ওমান যেতে কত টাকা লাগে 2026 - ওমানের ভিসার দাম কত জানুন
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন
উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে যেতে আগ্রহীদের ওমান যেতে কত টাকা
লাগে, তা জানা জরুরি। ওমান সরকার প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিক
নিয়োগ দিয়ে থাকে।
অনেকে বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা এবং ভ্রমণ
ভিসার জন্য আগ্রহী হন। আজকের পোস্টে যারা ওমান যেতে চাচ্ছেন, তাদের সুবিধার্থে
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার
চেষ্টা করবো।
পোষ্ট সুচিপত্রঃ
ওমান যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশের হাজারো মানুষ ওমানে কাজের জন্য যেতে আগ্রহী, কিন্তু ওমান
যেতে কত টাকা লাগে তা অনেকেই জানেন না। বাংলাদেশের কোনো দালাল বা এজেন্সির
মাধ্যমে ওমান যেতে চাইলে অনেক টাকা খরচ হতে পারে।
ওমান যেতে কত টাকা লাগবে, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার ভিসার ক্যাটাগরির ওপর,
কারণ একেক রকম ওমান ভিসার দাম একেক রকম হয়ে থাকে। বর্তমানে ওমান যেতে চাইলে
সর্বনিম্ন ২ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মতো খরচ পড়তে পারে।
ওমানের ভিসার দাম কত
ওমান হচ্ছে আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। হাজার হাজার
বাংলাদেশি কাজের বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ওমান যেতে আগ্রহী হলেও, গত বছরের তুলনায় এ
বছর ওমান ভিসার খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
📌আরো পড়ুন👉সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত
অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে অনেক বাংলাদেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য ওমানে
যেতে চাইছেন। ওমান যাত্রার আগে ভিসা খরচ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি।
দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করলে খরচ অনেক বেশি হয়।
অন্যদিকে, সরকারিভাবে ভিসা করতে পারলে অপেক্ষাকৃত কম খরচে কাজের উদ্দেশ্যে
ওমান যাওয়া সম্ভব। বর্তমানে ওমান স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রায় ২ লক্ষ থেকে
৩ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। আর যদি কাজের জন্য কোনো বাংলাদেশি এজেন্সির
মাধ্যমে ওমান যেতে চান, তবে এর খরচ ৪ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে
পারে।
ওমান ফ্রি ভিসার দাম কত
বর্তমানে বাংলাদেশের বহু মানুষ ওমানে 'ফ্রি ভিসা' নিয়ে যেতে আগ্রহী। কারণ
এই ভিসার মাধ্যমে নিজের পছন্দ অনুযায়ী কোম্পানি ও কাজ বেছে নেওয়ার
স্বাধীনতা থাকে। তবে বর্তমানে ওমানের ফ্রি ভিসা পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে
পড়েছে।
ওমানে আপনার কোনো আত্মীয়স্বজন থাকলে তাদের মাধ্যমে তুলনামূলক কম খরচে ফ্রি
ভিসা করা সম্ভব। অন্যথায়, কোনো এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ফ্রি ভিসা করতে
গেলে অনেক বেশি টাকা খরচ হবে। বর্তমানে ওমানের ফ্রি ভিসার জন্য প্রায় ৫
লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
ওমান কোম্পানি ভিসার দাম কত
ওমান প্রতি বছর বিভিন্ন কোম্পানিগুলোতে কাজের জন্য অন্যান্য দেশ থেকে
শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। আপনি সরকারিভাবে অথবা বেসরকারিভাবে দালালদের
মাধ্যমে কোম্পানি ভিসায় ওমানে যেতে পারবেন।
বর্তমানে, বাংলাদেশের কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ওমান কোম্পানি ভিসায় যেতে
চাইলে আপনার প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
অন্যদিকে, যদি আপনি সরকারিভাবে ওমানের ভিসা পান, সেক্ষেত্রে খরচ
তুলনামূলকভাবে কম হবে, যা সাধারণত ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকার মতো পড়ে।
স্টুডেন্ট ভিসার দাম কত
অনেকেই ওমানে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে অথবা ফ্যামিলি ভিসায় যান। এই ধরনের
ভিসার জন্য সাধারণত ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা
পর্যন্ত খরচ হতে পারে। আপনি যদি স্টুডেন্ট বা ফ্যামিলি ভিসায় যান,
সেক্ষেত্রে পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ পাবেন।
