নেদারল্যান্ডস যেতে কত টাকা লাগে ২০২৬ - প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও বয়সসীমা জানুন
  নেদারল্যান্ডস যেতে কত টাকা লাগে: ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশ নেদারল্যান্ডস-এ গিয়ে
  উচ্চ বেতনের চাকরি এবং একটি ভালো ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেন আমাদের দেশের
  অনেকে। আপনারও যদি নেদারল্যান্ডস যাওয়ার আগ্রহ থাকে, তবে আপনি সঠিক জায়গায়
  এসেছেন!
  আমাদের অনেক ভাই ও বোন নেদারল্যান্ডস যেতে কত টাকা লাগে এবং ভিসার জন্য কী কী
  কাগজপত্র প্রয়োজন, সে সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকের এই পোস্টে আমরা সেই বিষয়গুলো
  নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব। তো চলুন, আর দেরি না করে শুরু করা যাক!
পোষ্ট সূচিপত্রঃ 
নেদারল্যান্ডস যেতে কত টাকা লাগে
    নেদারল্যান্ডস যেতে আপনার মোট কত টাকা খরচ হবে, তা মূলত নির্ভর করে আপনি কোন
    ক্যাটাগরির ভিসার জন্য আবেদন করছেন তার ওপর। সেখানে বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরির
    ভিসা রয়েছে, যেমন নেদারল্যান্ডস টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট
    ভিসা, জব ভিসা, কোম্পানি ভিসা এবং রেস্টুরেন্ট ভিসা ইত্যাদি।
  
  
    আপনার খরচ অনেকটাই কমে আসবে যদি পরিবারের কোনো সদস্য নেদারল্যান্ডসে থাকেন। সেই
    ক্ষেত্রে আপনার আনুমানিক খরচ হতে পারে ৯ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকা। তবে, যদি আপনি
    কোনো এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে নেদারল্যান্ডস যাওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে খরচ
    উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে আপনার মোট খরচ ১৪ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা
    পর্যন্ত হতে পারে।
  
  
    বর্তমানে সরকারিভাবে নেদারল্যান্ডস যাওয়ার একটা চমৎকার সুযোগ রয়েছে। প্রতি
    বছর বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে একটি সার্কুলার বা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আপনি
    যদি সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং বিজয়ী হতে পারেন, তবে প্রায় অর্ধেক মূল্যে
    নেদারল্যান্ডস যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
  
  
    সাধারণত, নেদারল্যান্ডস যেতে যেখানে আপনার খরচ হতে পারে ৯ লাখ থেকে ১২ লাখ
    টাকা, সেখানে সরকারিভাবে নির্বাচিত হলে আপনি মাত্র ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায় সেখানে
    যেতে পারবেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন, সরকারিভাবে গেলে খরচের পরিমাণ কতটা কমে আসে।
    তবে এক্ষেত্রে আপনার ভাগ্য ভালো হওয়া জরুরি, কারণ এই সার্কুলারে বিজয়ী হলেই
    আপনি এই সুযোগটি গ্রহণ করতে পারবেন।
  
  নেদারল্যান্ডস কাজের ভিসার খরচ কত
    নেদারল্যান্ডসের কাজের ভিসার খরচ কত, সেটা নিয়ে আপনার মনে প্রশ্ন আসা
    স্বাভাবিক। তবে এই খরচটা সরাসরি আপনার হাতে আসে না, কারণ নেদারল্যান্ডসের
    সিস্টেমটা একটু ভিন্ন। 
  
  এখানে খরচকে কয়েকটা ধাপে আলোচনা করা হলো, যাতে আপনি পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কারভাবে
  বুঝতে পারেন।
      📌আরো পড়ুন👉ওমান কোম্পানি ভিসার দাম কত
    
    
        ১. মূল আবেদন ফি এবং স্পন্সরশিপের ভূমিকাঃ নেদারল্যান্ডসের কাজের ভিসার
        ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ৯০ দিনের বেশি থাকার জন্য আপনাকে
        দীর্ঘমেয়াদী ভিসা এবং রেসিডেন্স পারমিট নিতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই
        আপনার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি আপনার পক্ষ থেকে নেদারল্যান্ডসের ইমিগ্রেশন
        সার্ভিস-এর কাছে আবেদন জমা দেন।
      
