বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ - ভিসার দাম ও যাওয়ার উপায় ২০২৬

সুইজারল্যান্ড হলো ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ছোট দেশ। বাংলাদেশ থেকে অনেকে পড়াশোনা কিংবা কাজের উদ্দেশ্যে এই উন্নত রাষ্ট্রটিতে যেতে চান। তবে বেশিরভাগ মানুষেরই সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ সম্পর্কে ধারণা নেই।
বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ
সুইজারল্যান্ড ইউরোপের অন্যতম একটি উন্নত দেশ, যেখানে কাজের বেতন অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। এই দেশে যেতে হলে উচ্চশিক্ষা থাকা প্রয়োজন, কারণ শ্রমিক হিসেবে কাজের ভিসা নিয়ে সুইজারল্যান্ড যাওয়া তুলনামূলকভাবে কঠিন।

সুইজারল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। এটি তার উচ্চমানের জীবনযাত্রা, সুশৃঙ্খল ব্যাংকিং সেক্টর এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির জন্য সুপরিচিত। তাই, এই দেশে যেতে আগ্রহীদের বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ, ভিসার দাম ও যাওয়ার সঠিক উপায় সম্পর্কে জানতে হবে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম যে ভাবনাগুলো মাথায় আসে, তা হলো খরচ কত হবে। এছাড়া, কিভাবে যাব এমন নানান প্রশ্ন আমাদের ঘিরে রাখে। অবিশ্বাস্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়া সুইজারল্যান্ড দেশটি আমাদের কাছে যেন এক স্বপ্নের মতো। আর এই স্বপ্নের দেশে যেতে হলে প্রথমে প্রয়োজন হয় ভিসার।
ভিসার আবেদন করার আগে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ সম্পর্কে খুব ভালো করে তথ্য সংগ্রহ করে নিতে হবে, এবং তবেই আবেদন করা উচিত। 

আপনি যদি অনলাইনে নিজে নিজে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন, তবে আনুমানিক ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বিভিন্ন এজেন্সির সহযোগিতা নেন, তখন আপনার খরচ আরও অনেক বেড়ে যেতে পারে, যা প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

তবে সঠিক তথ্য হলো এই যে, সুইজারল্যান্ড যেতে আসলে ঠিক কত টাকা লাগবে, সেই বিষয়ে সঠিকভাবে কেউ তথ্য দিতে পারে না। সবচেয়ে ভালো হয়, প্রবাসী কোনো বন্ধু বা কাছের কোনো মানুষ সেখানে থাকলে তাদের কাছ থেকে ভিসা খরচ সম্পর্কে জেনে নিয়ে আবেদন করা।

বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের দূতাবাস রয়েছে। কেউ চাইলে ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে নিজে নিজে অথবা অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তির সহযোগিতা নিয়ে ভিসা প্রসেসিং করতে পারে।

সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসার খরচ ২০২৬

সুইজারল্যান্ড হলো পশ্চিম-মধ্য ইউরোপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এই দেশটি এর মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য, বরফে ঢাকা পাহাড় এবং শীতকালে স্কিইং ও স্নোবোর্ডিংয়ের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে সুপরিচিত।

সুইজারল্যান্ড বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে টুরিস্ট ভিসা সহ বিভিন্ন কাজের ভিসায় আকর্ষণ করে থাকে। দেশটি যেকোনো ধরনের কাজের জন্য সর্বোচ্চ বেতন দিয়ে থাকে এবং এখানকার জীবনযাত্রার মানও খুব উচ্চ।

যেহেতু দেশটি অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক বেশি উন্নত, তাই সুইজারল্যান্ডে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শ্রমিকদের জন্য প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। একই সাথে, বাংলাদেশিদের জন্যও সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা পাওয়ার অত্যন্ত সুযোগ রয়েছে।

ভিসার খরচ মূলত ভিসার ধরন, আবেদনকারীর জাতীয়তা, মেডিকেল পরীক্ষা, আবেদন ফি এবং বিমান ভাড়া সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। তবে সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসার বিভিন্ন ক্যাটাগরি থাকায় খরচেরও পার্থক্য দেখা যায়।

