সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬ - সার্বিয়া কোন কাজের বেতন কত (আপডেট)

সার্বিয়া ইউরোপের একটি সুন্দর এবং উন্নত রাষ্ট্র। বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জীবিকা নির্বাহ করা বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের স্বপ্ন। সার্বিয়াতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকায়, বর্তমানে বেশিরভাগ বাংলাদেশি শ্রমিক সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা কাজের ভিসায় দেশটিতে পাড়ি জমাচ্ছেন।
সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
আজকের এই পোস্টে সবার সুবিধার জন্য সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, বিভিন্ন কাজের বেতন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় তুলে ধরা হবে।

যারা সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দেশটিতে যেতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই সার্বিয়ার বেতন কাঠামো সম্পর্কে জেনে যাওয়া উচিত। এতে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। পাশাপাশি, সার্বিয়াতে কোন কাজের চাহিদা ও বেতন বেশি, সেই বিষয়েও তথ্য দেওয়া হবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট আপডেট 

সার্বিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং দেশটির কোম্পানিগুলো কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে, একটি টেক্সটাইল কোম্পানি ঢাকার 'এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ বিডি' নামক একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ৬০০ কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

সার্বিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। জানা গেছে, সার্বিয়া সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১ লাখ দক্ষ বিদেশি কর্মীর ভিসা দেবে। বিশেষত, ২০২৭ সালে ইউরো এক্সপো আয়োজনের জন্য ইউরোপের এই দেশটিতে ৫ লাখ নির্মাণ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে।

সার্বিয়াতে যাওয়ার জন্য অন্যান্য ভিসা থাকলেও, সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার চাহিদা অনেক বেশি। তবে এই ভিসার জন্য সব সময় আবেদন করা যায় না। যখন সার্বিয়া সরকার বিভিন্ন কাজের প্রয়োজন অনুসারে শ্রমিক নিয়োগের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু করবে, তখন আপনারা খুব সহজে এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এছাড়া, এজেন্সির মাধ্যমেও ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করা সম্ভব, তবে সেক্ষেত্রে আপনাদের সব মিলিয়ে খরচ অনেক বেশি হবে।

সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৬

সার্বিয়া ইউরোপের একটি উন্নত দেশ, তাই সেখানে যেতে সাধারণত বেশ খরচ হয়। তবে একটি সুযোগ আছে যার মাধ্যমে তুলনামূলক কম খরচে সার্বিয়া যাওয়া যেতে পারে। যদি আপনি সরকারি সার্কুলার অনুসারে সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, তাহলে খুব অল্প টাকায় সেখানে পৌঁছানো সম্ভব।
অবশ্য, সব সময় সরকারিভাবে সার্বিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করার সুযোগ থাকে না। যখন শ্রমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়, তখনই কেবল আপনারা অনলাইনে নিজেরাই সার্বিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। অন্যথায়, আপনি বেসরকারিভাবে কোনো এজেন্সির সাথে আলোচনা করেও ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে খরচ অনেক বেশি হবে।

এছাড়াও, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে এবং এই কাজগুলোর বেতনও ভিন্ন ভিন্নভাবে নির্ধারণ করা থাকে। সার্বিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চাইলে মোটামুটি ৭ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।

এবার দেখা যাক, সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মধ্যে কী কী কাজ রয়েছেঃ
  • মেকানিক্যাল এর কাজ।
  • ইলেকট্রিশিয়ান এর কাজ।
  • ইলেক্ট্রনিক্স এর কাজ।
  • ড্রাইভিং এর কাজ।
  • শেফ এর কাজ।
  • প্লাম্বার এর কাজ।
  • হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এর কাজ।
  • নির্মাণ কাজের শ্রমিক ইত্যাদি।

সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়াতে কাজের জন্য যেতে হলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। বেসরকারিভাবে এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব। বেসরকারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজের ভিসা নিয়ে সার্বিয়া পৌঁছে আপনারা বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়
যদি আপনার কাছে সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট এবং কাজের অফার লেটার থাকে, তাহলে আপনি নিজেই ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। তবে, যদি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করান, সেক্ষেত্রে এজেন্সিই ওয়ার্ক পারমিট ও কাজের অফার লেটার সংগ্রহ করে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করে থাকে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
  • পাসপোর্ট
  • ভিসা আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ভোটার আইডি কার্ড
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
  • কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
  • কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • জব অফার লেটার
  • ওয়ার্ক পারমিট
  • ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (যদি লাগে)
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট

সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন

সার্বিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চাইলে আপনার সামনে বর্তমানে কয়েকটি পথ খোলা আছে। সার্বিয়ার সরকারি নির্দেশনা অনুসারে, আপনি খুব সহজে অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এছাড়াও, আপনি চাইলে কোনো এজেন্সির সাথে কথা বলেও আবেদন করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার মোট ভিসা খরচ অনেকটাই বেশি হবে। যদি সার্বিয়ায় আপনার কোনো পরিচিত ঘনিষ্ঠ জন থাকে, তাহলে তাদের সাহায্য নিয়েও আপনি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।

আপনি যদি ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্বিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তবে গুগল ক্রোম ব্রাউজারে গিয়ে সার্চ অপশনে "সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন" লিখে খুঁজুন। সার্চ রেজাল্টের একদম শুরুতে আপনি ভিসা আবেদনের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটটি পেয়ে যাবেন।

সেই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিয়ে আপনি আপনার ভিসার আবেদন করতে পারবেন। এই আবেদনের জন্য অবশ্যই আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের দরকার পড়বে। 

এবার চলুন সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদনের জন্য ঠিক কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন জেনে নেইঃ 
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট।
  • পাসপোর্ট সাইজের কয়েকটি রঙিন ছবি।
  • ইনভাইটেশন লেটার।
  • ইংরেজি ভাষার উপর দক্ষতা।
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট।
  • করোনা ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট।
  • নিজের হাতের লেখার একটি কভার লেটার।
  • ইনকাম ট্যাক্স রিপোর্ট ফটোকপি।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আপনাকে যে কাজের ভিসায় যেতে হবে, তার অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।

সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চেক

সার্বিয়ার কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অনেকেই সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করেন। আবার কিছু মানুষ এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমেও সার্বিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করে থাকেন।

তবে দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমানে কিছু প্রতারক দালাল এবং এজেন্সির লোকজনের কারণে সাধারণ মানুষজন প্রায়শই নকল ভিসার শিকার হচ্ছেন। এ কারণে অনেকেই তাদের হাতে থাকা ভিসাটি আসল না নকল, তা যাচাই করতে চান।

বর্তমানে অনলাইন প্রক্রিয়ায় ঘরে বসেই খুব সহজে সার্বিয়ার যেকোনো ভিসা চেক করা সম্ভব। আপনি যদি আপনার হাতে থাকা ভিসাটি অনলাইনে যাচাই করতে চান, তবে সার্বিয়ার এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (https://www.companywall.rs/) প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে খুব সহজেই এটি পরীক্ষা করে নিতে পারবেন।

সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং টাইম

অনেকেই সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী আবার অনেকে এজেন্সির মাধ্যমে সার্বিয়ার কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করছেন। কিন্তু বেশিরভাগ আবেদনকারীরই সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রক্রিয়াকরণে ঠিক কত সময় লাগে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকে না।

সাধারণত, যদি আপনারা আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো সঠিকভাবে জমা দেন, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সময়ের মধ্যেই সার্বিয়ার ভিসা হাতে পেয়ে যাবেন। অন্যদিকে, কাগজপত্র সঠিকভাবে না দিলে বেশি সময় লাগতে পারে। সাধারণভাবে, সার্বিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে ৯০ দিন থেকে ১২০ দিন সময় লাগে, তবে ক্ষেত্রবিশেষে আরও ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত বেশি সময় লাগতে পারে।

সার্বিয়া বেতন কত ২০২৬

সার্বিয়াকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করা হয়, যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই কাজের ধরন এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়। সাধারণত, বিভিন্ন কোম্পানির কাজগুলিতে বেতন তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
সার্বিয়া বেতন কত
এই কারণে, যদি আপনি সার্বিয়ার ভালো কোনো কোম্পানিতে কাজ পান, তাহলে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তবে, সার্বিয়ার বিভিন্ন কোম্পানির কাজের জন্য সবসময় ভিসার আবেদন করা যায় না; এর জন্য আপনাকে সার্কুলারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