      
        এই আবেদনের জন্য যে প্রধান সরকারি ফি লাগে, সেটা কাজের ধরন অনুসারে সামান্য
        ভিন্ন হয়। যেমন, একজন হাইলি স্কিল্ড মাইগ্রেন্ট বা সাধারণ সিঙ্গেল পারমিট
        কর্মীর জন্য IND-এর মূল প্রক্রিয়াকরণ ফি বর্তমানে প্রায় ৩৫০ ইউরোর মতো।
      
      
        মানুষের মতো করে বললে, এই পুরো আবেদনের খরচটা প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে
        আপনার নিয়োগকর্তাই বহন করেন। কারণ, কোম্পানিই চায় আপনি দ্রুত
        নেদারল্যান্ডসে এসে কাজে যোগ দিন। তাই এই প্রধান ফি নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তা
        করার কথা নয়।
      
      
        ২. বাধ্যতামূলক অতিরিক্ত খরচঃ সরকারি ফি নিয়োগকর্তা দিলেও, ভিসা
        প্রক্রিয়ার কিছু খরচ আবেদনকারী হিসেবে আপনাকে নিজেকে বহন করতে হতে পারে:
      
      
        আপনার শিক্ষাগত সার্টিফিকেট, জন্ম সনদ, ম্যারেজ সার্টিফিকেট—এগুলো
        নেদারল্যান্ডস দূতাবাস থেকে সত্যায়িত বা নোটরাইজড করতে হয়। এই প্রতিটি
        ডকুমেন্টের জন্য আলাদা আলাদা ফি দিতে হয়, যার খরচ কয়েক হাজার টাকা হতে
        পারে।
      
      
        নেদারল্যান্ডসে প্রবেশের পর আপনার সেখানে থাকার পুরো সময়ের জন্য স্বাস্থ্য
        বীমা নেওয়া বাধ্যতামূলক। এটা আপনার প্রথম মাসের বেতন থেকে কাটা যেতে পারে,
        অথবা প্রথম দিকের খরচ হিসেবে আপনাকে নিজেকে বহন করতে হতে পারে। প্রতি মাসে
        এর খরচ প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ইউরো হতে পারে।
      
      
        কিছু কিছু ভিসা ক্যাটাগরির জন্য ডাচ ভাষা এবং সমাজ জ্ঞান পরীক্ষা দেওয়া
        বাধ্যতামূলক। এই পরীক্ষার ফি বর্তমানে প্রায় ১৫০ ইউরো। তবে, উচ্চ দক্ষ
        কর্মী বা ছাত্রদের ক্ষেত্রে সাধারণত এই পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
      
      
        ৩. ভ্রমণের খরচ এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ঃ এগুলো সরাসরি ভিসার খরচ না
        হলেও নেদারল্যান্ডস যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়:
      
      - বিমান টিকিট: ঢাকা থেকে আমস্টারডামের বিমান টিকিটের খরচ আপনার ভ্রমণের সময়ের ওপর নির্ভর করে। এটি সাধারণত ৬০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
 - প্রথম মাসের জীবনযাত্রা: সেখানে পৌঁছানোর পর প্রথম মাসের থাকা-খাওয়া এবং যাতায়াতের জন্য একটি প্রাথমিক বাজেট রাখা ভালো।
 
        মোটকথা, নেদারল্যান্ডসের কাজের ভিসা মানেই একটি স্পন্সরড ভিসা। এখানে আপনার
        সবচেয়ে বড় খরচ হলো কাগজপত্র প্রস্তুত করা, সত্যায়িত করা, এবং বিমান
        টিকিট কেনা। মূল সরকারি ভিসা ফি এবং ওয়ার্ক পারমিটের খরচ সাধারণত আপনার
        ডাচ নিয়োগকর্তা বহন করেন।
      
      নেদারল্যান্ডস স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত?
        নেদারল্যান্ডসে স্টুডেন্ট ভিসার খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন
        এবং এটি কয়েকটি বড় ভাগে বিভক্ত। এই খরচগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা
        থাকলে আপনি সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবেন:
      
      
        ১. টিউশন ফিঃ নেদারল্যান্ডসে পড়াশোনার সবচেয়ে বড় খরচ হলো টিউশন ফি।
        আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এই ফি নির্ভর করে আপনি কোন স্তরে পড়ছেন
        এবং কোন বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিচ্ছেন তার ওপর:
      