অনেকেই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে ভালো অর্থ
উপার্জন করছেন। তাই আপনিও চাইলে এই ভিসাগুলোতে ওমান যেতে পারেন।
টুরিস্ট ভিসার দাম কত
আপনি যদি ওমান ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চান, সেক্ষেত্রে ৭০ হাজার টাকা থেকে
শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এই ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ
সাধারণত ৩ মাস থাকে, এর বেশি থাকা যায় না। এই সময়ের মধ্যে আপনি যদি কাজের
সন্ধান করতে পারেন, তাহলে আপনার চাকরি হয়ে যাবে। অন্যথায়, আপনাকে দেশে
ফিরে আসতে হবে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত
যদি আপনি ওমানে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান, তবে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
এই ভিসার মাধ্যমে আপনি ড্রাইভিং, ক্লিনার, রেস্টুরেন্টের শ্রমিক, কৃষি কাজ,
ইলেকট্রিশিয়ান ইত্যাদি ধরনের কাজ করতে পারবেন। এই কাজগুলোর ওমানে বেশ
চাহিদা রয়েছে। যদি আপনার এই কাজগুলোতে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকে, তবে আপনি
ভালো বেতনে চাকরি পেতে পারেন এবং এই ভিসায় ওমান যেতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষজন কাজের বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশে যেতে
আগ্রহী। বিশেষ করে ভ্রমণ করার প্রবণতা এখন অনেকের মধ্যেই বেড়েছে। এই কারণে
কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ গমনের জন্য অনেকেই ওমানকে গন্তব্য হিসেবে বেছে
নিচ্ছেন।
📌আরো পড়ুন👉বাংলাদেশ থেকে কানাডা যেতে কত টাকা লাগে
তবে বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে আসলে কত টাকা খরচ হয়, তা অনেকেরই অজানা। এ
বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য তারা অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে
অনুসন্ধান করে থাকেন।
যারা কাজের বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ওমান যেতে চাইছেন, তাদের সুবিধার জন্য এখন
আমরা জানাতে চেষ্টা করব বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে মোট কত টাকা লাগে।
বর্তমানে কাজের বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ওমান যেতে হলে ভিসা খরচ, মেডিকেল খরচ
এবং বিমানের টিকেট সহ সব মিলিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
খরচ হতে পারে। তবে সময় ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এই খরচ কম বা বেশিও
হতে পারে।
ওমান যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসা বা অন্যান্য ভিসায় ওমান যেতে চান, তবে
আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র থাকা আবশ্যক। বর্তমানে বাংলাদেশের যেকোনো
দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে এই কাগজপত্রগুলোর ফটোকপি জমা দিয়ে ভিসার আবেদন
সম্পন্ন করা যায়। এর জন্য আপনাকে প্রথমে জানতে হবে কী কী কাগজপত্র
প্রয়োজন।
ওমান যেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- জব অফার লেটার
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- কাজের দক্ষতার প্রমাণপত্র
- বিমানের টিকিট
- ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফরম
- পাসপোর্ট (৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে)
উপরে উল্লিখিত কাগজপত্রগুলো দিয়ে আপনি ওমান যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করতে
পারবেন।
ওমান যাওয়ার খরচ কমানোর উপায়
ওমানে যাওয়ার খরচ কমানোর জন্য আমি কিছু কৌশল শিখেছিলাম। সেই টিপসগুলোই
আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, যাতে আপনারা কম খরচে ওমান ভ্রমণের পরিকল্পনা
করতে পারেন। এই কৌশলগুলো আপনাদের খরচ কমাতে অনেক সহায়তা করবে।
১. সরাসরি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করুনঃ আপনি যদি মধ্যস্থতাকারী বা দালাল
এড়িয়ে সরাসরি ওমানের কোনো কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, তাহলে
আপনার প্রায় ৫০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ সাশ্রয় হতে পারে। এতে
করে ওমান ভ্রমণের মোট খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
