান এবং দুই দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের কাজ করে।
নিউজিল্যান্ড কনস্যুলেট, ঢাকা-এর তথ্য:
- ঠিকানা: বাসাতি হরাইজন, ফ্ল্যাট নং বি-৩, ৩য় তলা, প্লট ২১, সড়ক ১৭, বনানী ১২১৩, ঢাকা, বাংলাদেশ।
- ফোন: +৮৮০-২-৮৮৬-১৯৪৭
- ইমেইল: neazsebl@bol-online.com
- কার্যক্রম: এটি মূলত স্থানীয় এবং নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের জন্য কনস্যুলার সেবা এবং কিছু সাধারণ তথ্য দিয়ে থাকে।
ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য নিউজিল্যান্ডের ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়াটি
তুলনামূলকভাবে জটিল এবং দিল্লি-নির্ভর (ভারত)।
১. অনলাইন আবেদন (প্রথম ধাপ): বর্তমানে প্রায় সব ধরনের ভিসার (ভিজিট, স্টাডি,
ওয়ার্ক) জন্য বাংলাদেশী নাগরিকদের প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়।
২. পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন: অনলাইনে আবেদন করার পর স্ক্যানিং এবং যাচাইকরণের
জন্য পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাধারণত ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত
নিউজিল্যান্ড ভিএফএস কেন্দ্রে পাঠাতে হয়। আপনি নিজে বা এজেন্সির মাধ্যমে এই
কাজটি করতে পারেন।
৩. মেডিক্যাল পরীক্ষা: নিউজিল্যান্ড ভিসার জন্য একটি বাধ্যতামূলক ধাপ হলো
স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এই পরীক্ষা ঢাকায় নির্দিষ্ট কিছু অনুমোদিত স্বাস্থ্যসেবা
কেন্দ্রে করানো যায়। উদাহরণস্বরূপ, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন
এবং অন্যান্য অনুমোদিত ক্লিনিক এই পরীক্ষাগুলো করে থাকে।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত ৯,০০০ থেকে ১০,১০০ টাকা খরচ হয়। শিশুদের জন্য
খরচ কম হয়ে থাকে।
৪. ভিসা প্রসেসিং সময়: ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থেকে সাধারণত ৩ থেকে ৬
সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে কাজের চাপ বা বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এই সময় আরও
বাড়তে পারে।
নিউজিল্যান্ডে আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, কিছু সাধারণ কাগজপত্র
প্রস্তুত রাখা জরুরি:
- পাসপোর্ট: ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে।
- ছবি: সাম্প্রতিক তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড, ৮০% ফেস কভারেজ)।
- কভার লেটার: আপনার নাম, পেশা, ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং ভ্রমণের খরচ কে বহন করবে তা উল্লেখ করে ভিসা অফিসারের কাছে আবেদনপত্র।
- অর্থনৈতিক প্রমাণ: আপনার ব্যক্তিগত এবং কোম্পানির গত ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, পে স্লিপ, এবং ট্যাক্স সার্টিফিকেট।
- চাকরি/ব্যবসায়িক প্রমাণ: চাকরিজীবীর জন্য এনওসি বা ফরওয়ার্ডিং লেটার, আর ব্যবসায়ীর জন্য ট্রেড লাইসেন্স।
- অন্যান্য ডকুমেন্ট: টিকেট ও হোটেল বুকিং কপি, আমন্ত্রণপত্র (যদি থাকে) এবং সব ডকুমেন্ট ইংরেজিতে অনুবাদ ও নোটারাইজড হতে হবে।
নিউজিল্যান্ডের ভিসার খরচ ভিসার ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হয়। আপনি যদি ভিজিট,
ওয়ার্ক, বা স্টুডেন্ট কোন ভিসায় আগ্রহী, সেই অনুযায়ী আরও নির্দিষ্ট তথ্য
জানার প্রয়োজন হলে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
সাধারন প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
প্রশ্ন: নিউজিল্যান্ডের মুদ্রার নাম কি?
উত্তর: নিউজিল্যান্ডের মুদ্রার নাম হলো নিউজিল্যান্ড ডলার। সাধারণত এটিকে ডলারের
প্রতীক ($) দিয়ে প্রকাশ করা হয়, তবে অন্যান্য ডলার থেকে আলাদা করার জন্য
প্রায়শই এটিকে NZ$ বা $NZ লেখা হয়।
এই মুদ্রাটি অনানুষ্ঠানিকভাবে কিউই বা কিউই ডলার নামেও পরিচিত, কারণ তাদের এক
ডলারের মুদ্রায় উড়ন্ত পাখি কিউই-এর ছবি থাকে।
প্রশ্ন: নিউজিল্যান্ডের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
উত্তর: নিউজিল্যান্ডের ১ ডলার (NZD) বর্তমানে বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৬৮ টাকা ৯০
পয়সা থেকে ৭০ টাকা ০০ পয়সা-এর কাছাকাছি।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ডের দূরত্ব কত
উত্তর: সাধারণত ঢাকা থেকে নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ড বা
রাজধানী ওয়েলিংটন পর্যন্ত আকাশপথে সরাসরি দূরত্ব হলো:
- কিলোমিটার (KM) এ: প্রায় ১১,১০০ কিলোমিটার থেকে ১১,৩০০ কিলোমিটার। (যেমন: ঢাকা থেকে অকল্যান্ডের দূরত্ব প্রায় ১১,১০৮ কিমি)
- মাইল (Mile) এ: প্রায় ৬,৯০০ মাইল থেকে ৭,০০০ মাইল।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ডের দূরত্ব প্রায় ১১,১৩৬ কিলোমিটার। বিমানের
ফ্লাইটে করে বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ড যেতে প্রায় ২০ ঘন্টা সময় লাগে।
বিমান যাত্রার এই সময়টা এয়ারলাইন্স কোম্পানি, ফ্লাইটের ধরন ইত্যাদি বিভিন্ন
বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন হতে পারে। অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের ভিসা
প্রসেসিং হতে সাধারণত ২০ দিন থেকে শুরু করে ১১ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
প্রশ্ন: নিউজিল্যান্ড ভিসার ফি কত?
উত্তর: নিউজিল্যান্ড ভিসার ফি সাধারণত প্রায় ১০ হাজার টাকা থেকে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার
টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা ফি ভিন্ন হয়ে থাকে।
শেষ মতামত
পরিশেষে নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে, তা আপনার ভিসার ধরন এবং আপনি কোন
প্রক্রিয়ায় যাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে। নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি
আপনার জন্য একটি বড় বিনিয়োগ ও জীবনের মোড় ঘোরানো সুযোগ হতে পারে, তাই
তাড়াহুড়ো না করে সব তথ্য যাচাই করে সবচেয়ে কম খরচের নিরাপদ পথটি বেছে
নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url