প্রতি বছর নির্দিষ্ট একটা সময়ে সার্বিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। সেই সময় আপনারা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সার্বিয়ায় মূলত কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে বেতন দেওয়া হয়।
  • আপনি যদি ভালো কোনো পদে কাজের জন্য যেতে পারেন, তাহলে মাসে ৪,০০,০০০ থেকে ৬,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।
  • অন্যদিকে, যদি আপনার কাজের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা খুব ভালো না থাকে, তবে মাসে ৭০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে।
এছাড়াও, আপনার কাজের ক্যাটাগরি (ধরণ), অভিজ্ঞতা এবং ওভারটাইম করার সুযোগ থাকলে প্রতি মাসে ৩,৫০,০০০ টাকা থেকে ৬,০০,০০০ টাকা অনায়াসে উপার্জন করা সম্ভব।

এজন্য, মাসে বেশি টাকা ইনকাম করতে চাইলে আপনার ইংরেজি ভাষার দক্ষতা এবং কাজের ওপর অভিজ্ঞতা থাকাটা আবশ্যক।

সার্বিয়া সর্বনিম্ন বেতন কত

সার্বিয়ান দিনারের মান প্রায় বাংলাদেশের টাকার মানের সমান। এই উন্নয়নশীল দেশটিতে কাজের সর্বনিম্ন বেতন হলো ৬৪,৪৭৪ টাকা। কাজের বেসিক ডিউটি সাধারণত সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা নির্ধারিত থাকে। তবে, কৃষি এবং কনস্ট্রাকশনের মতো কিছু কিছু কাজের ক্ষেত্রে এই ডিউটি দীর্ঘতর হতে পারে।

অতিরিক্ত সময় কাজ করলে আপনি ওভারটাইম হিসেবে মজুরি পাবেন। এছাড়াও, ছুটির দিনেও চাইলে ওভারটাইম কাজ করা যায়। ছুটির প্রসঙ্গে, কর্মীরা বাৎসরিক ছুটি প্রায় ২০ দিন পান। আপনি যদি কোনো কোম্পানিতে কাজ করেন, তবে সপ্তাহে দুই দিন অফিসিয়াল ছুটি পাবেন।

সার্বিয়া সর্বোচ্চ বেতন কত

শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন উচ্চপদস্থ কাজের ক্ষেত্রে সার্বিয়ায় সাধারণত সর্বোচ্চ বেতন প্রায় ১ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এছাড়াও, সার্বিয়ায় ওভারটাইম কাজের জন্য অতিরিক্ত মজুরি দেওয়া হয়। সাধারণত একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ডিউটি করতে হয়।

সার্বিয়া কৃষি কাজের বেতন কত

সার্বিয়ায় কৃষিকাজের বেতন সাধারণত সিজনের ওপর নির্ভর করে। এছাড়াও, এটি অঞ্চলের ওপর ভিত্তি করে কম বা বেশি হতে পারে।

সাধারণত, কৃষি সিজনে এই কাজের ন্যূনতম বেতন প্রায় ৫০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং অঞ্চলভেদে তা ৭০,০০০ টাকা পর্যন্তও হতে পারে।

সার্বিয়া কাজের ভিসা বেতন কত

ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় সার্বিয়া বেশ উন্নত। এই কারণে সার্বিয়া যাওয়ার জন্য প্রধানত তিন ধরনের ভিসা প্রচলিত: সার্বিয়া স্টুডেন্ট ভিসা, সার্বিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা এবং সার্বিয়া কাজের ভিসা।

এই ভিসাগুলোর খরচ ভিন্ন ভিন্নভাবে নির্ধারিত। কাজের জন্য সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চাইলে খরচ সাধারণত বেশি হয়। তবে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে।

অনলাইনের মাধ্যমে ভিসা আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে আপনি সার্বিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আবেদন করার আগে সার্বিয়া কাজের ভিসার বেতন সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। গ্রাহকদের সুবিধার জন্য সেই বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো:

সার্বিয়া কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজের সুযোগ পেলে আপনি প্রতি মাসে ৮০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।

তবে, কনস্ট্রাকশন, ইলেকট্রিশিয়ান এবং ড্রাইভিং-এর মতো বিশেষ কিছু কাজে যেতে পারলে মাসিক আয় ৩,৫০,০০০ থেকে ৬,০০,০০০ টাকারও বেশি হতে পারে। যদি অভিজ্ঞতা ছাড়া সার্বিয়ার কোনো কোম্পানিতে সাধারণ কাজের জন্য যান, সেক্ষেত্রে মাসে ৫০,০০০ থেকে ৯০,০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

