সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি - সিঙ্গাপুরে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতন ২০২৬

প্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশি কাজের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমান, আর সিঙ্গাপুর তাদের পছন্দের গন্তব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিদেশ যাওয়ার আগে সবার মনে যে প্রশ্নটি ঘোরাফেরা করে, তা হলো সিঙ্গাপুরে আসলে কত টাকা বেতন পাওয়া যায়? দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অনেকেই এই বিষয়ে সঠিক তথ্য না জেনে বিদেশে পাড়ি জমায়। 
সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি
অনেকে তো আবার বাড়িঘর বিক্রি করে কিংবা চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ভিসা আর টিকিটের টাকা জোগাড় করেন। এরপর সিঙ্গাপুরে পৌঁছেই বুঝতে পারেন যে সেখানকার বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

তাই, আপনারা যারা বিদেশে যাওয়ার কথা ভাবছেন, তাদের কাছে আমার অনুরোধ ভালোভাবে খোঁজ নিন, যাচাই-বাছাই করুন এবং তারপর সিদ্ধান্ত নিন। সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং সেখানে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতন কেমন, তা বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি

সিঙ্গাপুর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের বসবাসের একটি কেন্দ্র, এর প্রধান কারণ হলো রাষ্ট্রটির শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ অর্থনীতি। দেশটি উন্নত হওয়ায় এখানে কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। তাই কাজের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর যেতে চাইলে আগে ভালোভাবে সবকিছু জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
সিঙ্গাপুর হলো একটি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় দেশ, যেখানে বিভিন্ন জাতি এবং সংস্কৃতির মানুষের সহাবস্থান দেখা যায়। বিশ্বের প্রায় সকল দেশের মানুষই এখানে বসবাস করে। একটি উন্নত রাষ্ট্র হওয়ায় সিঙ্গাপুরে প্রচুর কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

সিঙ্গাপুরে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশীদের জন্য সেখানকার কোন কাজের চাহিদা বেশি, তা জানা অত্যন্ত জরুরি। যদি আপনি সঠিক চাহিদা সম্পর্কে অবগত থাকেন, তাহলে সিঙ্গাপুরে গিয়ে কাজ খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশীদের মধ্যে সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে নির্মাণ শ্রমিক, ফ্যাক্টরি শ্রমিক, শিপইয়ার্ড শ্রমিক, ইলেকট্রিক্যাল টেকনিশিয়ান ও ইঞ্জিনিয়ার, নার্স, আইটি এক্সপার্ট এবং হোটেল বয়ের মতো পেশাগুলোতে। এই বিশেষ ক্ষেত্রগুলোতে সিঙ্গাপুর প্রায়শই দক্ষ কর্মী নিয়োগ করে থাকে।

সুতরাং, আপনি যদি সিঙ্গাপুর যেতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই এই উল্লেখিত সেক্টরগুলোতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে প্রবেশ করতে হবে। সিঙ্গাপুরে বর্তমানে যে সকল কাজের চাহিদা সবচাইতে বেশি, সেই কাজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলোঃ
  • নির্মাণ শ্রমিক 
  • ফ্যাক্টরি শ্রমিক
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী
  • নার্স 
  • হোটেল বয় 
  • ইঞ্জিনিয়ার 
  • সফটওয়্যার, এআই ও ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট।

নির্মাণ শ্রমিক

সিঙ্গাপুরে ক্রমাগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে নির্মাণ কাজের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলস্বরূপ, এই শিল্পে প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই কারণে সিঙ্গাপুর সরকার বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও অদক্ষ উভয় ধরনের নির্মাণ শ্রমিক নিয়োগ করছে। একারণে, বর্তমানে সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বেশি কাজের চাহিদা রয়েছে নির্মাণ শ্রমিকদের।

ফ্যাক্টরি শ্রমিক

অন্যান্য দেশের মতোই সিঙ্গাপুরেও প্রচুর ফ্যাক্টরি রয়েছে, যেখানে উৎপাদনের জন্য বিপুল সংখ্যক দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। ফ্যাক্টরিগুলোতে সাধারণত উৎপাদন কর্মী, মেশিন অপারেটর এবং টেকনিশিয়ান এই পদগুলোর কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।

তবে, ফ্যাক্টরি সংক্রান্ত কাজে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। কারণ, ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের কাজে দক্ষ না হলে সিঙ্গাপুর সরকার সাধারণত কর্মী নিয়োগ করে না। একারণেই বর্তমানে সিঙ্গাপুরে ফ্যাক্টরির ভিসারও প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী

সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেশ হওয়ায়, বিভিন্ন ভবন, রাস্তাঘাট এবং কর্মস্থল পরিষ্কার রাখার জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ করা হয়। সিঙ্গাপুরে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, তাই যারা সিঙ্গাপুর যেতে চান, তারা পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন।

নার্স

সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত হওয়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। সিঙ্গাপুরে নার্সিং এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবামূলক কাজের চাহিদা অনেক বেশি, আর সেই কারণে সিঙ্গাপুর সরকার বাংলাদেশ থেকে দক্ষ নার্স নিয়োগ দিয়ে থাকে।

অন্য দেশের তুলনায় সিঙ্গাপুরে এই কাজের চাহিদা এবং বেতন অনেক বেশি, তাই আপনারা নার্স হিসেবে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে পারেন।

হোটেল বয়

সিঙ্গাপুরে থ্রি স্টার থেকে শুরু করে সেভেন স্টার পর্যন্ত বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে, আর এই সকল হোটেলে প্রচুর সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন হয়। সিঙ্গাপুরে একজন হোটেল বয় সাধারণত $১৫০০ সিঙ্গাপুরি ডলার থেকে $২০০০ সিঙ্গাপুরি ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।

হোটেল বয় হিসেবে আপনাকে সাধারণত টেবিল পরিষ্কার করা, খাবার পরিবেশন করা এবং রুম পরিষ্কার করার মতো কাজগুলো করতে হবে। এই কাজগুলো সহজ হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ হোটেল বয় হিসেবে সিঙ্গাপুরে কাজে যান।

ইঞ্জিনিয়ার

বর্তমানে সিঙ্গাপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চাহিদা খুব বেশি। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে থাকেন, তাহলে এখনই সিঙ্গাপুরের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়াও, সিঙ্গাপুর সরকার বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পদে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো কাজের জন্য সিঙ্গাপুরে প্রচুর ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হয়।

সফটওয়্যার, এআই ও ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট

বর্তমান ডিজিটাল যুগে সিঙ্গাপুরের প্রযুক্তি এবং আইটি খাত প্রতিটি শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। সিঙ্গাপুর একটি প্রযুক্তি-নির্ভর দেশ হওয়ায় এখানে বর্তমানে প্রযুক্তি খাতে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান এবং অসংখ্য চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

ডেটা অ্যানালাইসিস, প্রোগ্রামিং ও সফটওয়্যার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো আইটি খাতগুলোতে সিঙ্গাপুরে এখনো দক্ষ লোকের প্রচুর অভাব রয়েছে। তাই আপনি যদি আইটি বা প্রযুক্তি খাতে দক্ষ হন, তাহলে সিঙ্গাপুরে গিয়ে আপনাকে বসে থাকতে হবে না।

আপনি চাইলে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার আগে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে নিতে পারেন। যখন আপনি সিঙ্গাপুরে কাজের উদ্দেশ্যে যাবেন, তখন অবশ্যই কোন কাজগুলোর চাহিদা বেশি এবং সেগুলোর বেতন কত, তা জেনে নেওয়া আপনার জন্য আবশ্যক।

সিঙ্গাপুর বেতন কত ২০২৬

সিঙ্গাপুরে কাজের বেতন সাধারণত কাজের ধরন, আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে। একজন প্রবাসী শ্রমিকের যোগ্যতা, নৈপুণ্য এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতনের তারতম্য ঘটে। 
সিঙ্গাপুর বেতন কত
সাধারণত, বিদেশের মাটিতে অভিবাসীদের বেতন তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হয়।
তবে, আপনি যদি কোনো বড় কোম্পানিতে চাকরি পান, তাহলে বেতনের পরিমাণ একটু বেশি হতে পারে। সিঙ্গাপুরের ছোট ছোট কোম্পানিগুলোতে কাজ করলে বেতন কম পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের মুদ্রায় মাসিক বেতনের পরিমাণ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৪০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

যারা নতুন সিঙ্গাপুরে আসবেন, তাদের বেতন তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সিঙ্গাপুরে কাজের জন্য আসার আগে যে কাজটি করবেন, সেটির ওপর ট্রেনিং নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে আসাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

আপনি যদি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে ভালো কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকে এবং বেতনের পরিমাণও বেশি হবে। সিঙ্গাপুরে অন্যান্য প্রবাসীদের তুলনায় দেশটির নাগরিকদের বেতনের পরিমাণ সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তাদের গড় মাসিক বেতনের পরিমাণ আনুমানিক ৪ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

