সিঙ্গাপুর ভিসা কত টাকা ২০২৬ - সিঙ্গাপুর যেতে কি কি লাগে জানুন

সিঙ্গাপুর ভিসা কত টাকা জানতে হলে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে সিঙ্গাপুর যেতে মোট কত টাকা লাগবে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পুরো লেখাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট হলেও সিঙ্গাপুর একটি উন্নত এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী আধুনিক রাষ্ট্র।
সিঙ্গাপুর ভিসা কত টাকা
সেখানে গেলে আপনি উপভোগ করতে পারবেন উন্নত জীবনযাত্রার মান, চমৎকার স্বাস্থ্যসেবা এবং উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা। সিঙ্গাপুর, যা পৃথিবীর অন্যতম নিরাপদ রাষ্ট্রগুলোর একটি, সেখানে যাওয়ার আগে আপনার সিঙ্গাপুর ভিসার খরচ সম্পর্কে জানা আবশ্যক।

উন্নত এই দেশটির প্রতি বিশ্বজুড়ে মানুষের আকর্ষণ রয়েছে এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এখানে পাড়ি জমাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকেও বহু মানুষ বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে এই দেশে যাচ্ছে। অতএব, এই দেশে ভ্রমণের পূর্বে সিঙ্গাপুর যেতে মোট কত টাকা লাগতে পারে, সে বিষয়ে একটি ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরি।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ

সিঙ্গাপুর ভিসা কত টাকা ২০২৬

সিঙ্গাপুরের ভিসার খরচ ভিসা প্রসেসিং পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর ভিসা তৈরি করতে বর্তমানে সর্বনিম্ন প্রায় ৩ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৫লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে, বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করলে খরচ সর্বোচ্চ প্রায় ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। উল্লেখ্য, পূর্বের তুলনায় বর্তমানে সিঙ্গাপুর ভিসার চাহিদা অনেক বেড়েছে।

এর ফলস্বরূপ, ভিসার ক্যাটাগরির ভিত্তিতে সিঙ্গাপুর ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন প্রায় $30$ হাজার থেকে $50$ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ প্রায় ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে।বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম চালু আছে। ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী সিঙ্গাপুর ভিসার খরচ নির্ধারিত হয়।
  • স্টুডেন্ট ভিসা: ন্যূনতম প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা।
  • ফ্যামিলি ভিসা: ন্যূনতম প্রায় ২ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা।
  • ড্রাইভিং ভিসা: ন্যূনতম প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা।
  • কোম্পানি ভিসা: ন্যূনতম প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা।
  • ক্লিনার ভিসা: ন্যূনতম প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা।

সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা কত টাকা

বর্তমানে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনের জন্য বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সিঙ্গাপুর ভ্রমণের জন্য টুরিস্ট ভিসা চালু আছে।বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সির ওপর নির্ভর করে সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন প্রায় ২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা কত টাকা

সিঙ্গাপুরের কাজের ভিসা তৈরি করতে বর্তমানে এজেন্সির উপর নির্ভর করে খরচ সর্বনিম্ন প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।তবে, এজেন্সিতে পরিচিত কর্মকর্তা থাকলে খরচ কিছুটা কম হয়; সেক্ষেত্রে সর্বনিম্ন প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত টাকা

সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম অন্যান্য ভিসার চেয়ে সাধারণত বেশি হয়। বর্তমানে এই ভিসার খরচ সর্বনিম্ন প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

তবে, সরকারিভাবে ভিসা তৈরির খরচ তুলনামূলকভাবে কম। সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে সর্বনিম্ন প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

সিঙ্গাপুর যেতে কি কি যোগ্যতা লাগে?

সিঙ্গাপুরে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ সবার থাকে না। এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনার নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা থাকা আবশ্যক। সিঙ্গাপুর যেতে কী কী যোগ্যতা প্রয়োজন, তা নিচে দেখে নিন।
  • মেডিকেল রিপোর্ট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
  • করোনা ভ্যাকসিনের টিকা সনদ
  • বিগত ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে এবং এতে কমপক্ষে দুটি পাতা ফাঁকা থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ড (NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র।
  • আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৪৫ বছর হতে হবে।

সিঙ্গাপুর যেতে কি কি লাগে?