    
      📌আরো পড়ুন👉ওমান স্টুডেন্ট ভিসার দাম কত
    
    - স্নাতক প্রোগ্রাম: সাধারণত প্রতি বছর প্রায় ৮,০০০ ইউরো থেকে ১৫,০০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে।
 - স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম: সাধারণত প্রতি বছর প্রায় ১০,০০০ ইউরো থেকে ২০,০০০ ইউরো বা তার বেশিও হতে পারে।
 
        এই ফি আপনার পছন্দের কোর্স এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের ওপর অনেকটাই
        নির্ভরশীল। তবে মনে রাখবেন, বৃত্তি বা স্কলারশিপ পেলে এই খরচ অনেকটাই কমে
        আসে বা সম্পূর্ণরূপে মওকুফ হয়ে যায়।
      
      
        ২. ভিসা আবেদন ফিঃ ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য নেদারল্যান্ডসের ইমিগ্রেশন
        সার্ভিস-এর কাছে একটি ফি জমা দিতে হয়। এই ফি আপনার ইউনিভার্সিটি আপনার
        পক্ষ থেকে জমা দেয়, তবে শেষ পর্যন্ত এই খরচটি আপনাকেই পরিশোধ করতে হয়।
      
      
        স্টুডেন্ট রেসিডেন্স পারমিট ফি প্রায় $২৪৩ ইউরো। আপনার ইউনিভার্সিটি
        সাধারণত প্রথমে এই ফি পরিশোধ করে এবং পরে আপনার কাছে থেকে বা আপনার ব্লকড
        অ্যাকাউন্টের টাকা থেকে কেটে নেয়।
      
      
        ৩. ব্লকড ফান্ড বা আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণঃ এটি ভিসার জন্য সবচেয়ে
        গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় আর্থিক প্রয়োজনীয়তা। নেদারল্যান্ডস সরকার নিশ্চিত
        হতে চায় যে আপনি সেখানে গিয়ে থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করতে পারবেন।
      
      - জীবনযাত্রার খরচ: আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য নেদারল্যান্ডসে প্রতি মাসের জীবনযাত্রার ব্যয় বাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক বছরের জন্য "ব্লক" করে রাখতে হয়।
 - মোট ব্লকড ফান্ডের পরিমাণ: এক বছরের জন্য এই মোট অর্থের পরিমাণ সাধারণত প্রায় $১১,০০০ থেকে $১২,০০০ ইউরোর আশেপাশে দাঁড়ায়।
 
        ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এই অর্থ আপনার পড়াশোনার খরচ নয়। এটি কেবল আর্থিক
        স্বচ্ছলতার প্রমাণ হিসেবে জমা রাখা হয়। আপনি নেদারল্যান্ডসে পৌঁছানোর পর
        ডাচ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পরই কিস্তিতে কিস্তিতে এই টাকা তুলে নিয়ে
        আপনার দৈনন্দিন খরচ চালাতে পারবেন।
      
      
        ৪. অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচঃ ভিসা ও টিউশন ফির বাইরেও আরও কিছু খরচ রয়েছে
        যা আপনার প্রস্তুতিতে যুক্ত হয়:
      
      - স্বাস্থ্য বীমা: নেদারল্যান্ডসে স্বাস্থ্য বীমা থাকা বাধ্যতামূলক। এর জন্য বার্ষিক প্রায় $৭০০ থেকে $১,২০০ ইউরো খরচ হতে পারে। কিছু স্কলারশিপে এই খরচ বহন করা হয়।
 - আইইএলটিএস/টোফেল পরীক্ষা ফি: ভিসা আবেদনের আগেই আপনাকে ভাষা দক্ষতার প্রমাণ দিতে হয়।
 - ডকুমেন্ট প্রস্তুতি: আপনার শিক্ষাগত সনদপত্রের অনুবাদ, নোটরাইজেশন এবং দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়ন বাবদ কিছু টাকা খরচ হয়।
 - বিমান টিকিট: নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার জন্য বিমান টিকিটের খরচ।
 
        সার্বিকভাবে, নেদারল্যান্ডসে একজন শিক্ষার্থীকে প্রথম বছরে টিউশন ফি এবং
        ব্লকড ফান্ড সহ একটি বড় অঙ্কের অর্থের ব্যবস্থা করতে হয়। তবে, এই বড়
        অঙ্কের বেশির ভাগই আপনার নিজের পড়ালেখা ও জীবনযাত্রার জন্য খরচ হবে।
      