যেমন: সরকারিভাবে সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসায় গেলে ন্যূনতম ৭ লক্ষ থেকে ৯ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তবে বেসরকারিভাবে কোনো দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে গেলে কাজের ভিসার খরচ ১২ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ভিসার খরচ কমাতে চেষ্টা করুন সরকারিভাবে সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা সংগ্রহ করতে। আর বেসরকারিভাবে যেতে চাইলে অবশ্যই পরিচিত ও বিশ্বাসযোগ্য এজেন্সির সাহায্য নিন।

সুইজারল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা খরচ

স্টুডেন্ট ভিসার জন্য খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে, কারণ আবেদনকারীকে ভিসার আবেদন ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি চিঠি ও আর্থিক প্রমাণ।
সাধারণত, স্টুডেন্ট ভিসার খরচ ১২০ থেকে ১৫০ ইউরো হয়ে থাকে।
অন্যান্য খরচ
  • অ্যাপ্লিকেশন ফি: ১৫০-২০০ ইউরো
  • আরও অতিরিক্ত খরচ: স্বাস্থ্য বীমা, আবাসন সংক্রান্ত খরচ, এবং জীবনযাত্রার খরচ।
এছাড়া, স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনার পক্ষে এটি প্রমাণ করা অপরিহার্য যে আপনি সুইজারল্যান্ডে প্রতি মাসে বসবাস করার জন্য যথেষ্ট আর্থিক সঙ্গতি (আর্থিক সক্ষমতা) রাখেন।

সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা খরচ

সুইজারল্যান্ডে পর্যটন করতে যাওয়ার জন্য আপনি সাধারণত শেঙ্গেন ভিসার আবেদন করে থাকেন। শেঙ্গেন ভিসা হলো বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের জন্য একীভূত একটি ভিসা, এবং সুইজারল্যান্ডও এর অন্তর্ভুক্ত। এই ভিসার খরচ সাধারণত ৮০ ইউরো (প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য)। তবে, কিছু নির্দিষ্ট দেশ থেকে আবেদনকারীদের জন্য এই খরচ ভিন্ন হতে পারে।

অন্যান্য খরচ
  • ভিসা সেন্টারের ফি: ২০-২৫ ইউরো
  • ভিসা প্রসেসিং সময়: ১৫-২০ কার্যদিবস
সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে, আবেদনকারীকে পর্যাপ্ত আর্থিক প্রমাণ জমা দিতে হয়। এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে, আপনি দেশের অভ্যন্তরে অবস্থান করার সময় নিজের সকল খরচ বহন করতে সক্ষম।

সুইজারল্যান্ড ভিসার দাম কত

বর্তমানে সুইজারল্যান্ড যেতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করতে হয়, তার বেশির ভাগই ভিসা তৈরি করতে ব্যয় করতে হয়। সুইজারল্যান্ডে বৈধভাবে প্রবেশের জন্য ভিসা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। আপনি যে কাজে দক্ষ, সেই কাজের ধরন অনুযায়ী ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। 
আবেদন ফি পরিশোধ করার পরই ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম শুরু হয়। তাই, আবেদনের পরপরই ভিসা ফি প্রদান করা উচিত। বর্তমানে সুইজারল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের ভিসা তৈরি করতে আনুমানিক সর্বনিম্ন ৩ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু ভিসা ধরন রয়েছে এবং প্রত্যেকটির খরচ আলাদা। মূলত ভিসা খরচ এর ধরন, বয়স এবং দেশের ওপর নির্ভর করে। চলুন, কিছু জনপ্রিয় ভিসা ধরন এবং তাদের খরচ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ঢাকা টু সুইজারল্যান্ড বিমান ভাড়া কত

বর্তমানে ঢাকা থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার জন্য সাধারণত দুই ধরনের বিমান থাকে ভিআইপি ও লোকাল। আপনি যদি ভালো মানের বিমানে যেতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই বেশি খরচ পড়বে। আর লোকাল বিমানে গেলে একটু সময় বেশি লাগবে এবং খরচ কম হবে। চলুন, বিভিন্ন ধরনের বিমানের ভাড়া কত, সে সম্পর্কে জানা যাক।