সিঙ্গাপুর যেতে কি কি লাগে, সে সম্পর্কে আপনার জানা খুবই জরুরি। কারণ, অন্য সব দেশের মতোই সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্যও কিছু নির্দিষ্ট নথিপত্র লাগে। প্রথমে আপনাকে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করতে হবে, এরপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে। 
সিঙ্গাপুর যেতে কি কি লাগে
কারণ, ভিসা আবেদন করার সময় এই নথিপত্রগুলো প্রয়োজন হবে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক, সিঙ্গাপুর যেতে আপনার ঠিক কোন কোন কাগজপত্রগুলো লাগবে।
  • আপনার বৈধ পাসপোর্ট (মেয়াদ ৬ মাস এবং সর্বনিম্ন একটি পাতা খালি থাকতে হবে)
  • সিঙ্গাপুরের অবস্থানরত কোন ব্যক্তির আমন্ত্রণপত্র
  • ভিসা আবেদন ফি
  • সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • জাতীয় পরিচয়পত্র ফটোকপি
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
  • চেয়ারম্যান কর্তৃক চারিত্রিক সনদ
  • কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট (যদি লাগে)
  • কাজের অভিজ্ঞতায় প্রমাণপত্র (যদি লাগে)
আপনারা যদি সিঙ্গাপুর যেতে চান, তাহলে উপরে উল্লেখ করা কাগজপত্রগুলো অবশ্যই লাগবে। তাই ভিসা আবেদনের আগেই এই নথিগুলো সংগ্রহ করে রাখা উচিত। কারণ, কাগজপত্র সঠিক না থাকলে আপনি ভিসা আবেদন করতে পারবেন না, অর্থাৎ সিঙ্গাপুর যাওয়া সম্ভব হবে না।

সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে?

সিঙ্গাপুর যেতে কত টাকা লাগে? তা নির্ভর করে আপনার ভিসার ক্যাটাগরি, ভিসার মেয়াদ এবং গন্তব্যের ওপর। সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে:
  • কেউ কাজের উদ্দেশ্যে গেলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা লাগবে।
  • পড়াশোনার জন্য গেলে স্টুডেন্ট ভিসা লাগবে।
  • ভ্রমণের জন্য ভিজিট ভিসা প্রয়োজন।
  • ব্যবসার উদ্দেশ্যে গেলে বিজনেস ভিসা নিতে হবে।
এছাড়াও, অন্য কোনো উদ্দেশ্যে গেলে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি সিঙ্গাপুর যেতে পারবেন। আপনার ভিসার ক্যাটাগরি এবং ধরনের ওপর নির্ভর করে সিঙ্গাপুরের ভিসার দাম কত হবে, তা নির্ধারণ করা যায়।

যদি আপনি আত্মীয়-স্বজন বা এলাকার পরিচিত কোনো মানুষের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর যেতে পারেন, সেক্ষেত্রে খরচ কিছুটা কম হতে পারে। আর আপনি যদি এজেন্টের মাধ্যমে যেতে চান, তবে আপনার খরচ একটু বেশি হবে। এজেন্টের মাধ্যমে গেলে অবশ্যই সতর্ক থাকা দরকার।

চলুন, কোন কোন ভিসা এবং ক্যাটাগরিতে কত টাকা লাগতে পারে, সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • কাজের ভিসা: সাধারণত এই ভিসায় সিঙ্গাপুর যেতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা: এই ভিসায় সিঙ্গাপুর যেতে খরচ ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।
  • স্টুডেন্ট ভিসা: সিঙ্গাপুরে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চাইলে খরচ পড়বে ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৮ লক্ষ টাকার মতো।
  • বিজনেস ভিসা: বিজনেস ভিসার মাধ্যমে সিঙ্গাপুর যেতে খরচ হতে পারে ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মতো।
  • টুরিস্ট ভিসা: সিঙ্গাপুর টুরিস্ট ভিসায় যাওয়ার ক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। এই ক্ষেত্রে প্রায় ৩০০ ডলার বা বাংলাদেশী টাকায় আনুমানিক ৩০০০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
সিঙ্গাপুরে কাজ করার জন্য আপনাকে একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে হবে, যা সিঙ্গাপুরের পাস হিসেবে পরিচিত। এই ভিসা পেলে আপনি একজন বিদেশি নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সেখানে বৈধভাবে থাকতে ও কাজ করতে পারবেন। 