২. বিশ্বস্ত এজেন্সি বেছে নিনঃ এজেন্সি ছাড়া অনেক সময় কাজ পাওয়া কঠিন
হতে পারে। তবে এমন এজেন্সি বেছে নেওয়া উচিত যাদের ভালো রিভিউ আছে। আমি
ব্যক্তিগতভাবে আমার এজেন্সি গুগল রিভিউ দেখে নির্বাচন করেছিলাম।
৩. টিকেট আগে থেকে বুক করুনঃ ফ্লাইটের দাম কমানোর জন্য ২-৩ মাস আগে টিকিট
বুক করুন। এর ফলে আপনি প্রায় ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা সাশ্রয় করতে
পারবেন।
৪. সরকারি প্রক্রিয়া ব্যবহার করুনঃ বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গেলে খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। আমার এক
বন্ধু এই প্রক্রিয়ায় গিয়ে ১ লাখ টাকারও বেশি সাশ্রয় করেছিল।
৫. ওমান ভ্রমণের প্রস্তুতি ও সময়ঃ বাংলাদেশ থেকে ওমানের দূরত্ব প্রায়
৩,৫০০ কিলোমিটার। আমি যখন ওমানে গিয়েছিলাম, তখন নন-স্টপ ফ্লাইটে আমার
প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। তবে কিছু ফ্লাইটে বিরতি বা স্টপওভারের
কারণে মোট সময় ৮ থেকে ১২ ঘণ্টাও লাগতে পারে।
৬. প্রস্তুতির জন্য আমার টিপসঃ বিমানবন্দরে কোনো ধরনের ঝামেলা এড়াতে
আপনার ভিসা, টিকেট এবং সব ধরনের ডকুমেন্ট তিনবার করে ভালোভাবে যাচাই করে
নেওয়া উচিত। এতে করে শেষ মুহূর্তে কোনো ভুল বা সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা
থাকবে না।
ওমানে পৌঁছানোর পর প্রথম সপ্তাহের খরচ মেটানোর জন্য কিছু টাকা হাতে রাখা
জরুরি। এই সময়ে আপনাকে থাকা, খাওয়া এবং যাতায়াতের জন্য টাকা খরচ করতে
হবে। তাই, আগেই কিছু অর্থ সঙ্গে নিয়ে গেলে নতুন পরিবেশে আপনি কোনো
সমস্যায় পড়বেন না।
ওমানের আবহাওয়া বেশ গরম। তাই সেখানে যাওয়ার সময় আপনার সাথে হালকা ও
আরামদায়ক পোশাক নেওয়া উচিত। এতে করে আপনি গরমে স্বস্তি পাবেন এবং আপনার
ভ্রমণ আরামদায়ক হবে।
বাংলাদেশ থেকে ওমান যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ কাজের জন্য ওমান যেতে আগ্রহী, কিন্তু
বাংলাদেশ থেকে ওমান যাওয়ার সঠিক প্রক্রিয়া অনেকেই জানেন না।
ওমান যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ওমানের নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ভিসা নিতে হবে।
📌আরো পড়ুন👉সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়
সেক্ষেত্রে, বাংলাদেশের কোনো এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ওমান ভিসার দাম
জেনে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এই উপায়গুলো
অবলম্বন করলেই বাংলাদেশ থেকে খুব সহজে ওমান যাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ থেকে ওমান যাওয়ার প্রধান উপায় হলো ভিসা পাওয়া এবং সরাসরি
ফ্লাইটে ভ্রমণ করা। তবে, সেখানে যাওয়ার প্রক্রিয়া আপনার ভিসার ধরনের
ওপর নির্ভর করে। যেহেতু বাংলাদেশিদের জন্য ভিসার নিয়মে মাঝে মাঝে
পরিবর্তন আসে, তাই প্রতিটি ধাপে সতর্ক থাকা জরুরি।
নিচে বাংলাদেশ থেকে ওমান যাওয়ার বিস্তারিত প্রক্রিয়া মানুষের মতো করে
আলোচনা করা হলো:
বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রধানত তিনটি উপায়ে ওমান যেতে পারেন: ১. কাজের ভিসা
(ওয়ার্ক পারমিট), ২. ভিজিট বা ট্যুরিস্ট ভিসা এবং ৩. স্টুডেন্ট ভিসা।
তবে কাজের ভিসাতেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ যায়।
প্রথম ধাপ: ভিসার প্রকারভেদ এবং প্রাথমিক প্রস্তুতি
১. কাজের ভিসাঃ ওমানে যাওয়ার জন্য এটি সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি।
ওমানের কোনো কোম্পানি বা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে আপনার নামে বৈধ চাকরির
প্রস্তাব বা নিয়োগপত্র থাকতে হবে।
আপনার নিয়োগকর্তাই আপনার জন্য ওমান সরকারের কাছ থেকে ওয়ার্ক পারমিট এবং
ভিসার স্পন্সরশিপের ব্যবস্থা করবেন।
ভিসা হাতে পাওয়ার পর আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও
প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে স্মার্ট কার্ড বা ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে। এটি
ছাড়া আপনি দেশ ছাড়তে পারবেন না।
২. ভিজিট ভিসাঃ পর্যটন বা স্বল্প সময়ের জন্য আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা
করার জন্য এই ভিসা ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ওমানের