সার্বিয়া কোন কাজের কত বেতন

সার্বিয়ায় বিভিন্ন কাজের বেতন বাংলাদেশী টাকায় আনুমানিক নিম্নরূপ:
  • ইলেকট্রিশিয়ান: ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা
  • ইলেকট্রনিক্স টেকনিশিয়ান: ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
  • মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার: ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা
  • ড্রাইভার: ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা
  • নির্মাণকর্মী: ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা
  • হোটেল/রেস্তোরাঁ কর্মী: ৪০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা
  • কুক (রেস্তোরাঁ): ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা
  • সিকিউরিটি গার্ড: ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা
  • ফ্যাক্টরি কর্মী: ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা
  • গ্রাফিক ডিজাইনার: ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা
  • ফিনান্স/অ্যাকাউন্টিং: ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
  • অফিস সহায়ক/ক্লার্ক: ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা
  • মার্কেটিং/সেলস এক্সিকিউটিভ: ৫০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা
  • আইটি স্পেশালিস্ট: ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা
  • ওয়েব ডেভেলপার: ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
  • নির্মাণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক: ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা
  • ম্যানুফ্যাকচারিং সুপারভাইজার: ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার: ৫০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা
  • স্বাস্থ্যকর্মী (নার্স): ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা
  • অ্যাকাউন্টেন্ট: ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা
  • ভেটেরিনারিয়ান: ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার  টাকা
  • ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট: ৭০ হাজার থেকে ১,০০,০০০ টাকা
  • অটোমোবাইল মেকানিক: ৬০ হাজার থেকে ৮০,০০০ টাকা
  • ডাটা এনালিস্ট: ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার  টাকা
  • কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার: ৮০হাজার  থেকে ১ লাখ ৫০হাজার  টাকা
  • ডিজিটাল মার্কেটিং স্পেশালিস্ট: ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা
  • টেকনিক্যাল সাপোর্ট স্পেশালিস্ট: ৫০ হাজার থেকে ৮০,০০০ টাকা
  • সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ: ৪৫  হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা
  • ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট: ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা
  • বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার: ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
  • কনটেন্ট রাইটার: ৪০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা
  • এনিমেশন স্পেশালিস্ট: ৬০ হাজার থেকে ১,০০,০০০ টাকা
  • জেনারেল লেবার: ৩০ হাজার থেকে ৫০হাজার  টাকা
  • হেলথ অ্যান্ড সেফটি অফিসার: ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা
  • অথেনটিকেশন/টেস্টিং ইঞ্জিনিয়ার: ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা
এই তথ্যগুলো বাজারের চাহিদা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের অবস্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

সার্বিয়া কোন কাজের বেতন বেশি?

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরা সার্বিয়াতে গিয়ে দক্ষতাভিত্তিক কাজই সবচেয়ে বেশি করে থাকেন। প্রবাসীদের দৃষ্টিকোণ থেকে সার্বিয়ার কোন কাজগুলোর বেতন বেশি, তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো:
  • ডেলিভারি ম্যান
  • রেস্টুরেন্টের ওয়েটার
  • ড্রাইভার
  • ইলেকট্রিশিয়ান
  • প্লাম্বার
  • অটোমোবাইল সার্ভিস
  • কনস্ট্রাকশন (রাজমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি, ওয়েল্ডার)
সার্বিয়ার কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চাইলে, যে কাজগুলোর চাহিদা ও বেতন বেশি, সেগুলোর মধ্য থেকে অন্তত একটি কাজের উপর আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে যাওয়া উচিত।

সার্বিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি

বর্তমানে অনেকেই সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজের জন্য যাওয়ার আগে জানতে চান যে সেখানে কোন কাজগুলোর চাহিদা বেশি। আপনি যদি সার্বিয়াতে বিভিন্ন কাজের জন্য যেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যেতে হবে।

কারণ বর্তমানে কাজের জন্য শুধুমাত্র এই ভিসাটিই খোলা আছে। ভালো খবর হলো, সার্বিয়াতে যে কাজগুলোর চাহিদা বেশি, সেগুলোর বেতনও সাধারণত অনেক বেশি হয়ে থাকে।