সিঙ্গাপুর সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৬

সিঙ্গাপুর সরকার এখনও দেশটির জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দেয়নি। যারা সিঙ্গাপুরে কাজের সন্ধানে যেতে চাইছেন, তাদের জন্য সেখানকার কাজের চাহিদা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, প্রবাসী শ্রমিকদের বেতন তাদের কাজের দক্ষতা বা অদক্ষতার ওপর নির্ভর করে কম-বেশি হতে পারে।

বঙ্গ আইটি ব্লক থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, একজন দক্ষ সিঙ্গাপুর প্রবাসী কর্মীর মাসিক গড় বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা এবং একজন অদক্ষ প্রবাসী শ্রমিকের মাসিক গড় বেতন প্রায় ২৫ হাজার টাকা। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন।

অনেক প্রবাসগামী ভাই আছেন যারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য জমিজমা বিক্রি করে বা ধার করে টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুর পাড়ি জমাচ্ছেন। তাদের অবশ্যই সিঙ্গাপুরের সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো সম্পর্কে জানা দরকার। বাংলাদেশ থেকে কাজের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুরে যাওয়া শ্রমিকদের মাসিক বেতন সাধারণত সর্বনিম্ন প্রায় ৪০ হাজার টাকার কাছাকাছি হয়ে থাকে।

সিঙ্গাপুরে সর্বোচ্চ বেতন কত ২০২৬

সিঙ্গাপুরে বেতন মূলত আপনার কাজের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত সর্বোচ্চ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পেশাজীবীদের বেতন সবচেয়ে বেশি হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, তথ্য প্রযুক্তি, ব্যাংকিং এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে কর্মরত পেশাজীবীরা সিঙ্গাপুরে সর্বোচ্চ বেতন পেয়ে থাকেন।
এই ধরনের দক্ষ পেশাজীবীদের মাসিক বেতন সিঙ্গাপুরে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে। আপনি যদি সিঙ্গাপুরে গিয়ে বেশি বেতনের উপার্জন করতে চান, তবে অবশ্যই আপনার কাজের ওপর যথাযথ ট্রেনিং নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে যাওয়া উচিত।

কারণ পৃথিবীর সব দেশেই দক্ষতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই প্রবাসী ভাইদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা যারা কাজের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করে প্রবাসে যাওয়া উচিত।

এছাড়াও সিঙ্গাপুরে কোন কাজগুলোর চাহিদা বেশি, সে সম্পর্কে জেনে যাওয়া দরকার। কারণ এত টাকা খরচ করে প্রবাসে গিয়ে যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই টাকা তুলতে না পারেন, তাহলে আফসোস থেকে যায়। তাই এই বিষয়গুলো মাথায় রাখা আপনার জন্য মঙ্গলজনক।

সিঙ্গাপুর ড্রাইভিং ভিসা বেতন কত ২০২৬

সিঙ্গাপুরে 'ড্রাইভিং ভিসা' বলে নির্দিষ্ট কোনো ভিসা নেই। একসময় সিঙ্গাপুরে ড্রাইভিং পেশার প্রচুর চাহিদা থাকলেও, বর্তমানে সেই চাহিদা অনেকটাই কমে আসছে। সুতরাং, যদি কোনো এজেন্সি বা দালাল আপনাকে সিঙ্গাপুরের 'ড্রাইভিং ভিসার' কথা বলে টাকা নিতে চায়, তবে বুঝবেন যে তারা প্রতারণা করছে।

আসলে, কোনো বিশেষ ড্রাইভিং ভিসার প্রয়োজন হয় না। আপনি সাধারণ ওয়ার্ক পারমিট বা ভিসাতেই বিভিন্ন কোম্পানিতে ড্রাইভিং-এর কাজ করতে পারবেন। এমনকি ড্রাইভিং কাজের পাশাপাশি আপনি কনস্ট্রাকশনের কাজও করার সুযোগ পেতে পারেন।

সিঙ্গাপুরে ড্রাইভিং পেশার জন্য কোনো নির্দিষ্ট বা ধরা-বাঁধা বেতন কাঠামো নেই। তবে, যারা বর্তমানে এই পেশায় কাজ করছেন তাদের তথ্য অনুযায়ী একটি আনুমানিক হিসাব পাওয়া যায়। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে ড্রাইভিং পেশায় নিযুক্ত কর্মীরা মাসিক প্রায় $১০০০ থেকে $১৮০০ ডলার পর্যন্ত বেতন পান। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮১,০০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