ভিজিট ভিসা নীতি কঠোর। সাধারণত, ওমানি বা জিসিসি দেশগুলোর কোনো বাসিন্দার
স্পন্সরশিপ ছাড়া সরাসরি ভিজিট ভিসা পাওয়া বেশ কঠিন। আপনার হোটেল বুকিং,
পর্যাপ্ত ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং রিটার্ন টিকিটের প্রমাণ দেখাতে হতে পারে।
৩. স্টুডেন্ট ভিসা
- ওমানের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেলে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- ওমানের স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ থেকে অ্যাডমিশন লেটার থাকতে হবে।
- পড়ালেখা ও জীবনধারণের খরচ মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপ: ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
ওমানের কাজের ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত আপনার নিয়োগকর্তাই শুরু করেন।
ওমান রয়্যাল পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আপনার
নিয়োগকর্তা আপনার ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন করিয়ে আপনার নামে ভিসাটি
ইস্যু করবেন।
নিয়োগকর্তা কর্তৃক ভিসা ইস্যু হওয়ার পর, সেই ইস্যুকৃত ভিসার কপি আপনাকে
বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। আপনাকে ওমানের দূতাবাস অথবা ওমান সরকার অনুমোদিত
ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের মাধ্যমে ভিসার স্ট্যাম্পিংয়ের জন্য আবেদন
করতে হবে।
আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (সাধারণত যা লাগে):
- বৈধ পাসপোর্ট: কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে।
- সাম্প্রতিক ছবি: ওমানের ভিসা রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী নির্দিষ্ট আকারের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ছবি।
- ভিসার কপি: ওমান থেকে ইস্যুকৃত মূল বা কপি।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট: অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টার থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট।
- বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স কার্ড (কাজের ভিসার জন্য অপরিহার্য)।
- চুক্তির কপি (কাজের ভিসার জন্য)।
তৃতীয় ধাপ: স্বাস্থ্য পরীক্ষা
- GAMCA পরীক্ষা: আপনাকে গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিল অ্যাসোসিয়েশন অনুমোদিত যেকোনো মেডিকেল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
- স্বাস্থ্যগত ফিটনেস: এই পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে যে আপনি ওমানে কাজ করার জন্য শারীরিকভাবে সুস্থ এবং গুরুতর কোনো সংক্রামক রোগ মুক্ত।
চতুর্থ ধাপ: বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স ও প্রশিক্ষণ
কাজের ভিসায় ওমান যেতে হলে বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মানা জরুরি।
- রেজিস্ট্রেশন: আপনাকে বিএমইটি-তে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- প্রশিক্ষণ: সরকার নির্ধারিত স্বল্পমেয়াদী ওরিয়েন্টেশন কোর্স বা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে।
- স্মার্ট কার্ড: সফলভাবে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপনি বিএমইটি স্মার্ট কার্ড পাবেন। এই কার্ডটি ইমিগ্রেশনের সময় দেখাতেই হবে।
পঞ্চম ধাপ: বিমান টিকিট ও ভ্রমণ
সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপনি ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত। ঢাকা থেকে
মাস্কাট রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সালাম এয়ার এবং অন্যান্য
আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে। আপনার পছন্দ ও বাজেটের
মধ্যে টিকিট বুক করতে হবে।
মাস্কাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, আপনাকে আপনার বৈধ পাসপোর্ট
ও ভিসার মাধ্যমে ইমিগ্রেশন পার হতে হবে। ওমানের ভিসা নীতি ঘন ঘন পরিবর্তন
হতে পারে। তাই যেকোনো প্রক্রিয়া শুরু করার আগে ওমান দূতাবাস, বাংলাদেশ
ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড বা স্বনামধন্য রিক্রুটিং
এজেন্সির কাছ থেকে সর্বশেষ তথ্য অবশ্যই যাচাই করে নেবেন।
বাংলাদেশ থেকে ওমান বিমান ভাড়া কত?