সার্বিয়াতে কাজের সুযোগ প্রচুর, তবে কিছু বিশেষ পেশার চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেশি। এই চাহিদামূলক পেশাগুলোতে বেতনও অনেক বেশি দেওয়া হয়। সার্বিয়ায় যে কাজগুলোর চাহিদা বেশি, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
  • আইটি এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
  • ইলেকট্রিশিয়ান
  • মেকানিক্যাল এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
  • স্বাস্থ্যকর্মী
  • ড্রাইভার
  • ফ্যাক্টরি কর্মী
  • কৃষি শ্রমিক
  • গ্রাফিক ডিজাইনার
  • মার্কেটিং এবং বিক্রয়
  • ডাটা অ্যানালিস্ট
  • ফিনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং
  • টেকনিক্যাল সাপোর্ট
  • অটোমোবাইল টেকনিশিয়ান
  • সিকিউরিটি গার্ড
  • কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার
এই সব কাজের জন্য বেতনও তুলনামূলকভাবে ভালো, যা বিদেশি কর্মীদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলে।

সার্বিয়ায় কাজ করার সুবিধা

সার্বিয়ায় কাজ করার অনেক সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হলো:
  • তুলনামূলকভাবে উচ্চ বেতন: সার্বিয়ার বেতন পূর্ব ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি।
  • কম জীবনযাত্রার খরচ: এখানে জীবনযাত্রার খরচ অনেক পশ্চিমা দেশের তুলনায় সাশ্রয়ী।
  • সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য: সার্বিয়ার পাহাড়, নদী এবং হ্রদের মতো মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য রয়েছে।
  • সমৃদ্ধ সংস্কৃতি: সার্বিয়ার একটি দীর্ঘ ইতিহাস এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে।
  • বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ: সার্বিয়ানরা সাধারণত খুব বন্ধুত্বপূর্ণ এবং অতিথিপরায়ণ।
এগুলো সার্বিয়ায় কাজ করার অভিজ্ঞতাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

প্রশ্ন: সার্বিয়া ভিসা আপডেট কি?
উত্তর: বর্তমানে বাংলাদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে সার্বিয়া ভিসা তৈরির প্রক্রিয়া অপরিবর্তিত রয়েছে।

প্রশ্ন: সার্বিয়া ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সময় কত?
উত্তর: সাধারণত সার্বিয়া ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করতে ১০ থেকে ৩০ কর্ম দিবস পর্যন্ত সময় লাগে।

প্রশ্ন: সার্বিয়ায় কোথায় ঘুরতে যাওয়া উচিত?
উত্তর: বেলগ্রেড, নোভি সাদ, এবং কুজেভিচের মতো স্থানগুলো সুন্দর।

প্রশ্ন: সার্বিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন?
উত্তর: সার্বিয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত এবং আন্তর্জাতিক মানের।

প্রশ্ন: সার্বিয়ায় কাজের সময়সীমা কেমন?
উত্তর: সাধারণত ৮ ঘণ্টা কাজের সময়, তবে এটি খাতভেদে ভিন্ন হতে পারে।

প্রশ্ন: সার্বিয়ার সংস্কৃতি কেমন?
উত্তর: সার্বিয়ার সংস্কৃতি সমৃদ্ধ এবং এর ইতিহাস গভীর।

প্রশ্ন: সার্বিয়ার মানুষ কেমন?
উত্তর: সার্বিয়ানরা সাধারণত বন্ধুত্বপূর্ণ ও অতিথিপরায়ণ।

লেখকের শেষ মতামত

সার্বিয়ায় বেতন সাধারণত কাজের ধরণ ও আপনার অভিজ্ঞতার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। বিশেষ করে অভিজ্ঞ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বেতনের চেয়ে প্রায় ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা বেশি বেতন দেওয়া হতে পারে। এছাড়াও, আপনি কোন অঞ্চলে কাজ করছেন, আপনার শিক্ষা এবং ভাষাগত যোগ্যতা অনুযায়ীও বেতনের তারতম্য ঘটে।

সার্বিয়া ইউরোপের একটি উন্নত দেশ হওয়ায় অনেকেই কাজের জন্য সার্বিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে সেখানে যেতে আগ্রহী হন। তবে, তাদের মধ্যে অনেকেরই এই ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং সেখানে বিভিন্ন কাজের বেতন সম্পর্কে ধারণা থাকে না।

সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই সার্বিয়ার বেতন কাঠামো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। উপরে উল্লিখিত এক বা একাধিক কাজের ওপর ভালো দক্ষতা অর্জন করে অভিজ্ঞতা নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এতে আপনি অনেক কাজ পাওয়ার সুযোগ পাবেন এবং প্রতি মাসে ভালো পরিমাণ বেতন অর্জন করতে পারবেন।

এই পোস্টের মাধ্যমে সবার সুবিধার্থে সার্বিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং সেখানে বিভিন্ন কাজের বেতন সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url