      নেদারল্যান্ডস টুরিষ্ট ভিসার খরচ কত?
        নেদারল্যান্ডস টুরিস্ট ভিসা মানে হলো শেনজেন ভিসা, যা আপনাকে
        নেদারল্যান্ডসসহ পুরো শেনজেন অঞ্চলের দেশগুলোতে ৯০ দিন পর্যন্ত থাকার সুযোগ
        দেয়। এই ভিসার খরচকে মূলত দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়: সরকারি ফি এবং
        আনুষঙ্গিক খরচ।
      
    
      📌আরো পড়ুন👉ওমান স্টুডেন্ট ভিসার দাম কত
    
    
        ১. প্রধান সরকারি ও সার্ভিস ফিঃ নেদারল্যান্ডসের টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনাকে
        একটি নির্দিষ্ট ফি সরকারিভাবে দিতে হয়। এই ফি প্রায় সকল শেনজেন দেশেই একই
        রকম থাকে।
      
      
        ভিসা ফি (প্রাপ্তবয়স্ক): প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বর্তমানে শেনজেন ভিসার মূল
        ফি হলো প্রায় ৯০ ইউরো। এই টাকার সমপরিমাণ বাংলাদেশী টাকা আপনাকে আবেদন
        করার সময় জমা দিতে হয়। টাকার অংক ইউরোর বিনিময় হারের ওপর নির্ভর করে
        সামান্য পরিবর্তিত হয়।
      
      
        ভিএফএস সার্ভিস ফি: যেহেতু বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস সরাসরি আবেদন
        গ্রহণ করে না, তারা ভিএফএস গ্লোবাল নামক একটি থার্ড-পার্টি সার্ভিস
        প্রোভাইডারের মাধ্যমে আবেদন নেয়। ভিএফএস তাদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য একটি
        নির্দিষ্ট সার্ভিস ফি নেয়, যা প্রায় $১৫ থেকে $২০ ইউরোর সমপরিমাণ
        বাংলাদেশী টাকা হতে পারে।
      
      
        শিশুদের জন্য ফি: ৬ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ভিসা ফি সাধারণত
        প্রাপ্তবয়স্কদের অর্ধেক, অর্থাৎ প্রায় $৪৫ ইউরো। ৬ বছরের কম বয়সী
        শিশুদের জন্য সাধারণত কোনো ভিসা ফি লাগে না। এই দুটি ফি মিলে আপনার ভিসার
        সরাসরি খরচ হয়।
      
      
        ২. বাধ্যতামূলক আনুষঙ্গিক খরচঃ ভিসা ফি ছাড়াও টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনার
        আরও কিছু বাধ্যতামূলক খরচ রয়েছে যা আপনার ভিসার প্রয়োজনীয়তার অংশ:
      
      
        ট্র্যাভেল ইন্স্যুরেন্স: শেনজেন ভিসার জন্য কমপক্ষে $৩০,০০০ ইউরোর কভারেজ
        সহ একটি বৈধ ট্র্যাভেল ইন্স্যুরেন্স থাকা আবশ্যক। আপনি কত দিনের জন্য
        ইন্স্যুরেন্স নিচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে এর খরচ কয়েক হাজার টাকা হতে
        পারে। এটি ভিসা পাওয়ার একটি অপরিহার্য অংশ।
      
      
        আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ: এটি সরাসরি খরচ নয়, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
        অংশ। ভিসা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হতে চায় যে নেদারল্যান্ডসে আপনার থাকার পুরো
        সময়ের জন্য আপনার পর্যাপ্ত টাকা আছে। এর জন্য আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে
        প্রতি দিনের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেখাতে হয়।
      
      
        আপনার ভ্রমণের দিনের ওপর নির্ভর করে এই মোট অংকটি ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা বা তার
        বেশি হতে পারে। এই টাকা যদিও আপনি খরচ করবেন, কিন্তু ভিসা আবেদনের সময় এটি
        'খরচের প্রমাণ' হিসেবে দেখাতে হয়।
      
      
        ডকুমেন্ট প্রস্তুতি: আপনার পাসপোর্টের ফটোকপি, ছবি তোলা, চাকরি বা ব্যবসার
        প্রমাণপত্র এবং অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুত ও প্রয়োজনে অনুবাদ করার জন্য
        কিছু অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।
      