বিদেশে চাকরি বা নাগরিকত্ব পেতে ইচ্ছুক সবার জন্যই এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অপরিহার্য। সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদনের প্রক্রিয়াকরণে প্রায় চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। এই প্রক্রিয়াকরণের ফি সাধারণত ৫,০০০ টাকা থেকে ৮,০০০ টাকার মতো হয়ে থাকে। 

আপনি যদি ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের সহায়তা নেন, তাহলে তাদের ফি আরও বেশি হবে। ভিসা পাওয়ার পর সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পরে আপনাকে আরও কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংগ্রহ করা এবং পুনরায় মেডিকেল চেকআপ করানো।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে সর্বোচ্চ প্রায় ৬০ দিন বা সাড়ে সাত দিনের মতো সময় লাগতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সময় কম-বেশি হতে পারে। সাধারণত ৬০ দিনের মধ্যেই ভিসা পাওয়া যায়।

ভিসা প্রসেসিং-এর জন্য বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর গেলে খরচ বেশি হয়। অন্যদিকে, পরিচিত ব্যক্তি বা নিকটাত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে কাজের ভিসা নিয়ে গেলে তুলনামূলকভাবে খরচ কম হয়ে থাকে।

সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়

সিঙ্গাপুরে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চাইলে আপনি সরকারি এবং বেসরকারি উভয় উপায়ে আবেদন করতে পারেন। সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়
তবে মনে রাখতে হবে, সিঙ্গাপুর সরকার যখন শ্রমিক নিয়োগের সার্কুলার প্রকাশ করে, তখনই কেবল এই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব। সরকারিভাবে বিদেশে কাজের সার্কুলারগুলো 'আমি প্রবাসী' অ্যাপের মাধ্যমেও প্রকাশ করা হয়, যেখান থেকে আপনি প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।

সিঙ্গাপুরের কাজের ভিসার খরচ জেনে আবেদন করলে এবং সেখানে যেতে পারলে, আপনি দ্রুতই আপনার যাওয়ার খরচ তুলে নিতে সক্ষম হবেন। কারণ সেখানে দৈনিক ১৮ থেকে ২২ ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। সিঙ্গাপুরে মাসকে সাধারণত ২৬ দিন গণনা করা হয় এবং ন্যূনতম মাসিক বেতন ৪৮৮ ডলার। অতিরিক্ত কাজের ক্ষেত্রে বেতনের দেড় গুণ পাওয়া যায়।

তাই, দেরি না করে দ্রুত একটি বিশ্বস্ত ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে আপনার সিঙ্গাপুর কাজের ভিসার প্রসেসিং শুরু করতে পারেন। ভিসা হাতে পাওয়ার পরে অবশ্যই সিঙ্গাপুরের ভিসাটি যাচাই করে নিতে হবে।

সিঙ্গাপুর ভিসা প্রসেসিং ২০২৬

সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি মূলত বাণিজ্য, উৎপাদন এবং পর্যটন এই তিনটি স্তম্ভের ওপর নির্ভরশীল। এখানকার সুউচ্চ ভবনগুলো দেশটিকে একটি আধুনিক ভবিষ্যতের নগরী হিসেবে গড়ে তুলেছে।
সিঙ্গাপুর ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করার পর আপনি সরাসরি অফলাইনে দূতাবাসে গিয়ে ভিসার প্রসেসিং করতে পারবেন। তবে, আপনি চাইলে সিঙ্গাপুর ইমিগ্রেশন অ্যান্ড চেকপয়েন্টস অথরিটির ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অনলাইনেও খুব সহজে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

সিঙ্গাপুর দূতাবাসে ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার পর, আপনাকে একটি নির্দিষ্ট তারিখে সাক্ষাৎকারের জন্য যেতে হবে। সাক্ষাৎকার সম্পন্ন হওয়ার পর আপনার সিঙ্গাপুর ভিসার প্রসেসিং শুরু হয়। আবেদনটি পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই শেষে সিঙ্গাপুর দূতাবাস ফলাফল সম্পর্কে আবেদনকারীকে অবহিত করে।

অন্যথায়, আপনি কোনো এজেন্সির মাধ্যমেও সিঙ্গাপুর ভিসার প্রসেসিং করিয়ে নিতে পারেন। তবে, বাংলাদেশে সিঙ্গাপুর ভিসা এজেন্টদের তালিকা সম্পর্কে জেনে নিতে পারলে আপনার জন্য ভিসা প্রসেসিং প্রক্রিয়াটি আরও সহজ হবে।