২০২৬ সালের তথ্য অনুযায়ী ঢাকা থেকে মাস্কাট পর্যন্ত বিমান ভাড়া বিভিন্ন
কারণের উপর নির্ভর করে, তবে একটি আনুমানিক ধারণা নিচে দেওয়া হলো। বিমান
ভাড়া একটি নির্দিষ্ট দিনে, এয়ারলাইনস ভেদে, এবং আপনি কত আগে টিকিট
কাটছেন তার ওপর ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।
সাধারণত, ঢাকা থেকে মাস্কাট রুটে একমুখী (One-Way) এবং ফিরতি
(Round-Trip) টিকিটের দাম বাংলাদেশি টাকায় নিম্নরূপ হতে পারে:
- একমুখী (One-Way) টিকিট ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা
- ফিরতি (Round-Trip) টিকিট ৫০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকা
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই মূল্যগুলো শুধুমাত্র একটি ধারণা। আপনার ভ্রমণের
সময়, এয়ারলাইনস এবং ক্লাসের ওপর ভিত্তি করে সঠিক মূল্য আরও কম বা বেশি
হতে পারে।
ওমান যেতে কত বছর বয়স লাগে
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই ওমান টুরিস্ট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা ও
ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে আগ্রহী। কিন্তু ওমান যেতে হলে ন্যূনতম বয়স
কত হওয়া প্রয়োজন, তা অনেকেরই জানা নেই।
📌আরো পড়ুন👉কানাডা যেতে কত বয়স লাগে
এই কারণে অনেকে অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বয়সসীমা সম্পর্কে জানতে
অনুসন্ধান করেন। কারণ বয়স কম বা বেশি হলে ওমান ভিসার জন্য আবেদন করা
যায় না।
তাই এখন আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব ওমান যেতে হলে সর্বনিম্ন বয়স কত
থাকতে হবে। যারা ওমান যেতে চান, তাদের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর হতে হবে। ১৮
বছরের কম বয়সীদের ওমান যাওয়ার কোনো অনুমতি নেই।
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত সময় লাগে
যারা বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে চাইছেন, তাদের অনেকেরই জানা নেই এই
যাত্রায় কত সময় লাগে। বাংলাদেশ থেকে ওমান যাওয়ার জন্য দুই ধরনের
ফ্লাইট রয়েছে একটি হলো নন-স্টপ এবং অন্যটি হলো স্টক-ওভার। এই দুটি
ফ্লাইটে সময় ভিন্ন হওয়ায় অনেকে দ্বিধায় ভোগেন।
এ কারণে অনেকে বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত সময় লাগে, তা জানতে অনলাইনে
খোঁজ করে থাকেন। তাই, যারা ওমানে যাওয়ার কথা ভাবছেন, তাদের সুবিধার জন্য
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে সাধারণত কত সময় লাগে, তার একটি বিস্তারিত তথ্য
নিচে দেওয়া হলো।
📌আরো পড়ুন👉বাংলাদেশ থেকে কানাডা যেতে কত সময় লাগে
- আপনি যদি বিরতিসহ লোকাল বিমানে ভ্রমণ করেন, তাহলে ওমান পৌঁছাতে সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
- ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের নন-স্টপ ফ্লাইটে সময় লাগে প্রায় ৭ ঘণ্টা।
- তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নন-স্টপ ফ্লাইটে ওমান পৌঁছাতে সবচেয়ে কম সময় লাগে, মাত্র ৫ ঘণ্টা।
সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
প্রশ্ন: ওমান ক্লিনারের বেতন কত?
উত্তর: ওমান ক্লিনারদের বেতন প্রায় ৯০ থেকে ১২০ রিয়াল হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: ওমানের ১ রিয়াল বাংলাদেশের কত টাকা?
উত্তর: ওমানের ১ রিয়াল সমান বাংলাদেশের প্রায় ৩১০ টাকা।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে ওমান দূরত্ব কত কিলোমিটার?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে ওমানের দূরত্ব প্রায় ৩৪৬১ কিলোমিটার
লেখকের শেষ মতামত
যেকোনো দেশের ভিসা কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা
উচিত। কারণ দেশের কিছু অসাধু এজেন্সি আপনাকে এক ধরনের ভিসা দেওয়ার কথা
বলে অন্য ধরনের ভিসা ধরিয়ে দিতে পারে।
এই পোস্টে আমরা আপনার সাথে ওমান যেতে কত টাকা লাগে বা ওমান ভিসার দাম কত,
তা জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি, ইতিমধ্যে আপনি আপনার কাজের ধরন
অনুযায়ী ওমান যেতে আনুমানিক কত টাকা লাগতে পারে বা ভিসার দাম কত, তা
জানতে পেরেছেন।



আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url