সিঙ্গাপুরে ওয়েল্ডিং কাজের বেতন কত ২০২৬

সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন ধরনের ওয়েল্ডিং কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আপনি কী ধরনের ওয়েল্ডিং-এর কাজ করেন তার ওপর আপনার বেতন নির্ভর করে। সিঙ্গাপুরে ওয়েল্ডিং শ্রমিকদের বেতনে তারতম্য দেখা যায় কারো বেতন বেশি, আবার কারো বেতন কম।

সাধারণত, সিঙ্গাপুরে একজন ওয়েল্ডিং শ্রমিকের মাসিক বেতন প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ ডলার হয়ে থাকে। তবে, আপনি যদি নিয়মিত ওভারটাইম কাজ করেন, তাহলে আপনার মাসিক বেতনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। ওভারটাইম সহ বেতন প্রায় ১৪০০ থেকে ১৫০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

বাংলাদেশি টাকায় এই অঙ্কটা প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাঁড়াতে পারে। আপনি যদি প্রতি মাসে নিয়মিত ওভারটাইম করতে পারেন, তাহলে অনেক সময় দেখা যায় আপনার মূল বেতনের চেয়ে ওভারটাইমের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়।

যদি আপনি আপনার পরিবারের সচ্ছলতা আনতে চান, তবে আপনার প্রতিদিন ওভারটাইম কাজ করা উচিত। ওভারটাইম করার মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার মাসিক বেতন প্রায় দ্বিগুণ করতে পারবেন। এর পাশাপাশি, সিঙ্গাপুরে বর্তমানে কোন কাজের চাহিদা বেশি, সেই কাজের খোঁজ রাখাও আপনার জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।

সিঙ্গাপুরের কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত ২০২৬

আপনারা যারা সিঙ্গাপুরে কনস্ট্রাকশন কাজে যেতে চান, তাদের মনে রাখা উচিত যে কাজের বেতন মূলত আপনার দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করবে। সিঙ্গাপুরে কনস্ট্রাকশন খাত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্রুত বর্ধনশীল শিল্প। 
এই দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন, সেতু এবং অন্যান্য নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সবসময়ই চলছে, যার ফলে নির্মাণ শ্রমিকদের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সিঙ্গাপুরে নির্মাণ কাজের বেতন সাধারণত বেশ ভালো হয় এবং এটি শ্রমিকের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে কমবেশি হয়ে থাকে।

সিঙ্গাপুরে নির্মাণ (কনস্ট্রাকশন) শ্রমিকদের মাসিক বেতন সাধারণত তাদের কাজের ধরন ও দক্ষতার ওপর নির্ভর করে।

বেতন কাঠামো:
  • সাধারণ নির্মাণ শ্রমিক: যারা সাধারণত ম্যানুয়াল কাজ করে, তাদের মাসিক বেতন সাধারণত ১,২০০ থেকে ১,৮০০ সিঙ্গাপুর ডলার হতে পারে।
  • দক্ষ ও প্রযুক্তিভিত্তিক শ্রমিক: বিশেষ দক্ষতা বা প্রযুক্তি নির্ভর কাজে নিয়োজিত শ্রমিক, যেমন মেশিন অপারেটর বা ইলেক্ট্রিশিয়ান, তাদের বেতন আরও বেশি হয়। এক্ষেত্রে মাসিক আয় ২,০০০ থেকে ২,৫০০ সিঙ্গাপুর ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
  • সুপারভাইজার ও ম্যানেজার: সুপারভাইজার বা কনস্ট্রাকশন ম্যানেজারদের বেতন স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেশি। তাদের মাসিক বেতন ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ সিঙ্গাপুর ডলার পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষ করে যারা বড় প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় যুক্ত, তাদের আয় আরও বেশি হওয়ার সুযোগ থাকে।
অন্যান্য সুবিধা:

সিঙ্গাপুরে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য কাজের পরিবেশ ও সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত, যা এটিকে অন্যান্য দেশের তুলনায় একটি আকর্ষণীয় কর্মস্থল করে তুলেছে। এই খাতে নিয়মিতভাবে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ করা হয়, তবে কাজ করার জন্য বৈধ কর্মী ভিসা থাকা আবশ্যক।

বেতন ভালো হলেও, বিদেশি শ্রমিকদের জন্য কিছু বিধিনিষেধ ও নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তবে আপনার কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা যত বেশি হবে, বেতনের পরিমাণও তত বৃদ্ধি পাবে।

সিঙ্গাপুর ইলেকট্রিশিয়ান বেতন কত

সিঙ্গাপুরে একজন ইলেকট্রিশিয়ানের বেতন সাধারণত কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। বর্তমানে একজন ইলেকট্রিশিয়ানের সর্বনিম্ন মাসিক বেতন সাধারণত প্রায় ৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