      
        সার্বিক বিবেচনায়, নেদারল্যান্ডস টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনাকে মোট প্রায়
        $১১৫ থেকে $১২০ ইউরো সরাসরি আবেদন খরচ হিসেবে দিতে হবে। তবে আপনার সবচেয়ে
        বড় আর্থিক প্রস্তুতি হলো ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা দেখানো এবং একটি ভালো
        মানের ট্র্যাভেল ইন্স্যুরেন্স কেনা।
      
      নেদারল্যান্ডস যেতে কি কি লাগে
        আপনি যদি নেদারল্যান্ডস যেতে চান, তবে সবার প্রথমে আপনাকে অবশ্যই
        নেদারল্যান্ডসের ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। ভিসা ছাড়া আপনি কখনোই
        নেদারল্যান্ডস যাওয়ার সুযোগ পাবেন না।
      
    
      যদি ভুলক্রমে কোনো দালাল চক্রের মাধ্যমে আপনি ভিসা ছাড়া নেদারল্যান্ডস চলে
      আসেন, তবে আপনার পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দেখা যাবে,
      সেখানকার পুলিশ আপনাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেবে।
    
    
        এরপর কয়েক মাস জেল খাটার পর আপনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। এখন ভাবুন,
        যদি নেদারল্যান্ডস যেতে এত টাকা খরচ করার পরও সেখানে গিয়ে কোনো অর্থ
        উপার্জন করতে না পারেন, উল্টো জেল খেটে দেশে ফিরে আসেন, তাহলে কী লাভ হলো?
        তাই, আমাদের যদি নেদারল্যান্ডস যেতেই হয়, তবে অবশ্যই বৈধ ভিসা নিয়ে
        যাওয়া উচিত।
      
      
        নেদারল্যান্ডসের ভিসা পেতে চাইলে আমাদের বেশ কিছু কাগজপত্র প্রথমে সংগ্রহ
        করতে হবে। এই সকল কাগজপত্র ছাড়া আপনি কখনোই নেদারল্যান্ডসের ভিসা পাবেন
        না। এই কারণেই, নিচে নেদারল্যান্ডস ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়
        কাগজপত্রগুলো উল্লেখ করা হলো।
      
    
      📌আরো পড়ুন👉ওমান যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
    
    - বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে
 - পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
 - শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
 - কাজের অভিজ্ঞতার সনদপত্র
 - ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে
 - পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ভেরিফিকেশন হতে হবে
 - মেডিকেল রিপোর্ট ফটোকপি থাকতে হবে
 - ভিসা আবেদন ফি দিতে হবে
 
        নেদারল্যান্ডসের ভিসার জন্য আবেদন করার আগে এখানে উল্লেখিত কাগজপত্রগুলো
        সবার প্রথমে সংগ্রহ করা আপনার জন্য আবশ্যক। এই কাগজপত্রগুলো গুছিয়ে
        নেওয়ার পর, আপনি নিজে অথবা কোনো এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে অনলাইনে ভিসার
        জন্য আবেদন করার চেষ্টা করতে পারেন।
      
      নেদারল্যান্ডস যেতে কত বছর বয়স লাগে?
        নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার জন্য বয়সের নির্দিষ্ট কোনো সর্বোচ্চ সীমা নেই, তবে
        আপনি কোন উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তার উপর ভিত্তি করে ন্যূনতম বয়স এবং কিছু কিছু
        ক্ষেত্রে একটি ব্যবহারিক সর্বোচ্চ সীমা প্রযোজ্য হতে পারে।
      
    
      📌আরো পড়ুন👉ওমান যেতে কত বছর বয়স লাগে
    
    
        নেদারল্যান্ডস সরকার বয়সের চেয়েও দক্ষতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং আয়ের
        মানদণ্ডকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তবে কিছু বিশেষ ভিসার ক্ষেত্রে বয়সের শর্ত
        থাকে।
      
      ১. কাজের ভিসার বয়সসীমা
        নেদারল্যান্ডসে কাজের ভিসার জন্য আইনগত কোনো সর্বোচ্চ বয়স সীমা নেই,
        অর্থাৎ আপনার বয়স ৫০ বা ৬০ হলেও আপনি আবেদন করতে পারবেন। তবে, এখানে দুটি
        প্রধান শর্ত বিবেচনা করতে হয়:
      
      
        কাজের ভিসা পেতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ১৮ বছর বয়সী হতে হবে, কারণ ১৮ বছরের
        নিচে আপনি আইনত কাজ করার চুক্তি করতে পারবেন না।
      