১। টার্কিশ এয়ারলাইন্স:
  • ইকোনমিক ক্লাস: ৮৯,৯০০ টাকা থেকে ১,২২,৪০০ টাকা।
  • বিজনেস ক্লাস: ১,৪৬,৭৯০ টাকা থেকে ২,৭৮,৫৯০ টাকার মতো।
২। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স:
  • ইকোনমিক ক্লাস: ১,১৫,৭০০ টাকা থেকে ১,৩২,৯০০ টাকা।
  • বিজনেস ক্লাস: ২,১৪,০০০ টাকা থেকে ৩,৪৫,৯০০ টাকা।
৩। শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স:
  • ইকোনমিক ক্লাস: ১,০৮,৫৬০ টাকা থেকে ১,৩২,৮৫০ টাকার মতো।
  • বিজনেস ক্লাস: ২,০৪,৮৯০ টাকা থেকে ৩,২৬,৮০০ টাকা।
৪। কুয়েত এয়ারওয়েজ:
  • ইকোনমিক ক্লাস: ১,১২,৪৫০ টাকা।
  • বিজনেস ক্লাস: ২,৩৭,৫৬০ টাকা থেকে ৩,৫৭,০৯০ টাকা।
৫। কাতার এয়ারওয়েজ:
  • ইকোনমিক ক্লাস: ১,১২,৫৯০ টাকা থেকে ১,৪৭,৭৯০ টাকার মতো।
উপরোক্ত এই বিমানগুলোর ভাড়া হয়তো কম-বেশি হতে পারে; তবে আপনাদেরকে শুধুমাত্র একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। আশা করি আপনি এই ভাড়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়

সুইজারল্যান্ডকে পৃথিবীর স্বর্গ বলা হয়ে থাকে। অনেকে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে এবং কাজের ভিসা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে যান। যারা এই দেশে যেতে চান, তাদের অনেকেরই প্রশ্ন থাকে কিভাবে খুব সহজে বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়া যায়?
ইউরোপের দেশগুলো থেকে সুইজারল্যান্ডে যাওয়া অনেক সহজ হলেও, বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড ভিসা পাওয়া কিন্তু অনেকটা কঠিন। সুইজারল্যান্ডে সাধারণত কয়েক ধরনের ভিসা ব্যবহার করে খুব সহজেই যাওয়া যায়। অনেকেই কাজের ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসা ব্যবহার করে দেশটিতে যান।
বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়
তবে, সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা বা টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে কিছু শর্তাদি অবশ্যই পালন করতে হয়। আপনি ঠিকই বলেছেন যে ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে সহজে সুইজারল্যান্ড যাওয়া গেলেও, বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড ভিসা পাওয়া তুলনামূলকভাবে কঠিন। 

তবে কিছু নির্দিষ্ট উপায়ে বৈধভাবে সেখানে যাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার প্রধান উপায়গুলি এবং এর বিস্তারিত প্রক্রিয়া মানুষের মতো করে নিচে আলোচনা করা হলো:

সুইজারল্যান্ড যেতে হলে আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী সঠিক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা সাধারণত দুই ধরনের হয়:
  • শর্ট স্টে ভিসা (শেনজেন ভিসা - ৯০ দিনের কম): পর্যটন, ব্যবসায়িক কাজ বা স্বল্পমেয়াদী পরিদর্শনের জন্য।
  • রেসিডেন্স পারমিট (ন্যাশনাল/ডি ভিসা - ৯০ দিনের বেশি): কাজ, পড়াশোনা বা পরিবারের সাথে থাকার জন্য।

১. কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়া

সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন এবং এর প্রক্রিয়া খুবই কঠোর। মূলত, এই দেশের নিয়োগকর্তাদের প্রথমে প্রমাণ করতে হয় যে তাঁরা সুইজারল্যান্ড বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য এলাকা-এর মধ্যে কোনো উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পাননি।
  • প্রয়োজনীয় দক্ষতা: আপনাকে অবশ্যই উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন এবং এমন একটি পেশার হতে হবে, যেটির চাহিদা সুইজারল্যান্ডে রয়েছে।
  • নিয়োগকর্তা আবশ্যক: ভিসা আবেদনের আগেই আপনার সুইজারল্যান্ডের কোনো নিয়োগকর্তার কাছ থেকে বৈধ চাকরির প্রস্তাব থাকতে হবে।
  • আবেদনের প্রক্রিয়া: আপনার নিয়োগকর্তা সুইস কর্তৃপক্ষের কাছে আপনার জন্য ওয়ার্ক পারমিট চেয়ে আবেদন করবেন। এটি অনুমোদন হলেই আপনি ঢাকায় অবস্থিত সুইস দূতাবাস বা কনস্যুলেটে ন্যাশনাল ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

২. উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাওয়া

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সুইজারল্যান্ড যাওয়ার এটি একটি জনপ্রিয় ও তুলনামূলকভাবে সহজ পথ।
  • ভর্তি নিশ্চিতকরণ: প্রথমে আপনাকে সুইজারল্যান্ডের কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের থেকে অফার লেটার নিতে হবে।
  • আর্থিক সচ্ছলতা: স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আর্থিক সচ্ছলতা প্রমাণ করা। আপনাকে দেখাতে হবে যে টিউশন ফি এবং সেখানে থাকার খরচ (প্রতি মাসে আনুমানিক পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ) বহন করার সক্ষমতা আপনার আছে।
  • ভিসা আবেদন: এরপর প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র সহ ঢাকায় অবস্থিত সুইস দূতাবাসে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

৩. টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যাওয়া

সুইজারল্যান্ড শেনজেনভুক্ত দেশ হওয়ায় পর্যটনের জন্য আপনাকে শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
  • উদ্দেশ্য: এই ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৯০ দিন পর্যন্ত হয় এবং এটি শুধুমাত্র পর্যটন বা ব্যক্তিগত পরিদর্শনের জন্য। এই ভিসা নিয়ে কাজ করা বা স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি নেই।
  • প্রয়োজনীয়তা: আপনাকে হোটেল রিজার্ভেশন, বিমান টিকিটের বুকিং, এবং সুইজারল্যান্ডে থাকার সময় খরচ বহনের জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক প্রমাণ দেখাতে হবে।

ভিসা আবেদনের সাধারণ প্রক্রিয়া

যে উদ্দেশ্যেই যান না কেন, ভিসা আবেদনের জন্য সাধারণত এই ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:
  • ভিসা ক্যাটাগরি নির্বাচন: আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী সঠিক ভিসার ধরন বেছে নিন।
  • কাগজপত্র সংগ্রহ: ভিসার ধরন অনুযায়ী পাসপোর্ট, ছবি, কভার লেটার, আর্থিক প্রমাণ, মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স, শিক্ষাগত যোগ্যতা বা চাকরির প্রমাণ সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করুন।
  • অ্যাপয়েন্টমেন্ট: ঢাকার সুইস দূতাবাস বা তাদের ভিসা আবেদন কেন্দ্রে  অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন।
  • আবেদন জমা: অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন উপস্থিত হয়ে ফি সহ আপনার আবেদনপত্র জমা দিন।
  • ইন্টারভিউ: দূতাবাস যদি প্রয়োজন মনে করে, তবে আপনার একটি সংক্ষিপ্ত ইন্টারভিউ হতে পারে।
আপনি যদি সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট ভিসা ক্যাটাগরি সম্পর্কে বিস্তারিত চেকলিস্ট এবং প্রক্রিয়া জানতে চান, তাহলে আমি সেই তথ্যগুলি খুঁজে দিতে পারি।

সুইজারল্যান্ড যেতে কি কি লাগে?