তবে, একজন দক্ষ ইলেকট্রিশিয়ান নতুনদের তুলনায় বেশি বেতন পান। তাদের বেতন নতুনদের তুলনায় সর্বনিম্ন প্রায় ৫,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা বেশি হতে পারে এবং সর্বোচ্চ ক্ষেত্রে প্রায় ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত বেশি প্রদান করা হয়।

সিঙ্গাপুর শ্রমিকদের বেতন কত

সিঙ্গাপুরের শ্রমিকদের বেতন নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। সিঙ্গাপুর একটি উন্নত দেশ হওয়ায় প্রতি বছর বহু মানুষ কাজের জন্য শ্রমিকের ভিসা নিয়ে সেখানে যায়। বর্তমানে সিঙ্গাপুরের শ্রমিকদের বেতন তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম।

যেমন, যেসব প্রবাসী ভাইয়েরা কনস্ট্রাকশন কাজ করেন, তাদের আনুমানিক দৈনিক বেতন ২০ থেকে ২৫ সিঙ্গাপুর ডলারের আশেপাশে থাকে। মাসিক বেতন হিসেবে এটি ৬০০ থেকে ৮০০ সিঙ্গাপুর ডলারের কাছাকাছি হয়। তবে, মনে রাখতে হবে যে শ্রমিকের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেতন কম বা বেশি হতে পারে।

সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন ধরনের ওয়েল্ডিং-এর কাজ রয়েছে এবং কাজের ধরন অনুযায়ী বেতন ভিন্ন হয়। কিছু কিছু ওয়েল্ডিং কাজের বেতন বেশি হতে পারে, আবার কিছুর কম হতে পারে। একজন ওয়েল্ডিং শ্রমিকের মাসিক বেসিক বেতন সাধারণত ৭০০ থেকে ৮০০ সিঙ্গাপুর ডলার হয়ে থাকে।

তবে, ওভারটাইম কাজ করলে সেই বেতন বেড়ে ১৪০০ থেকে ১৫০০ সিঙ্গাপুর ডলারে দাঁড়ায়, যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মতো। সাধারণত, যদি আপনি ওভারটাইম করতে পারেন, তবে বেসিক বেতনের দ্বিগুণ পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।

সিঙ্গাপুরে কোন কাজের বেতন বেশি

সিঙ্গাপুরে তুলনামূলকভাবে বেশি বেতন পেতে হলে আপনার অবশ্যই কাজের সার্টিফিকেট থাকা প্রয়োজন। সেখানে টেকনিশিয়ানদের বেতন সবচেয়ে বেশি। কাজের পাশাপাশি টেকনিশিয়ান হওয়ার জন্য আপনি অনলাইনে ক্লাস বুকিং করতে পারেন এবং পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারেন।
এছাড়াও কিছু বিশেষ কাজ রয়েছে, যেমন: মার্কেটিং ম্যানেজার, সুপারভাইজার এবং সিনিয়র কোয়ালিটি ইঞ্জিনিয়ার। এই সকল পদে মাসিক বেতন হিসেবে ৩ লক্ষ টাকা বা তারও বেশি টাকা দেওয়া হয়ে থাকে। আপনার যদি কাজের প্রতি ভালো প্রতিভা থাকে এবং আপনি কাজের মাধ্যমে কোম্পানিকে লাভ দেখাতে পারেন, সেক্ষেত্রে কোম্পানি আপনাকে আরও বেশি বেতন দিয়ে রেখে দেবে।

এছাড়াও সিঙ্গাপুরে বাড়তি টাকা আয় করার আরও কিছু উপায় রয়েছে। সেখানে মার্কেটিং ও ব্লগিং করার মাধ্যমে, অথবা বিভিন্ন কোম্পানির জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন করে দেওয়ার মাধ্যমে মাসে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

প্রশ্ন: সিঙ্গাপুরের মুদ্রার নাম কি?
উত্তর: সিঙ্গাপুরের মুদ্রার নাম হলো ডলার।

প্রশ্ন: সিঙ্গাপুরের টাকার রেট কত?
উত্তর: সিঙ্গাপুরের ১ ডলার সমান বাংলাদেশের প্রায় ৯৪ টাকা।

লেখকের শেষ মতামত

এই পোস্টে সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং সেখানে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতন কত, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন যে সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং কোন কাজের বেতন বেশি।

যদি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিন যাতে তারাও সিঙ্গাপুরে কোন কাজের চাহিদা বেশি, তা জানতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url