      
        কাজের ভিসার ক্ষেত্রে বয়স বড় বাধা নয়, তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো দক্ষতা ও
        অভিজ্ঞতা। আপনি যত অভিজ্ঞ এবং আপনার চাকরিটি যত উচ্চ বেতনের হবে, আপনার
        ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে। সাধারণত, ৫০ বা ৬০ বছর বয়সী দক্ষ
        পেশাদাররাও যদি একটি ভালো বেতনের চাকরি পান, তবে তারা সহজেই ভিসা পান।
      
      
        নেদারল্যান্ডসের 'হাইলি স্কিল্ড মাইগ্রেন্ট' ভিসার জন্য বেতন কাঠামো বয়সের
        উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। ৩০ বছরের কম বয়সী দক্ষ কর্মীদের জন্য একটি
        নির্দিষ্ট ন্যূনতম বেতন প্রয়োজন, আর ৩০ বছরের বেশি বয়সী কর্মীদের জন্য
        সেই বেতনের মানদণ্ড অনেক বেশি হয়ে থাকে। অর্থাৎ, ৩০-এর উপরে হলে আপনাকে
        তুলনামূলকভাবে বেশি বেতন পেতে হবে।
      
      ২. স্টুডেন্ট ভিসার বয়সসীমা
        শিক্ষার্থীদের জন্য বয়সের কোনো কঠোর নিয়ম নেই, কিন্তু এটা নির্ভর করে
        আপনি কোন স্তরে পড়তে যাচ্ছেন তার ওপর:
      
      - স্নাতক প্রোগ্রাম: সাধারণত এইচএসসি পাসের পর শিক্ষার্থীরা আবেদন করে, তখন বয়স ১৮ থেকে ২১ বছরের মধ্যে থাকে।
 - স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম: এই স্তরে আবেদন করার সময় প্রার্থীর বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে থাকা স্বাভাবিক।
 
        কিছু স্কলারশিপ বা বৃত্তির ক্ষেত্রে বয়সের সীমা থাকতে পারে। যেমন: কিছু
        প্রোগ্রামে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারেন না। কিন্তু
        সাধারণভাবে, যদি আপনার পড়ালেখায় দীর্ঘ সময়ের বিরতি না থাকে এবং আপনি
        ভর্তির শর্ত পূরণ করেন, তবে বেশি বয়স হলেও সমস্যা হয় না।
      
      ৩. টুরিস্ট ভিসার বয়সসীমা
        টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে বয়সের কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। আপনার বয়স ১৮
        হোক বা ৭০, আপনি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে আপনি:
      
      - যাওয়ার পর দেশে ফিরে আসবেন।
 - ভ্রমণের খরচ বহন করার সামর্থ্য আপনার আছে।
 
        তবে আপনি টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এখানে আপনার মূল পরিচয়
        হলো আপনার অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, বয়স নয়।
      
      ৪. বিশেষ ভিসার বয়সসীমা
        কিছু বিশেষ সাংস্কৃতিক বা কাজের বিনিময়ে ভ্রমণের ভিসা আছে, যেমন
        'ওয়ার্কিং হলিডে প্রোগ্রাম', যেখানে সাধারণত বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে
        সীমাবদ্ধ থাকে। নেদারল্যান্ডস মূলত একটি স্কিল-ভিত্তিক দেশ। আপনার
        গন্তব্যের মূল ভিত্তি হলো:
      
      - যদি কাজ: বয়স এখানে বড় বাধা নয়। আপনার মূল যোগ্যতা হলো আপনার দক্ষতা এবং আপনার প্রাপ্ত বেতন। ৩০ বছরের বেশি হলে আপনাকে বেশি বেতনের চাকরি দেখাতে হবে।
 - যদি পড়ালেখা: আপনার পড়ালেখার বিরতি যেন খুব বেশি দীর্ঘ না হয়।
 
        সুতরাং, নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার ক্ষেত্রে 'কত বছর লাগে' তার চেয়ে বেশি
        জরুরি হলো 'আপনি কোন দক্ষতা নিয়ে যাচ্ছেন' এবং 'আপনার অর্থনৈতিক ভিত্তি
        কতটুকু শক্তিশালী'।
      