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসার ক্যাটাগরিও ভিন্ন হয়ে থাকে। আর এই ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী সুইজারল্যান্ড যেতে ভিন্ন ভিন্ন কাগজপত্র প্রয়োজন হয়।
  • বৈধ পাসপোর্ট
  • ভিসা আবেদন ফরম
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • চাকরির অফার লেটার
  • কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
  • ভিসা আবেদন ফি
  • জাতীয় পরিচয় পত্র
  • আইইএলটিএস স্কোর
  • আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির অফার লেটার
  • রিকমেন্ডেশন লেটার
  • ট্রাভেল রেকর্ড

সুইজারল্যান্ডের ভিসা পেতে কতদিন লাগবে

একজন বাংলাদেশী যদি সুইজারল্যান্ড যেতে চান, তবে তার অবশ্যই ভিসা প্রয়োজন। সুইজারল্যান্ডের ভিসা পেতে অনলাইন জব ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করে সেখানে চাকরির জন্য আবেদন করা যেতে পারে এবং এভাবে সুইজারল্যান্ড যাওয়া সম্ভব।

এছাড়া, বিভিন্ন বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমে যোগাযোগ করেও সুইজারল্যান্ডের ভিসা পাওয়া যেতে পারে। তবে এর জন্য আগে ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে এবং দালালের মাধ্যমে না যাওয়াই শ্রেয়। সুইজারল্যান্ডের ভিসা পেতে সাধারণত ৬ থেকে ১২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

সুইজারল্যান্ড দুই ধরনের কাজের ভিসা প্রদান করে থাকে। এভাবে বিভিন্ন কাজের খোঁজ নিয়ে এবং ওয়েবসাইটগুলো ভালোভাবে খুঁজে ভিসা করতে পারলে দ্রুত সুইজারল্যান্ড যাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে

অনেকেই জানতে চান যে, বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে। যেসব বিমান কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড রুটে চলাচল করে, সেগুলোর প্রত্যেকটিই মাঝখানের দেশগুলোতে বিরতি দিয়ে থাকে। এই বিরতির কারণেই বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে অনেকটা সময় লেগে যায়।
তো যাই হোক, বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে সময় লাগে সর্বনিম্ন ২৩ ঘণ্টা-এর মতো, আর সর্বোচ্চ সময় লাগে ২৫ ঘণ্টা-এর মতো। এছাড়া, এটি হয়তো ২০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট এদিক-সেদিক হতে পারে।

সুইজারল্যান্ড ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার জন্য কিন্তু সুইজারল্যান্ড এর টাকার মান কি রকম এ বিষয়ে জানা জরুরী। আবার অনেকেই আছেন যারা জানতে চান যে সুইজারল্যান্ডের এক টাকায় বাংলাদেশের কত টাকা হয়ে থাকে। তো যাই হোক সুইজারল্যান্ড এর টাকার নাম কি এবং সুইজারল্যান্ড এর এক টাকায় বাংলাদেশের কত টাকা হয় এ সকল বিষয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
  • সুইজারল্যান্ড এর ১ সুইস ফ্রাংক = বর্তমানে বাংলাদেশের ১৫০.৬২ টাকা।
  • সুইজারল্যান্ড এর ১০০ সুইস ফ্রাংক = বর্তমানে বাংলাদেশের ১৫,০৯৪ টাকা।
  • এবং সুইজারল্যান্ড এর ১০০০ সুইস ফ্রাংক = বর্তমানে বাংলাদেশের ১,৫০,৯২৪ টাকা।

সুইজারল্যান্ড নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়

আপনি যদি সুইজারল্যান্ডে নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টা করেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে কিছু শর্ত মানতে হবে। নিচে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়গুলো আলোচনা করা হলো:

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো, সুইজারল্যান্ডেও নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে তিনটি প্রধান মাধ্যম আছে:
  • দীর্ঘ সময় বসবাস করা লাগবে
  • বংশসূত্রের মাধ্যমে
  • এই দেশে বিবাহ করার মাধ্যমে
এছাড়াও, একজন বাংলাদেশী ও ভারতীয় নাগরিক ঠিক যেভাবে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাবেন, সেই বিষয়েও আলোচনা করা হলো।

১. স্থায়ী বসবাস:

সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রথম ধাপ হলো স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়া। ভারত এবং বাংলাদেশের নাগরিকরা সাধারণত যে পদ্ধতিতে স্থায়ী হতে পারেন, চলুন সে সম্পর্কে জানা যাক:

কর্মসংস্থান হিসাবে ভিসা: আপনি যদি সুইজারল্যান্ডে দীর্ঘদিন যাবত চাকরি করেন অথবা কাজ করে থাকেন, সেক্ষেত্রে স্থায়ী নাগরিকত্ব ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

শিক্ষা ভিসা: সুইজারল্যান্ডের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পাওয়ার পর ভর্তি হলে, আপনি স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। সুইজারল্যান্ডে শিক্ষা জীবন শেষ করার পর আপনি চাইলে চাকরি বা কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং পরবর্তীতে স্থায়ী নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

পরিবার পুনর্মিলন: যদি আপনার পরিবারের কেউ সুইজারল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করে থাকেন, তবে আপনি পরিবারের সাথে জীবন যাপন করার জন্য পুনর্মিলন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

 ২.স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া:

সুইজারল্যান্ডের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য আপনাকে দীর্ঘদিন যাবৎ এই দেশে বসবাস করতে হবে। সাধারণত, আপনাকে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ বছর সুইজারল্যান্ডে বসবাস করার পরেই আপনি স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারবেন। এই সময়ে আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন, চলুন সেই শর্তগুলো সম্পর্কে জানা যাক।

স্থায়ী বাসিন্দা হতে হলে আপনাকে নিম্নলিখিত শর্তগুলো পূরণ করতে হবে:
  • ভাষা জ্ঞান অর্জন: সুইজারল্যান্ডের জার্মান, ফ্রেঞ্চ বা ইতালীয় এই ভাষাগুলোর মধ্যে যেকোনো একটিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
  • সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে একীভূতকরণ: সুইস সমাজের সাথে একীভূত হতে হবে এবং সেখানকার স্থানীয় সংস্কৃতি ও রীতিনীতি মেনে চলতে হবে।
  • অপরাধমুক্ত থাকা: আপনাকে অবশ্যই অপরাধমুক্ত থাকতে হবে, অর্থাৎ আপনার যেন কোনো অপরাধের রেকর্ড না থাকে।
৩. নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা:

স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার পরে আপনি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।

আবেদন প্রক্রিয়া: আপনাকে সুইজারল্যান্ডের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্রের সাথে পরিচয়পত্র, বাসস্থান, কাজের বিবরণ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা: সুইজারল্যান্ডের সরকারের কাছে আপনার ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা দিতে হবে। এর মাধ্যমে স্থানীয় ভাষায় কথা বলা ও লেখার দক্ষতা প্রদর্শনী করা হবে।

সাক্ষাৎকার (ইন্টারভিউ): কৃষি ক্ষেত্রে (সম্ভবত স্থানীয় সংস্কৃতি ও সমাজের সাথে একীভূত হওয়ার ক্ষেত্রে) কর্তৃপক্ষ আপনার সাক্ষাৎকার নিতে পারে। তাঁরা নিশ্চিত হতে চাইবেন যে, আপনি আসলে সুইস সমাজের সাথে পুরোপুরি একীভূত হতে পারবেন কিনা।

নাগরিকত্ব পরীক্ষার সফলতা: সুইজারল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদন অনুমোদন করলে, আপনি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন।

FAQs

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে বিমানে করে যেতে সাধারণত প্রায় ১৫ ঘণ্টা থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগে।

প্রশ্ন: সুইজারল্যান্ডের মুদ্রার নাম কী?
উত্তর: সুইস ফ্রাংক বা সুইস ফ্রাঁ।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডের দূরত্ব কত কিলোমিটার?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডের দূরত্ব হলো প্রায় ৭,৫২৮ কিলোমিটার।

প্রশ্ন: সুইজারল্যান্ড টাকার মান কত?
উত্তর: সুইজারল্যান্ডের ১ সুইস ফ্রাংক (Swiss Franc) বাংলাদেশের প্রায় ১৫১ টাকা-র সমান।

লেখকের শেষ মতামত

সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকের থাকলেও সঠিক গাইডলাইনের অভাবে অনেকেরই সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাছাড়া, যখন সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন অনেকেই সঠিক সময়ে আবেদন না করার কারণে ভিসা পান না। আবার অনেকেই আছেন, যারা সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসা কিভাবে পেতে হয়, সেই বিষয়ে জানেন না।

আশা করি, আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এই সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য আপনারা পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই বিষয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোনো বিষয় সম্পর্কে বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url