      নেদারল্যান্ডস যেতে কত সময় লাগে?
        নেদারল্যান্ডস যেতে কত সময় লাগে, তা নির্ভর করে আপনি কোথা থেকে যাত্রা
        করছেন এবং কী উপায়ে ভ্রমণ করছেন তার ওপর। ঢাকা থেকে কোনো সরাসরি ফ্লাইট না
        থাকায়, ট্রানজিট সহ মোট সময় লাগে সাধারণত ১৩ থেকে ১৮ ঘণ্টা। এছাড়া, বিমান
        ভ্রমণের সময় নির্ভর করে ফ্লাইটের রুটের উপর।
      
      নেদারল্যান্ডস কি সেনজেন দেশ
        নেদারল্যান্ডস একটি শেনজেনভুক্ত দেশ। আমরা জানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধীনে
        মোট ২৭টি দেশ রয়েছে, যেগুলোকে শেনজেনভুক্ত দেশ বলা হয়। আপনি যদি কখনো
        শেনজেনভুক্ত দেশে যেতে চান, তবে ভিসা ছাড়াই সেখানে প্রবেশের সুযোগ পেতে
        পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি ভিসা ছাড়া সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত থাকার সুযোগ
        পাবেন।
      
      
        যদি আপনি ভুলক্রমে নেদারল্যান্ডসে ভিসা ছাড়া চলে যান অথবা আপনার ভিসা
        হারিয়ে ফেলেন, সে ক্ষেত্রেও আপনি ৯০ দিন পর্যন্ত থাকার সুযোগ পাবেন।
        কিন্তু ৯০ দিনের বেশি হয়ে গেলে আপনাকে নেদারল্যান্ডস থেকে নিজ দেশে ফেরত
        পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তাই শুধুমাত্র পাসপোর্ট ব্যবহার করেই আপনি
        নেদারল্যান্ডসে ৯০ দিন থাকার সুযোগ পাচ্ছেন।
      
      সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
        প্রশ্ন: নেদারল্যান্ডস ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
      
      
        উত্তর: নেদারল্যান্ডসের ১ ইউরো বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১৪১.৩৫ টাকা এর
        সমান। তবে মনে রাখবেন, এই বিনিময় হার সব সময় পরিবর্তনশীল। আপনি যখন টাকা
        পরিবর্তন করবেন, তখন ব্যাংক বা মানি এক্সচেঞ্জের ওপর নির্ভর করে প্রকৃত রেট
        সামান্য কম-বেশি হতে পারে।
      
      
        প্রশ্ন: নেদারল্যান্ডের মুদ্রার নাম কি
      
      
        উত্তর: নেদারল্যান্ডসের মুদ্রার নাম হলো ইউরো (€)। নেদারল্যান্ডস
        ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য এবং ইউরোজোনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায়, ২০০২ সাল
        থেকে তারা ইউরো ব্যবহার করছে। ইউরোর আগে নেদারল্যান্ডসের মুদ্রা ছিল ডাচ
        গিল্ডার (Dutch Guilder)।
      
      
        প্রশ্ন: নেদারল্যান্ড এর রাজধানীর নাম কি
      
      
        উত্তর: নেদারল্যান্ডের রাজধানীর নাম হলো আমস্টারডাম (Amsterdam)। যদিও
        সরকারের মূল কার্যালয়, রাজপ্রাসাদের প্রধান অংশ, এবং আন্তর্জাতিক
        আদালতগুলোর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো হেগ (The Hague) শহরে অবস্থিত,
        সাংবিধানিকভাবে নেদারল্যান্ডের রাজধানী হলো আমস্টারডাম।
      
      লেখকের শেষকথা: নেদারল্যান্ডস যেতে কত টাকা লাগে
        আজকের এই আলোচনায় আমরা বর্তমান সময়ে ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশ
        নেদারল্যান্ডসে যেতে আনুমানিক কত টাকা লাগতে পারে এবং নেদারল্যান্ডসের ভিসা
        পাওয়ার জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন, ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে
        জানতে পারলাম।
      
      
        আশা করি এই তথ্যগুলো পড়ে আপনার খুবই ভালো লেগেছে। সম্পূর্ণ আলোচনাটি পড়ার
        পর যদি আপনি সামান্যতম উপকৃত হন, তবে এই তথ্যগুলো তৈরি করতে যেটুকু পরিশ্রম
        হয়েছে, তা সার্থক হবে বলে আমি মনে করি। এছাড়াও, এই আলোচনা বা বিষয় নিয়ে
        আপনার যদি কোনো মন্তব্য থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
      
    



আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url