বাংলাদেশে সিঙ্গাপুর ভিসা এজেন্টদের লিস্ট ২০২৫

বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর ভিসার জন্য অনুমোদিত কিছু প্রতিষ্ঠান এবং তাদের যোগাযোগের বিবরণ নিচে দেওয়া হলো। এই তথ্যগুলো সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নেওয়া হয়েছে:

১. পার্কওয়ে হসপিটালস সিঙ্গাপুর (প্রা.) লি. (Parkway Hospitals Singapore Pvt. Ltd.)
  • ঠিকানা: গুলশান
  • মোবাইল: ০১৭৩৬০০০০০০
  • টেলিফোন: ৯৮৫০৪২২ (২৪ ঘণ্টা সাপোর্ট)
২. আন্তর্জাতিক ভ্রমণ কর্পোরেশন (Antarjatik Bhraman Corporation)
  • ঠিকানা: গুলশান
  • টেলিফোন: ৯৮৫০৯৪০, ৯৮৮৫৪৭৯-৮০, ৯৮৫৫৬৪৭, ৯৮৬২৭৮৮, ৯৮৪২৬৪৫
৩. নভোএয়ার লিমিটেড (Novoair Limited)
  • ঠিকানা: বনানী
  • মোবাইল: ০১৯৭৮৪৪৩৭১৭
  • টেলিফোন: ৫৫০৪২৩৮৫
৪. রিজেন্সি ট্রাভেলস লিমিটেড (Regency Travels Limited)
  • ঠিকানা: বনানী
  • মোবাইল: ০১৭২০৯৬১৭৪০
  • টেলিফোন: ৯৮২১৯৮২, ৯৮৪৮০৫৭, ৯৮৮৮২৭০
৫. ডিসকাভারি ট্যুরস অ্যান্ড লজিষ্টিক (Discovery Tours & Logistic)
  • ঠিকানা: বনানী
  • টেলিফোন: ৯৮৬৩৩৪১, ৯৮২১৮২০, ৯৮৬৩৩৪৩, ৯৮৬৩৩৪০, ৯৮৪২৬
৬. সাইমন ওভারসিজ (Saimon Overseas)
  • ঠিকানা: গুলশান
  • টেলিফোন: ৯৮৮১৪০৮, ৯৮৮২২৭৩, ৯৮৮৫৩০৭
৭. লেক্সাস ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল (Lexus Tours & Travel)
  • ঠিকানা: বাংলামোটর
  • টেলিফোন: ৮৬১৩১২৬, ৮৬১৩১৮৪, ৯৬৩২৭৫০-৫২
৮. ভিক্টরি ট্রাভেল লিমিটেড (Victory Travel Limited)
  • ঠিকানা: মতিঝিল, ঢাকা
  • মতিঝিল টেলিফোন: ৯৫৬১৪৭১, ৯৫৫০০৯১৬, ৯৫৬২৩৯৭
  • বনানী টেলিফোন: ৯৮২০১৯৩, ৯৮২০১৪৬, ৯৮২০১৭৯
৯. ট্যালন কর্পোরেশন লিমিটেড (Talon Corporation Limited)
  • ঠিকানা: গুলশান, ঢাকা
  • টেলিফোন: ৯৮৯৪০০২৮, ৯৮৯৬৯০৯
১০. মেডিকনসাল্ট লিমিটেড (Mediconsult Limited)
  • ঠিকানা: গুলশান, ঢাকা
  • টেলিফোন: ০৯৮৪০০৩৩, ০৯৮৯২৮২৮
১১. সিল্কওয়েজ কার্গো সার্ভিস লিমিটেড (Silkways Cargo Service Limited)
  • ঠিকানা: গুলশান, ঢাকা
  • টেলিফোন: ৯৮৮৮২১১-২০ এক্সটেনশন ১৩০, ১৩১
১২. উনিয়ন ট্যুরস ট্র্যাভেলস লিমিটেড (Union Tours Travels Limited)
  • ঠিকানা: গুলশান, ঢাকা
  • টেলিফোন: ৯৮৫৪৫৬৬-৭৭ এক্সটেনশন ৪২৯

সিঙ্গাপুর যেতে কত বছর বয়স লাগে

সিঙ্গাপুরের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। আপনার ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী বয়সের শর্তগুলো ভিন্নরকম হবে। আপনি যদি টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করেন তবে আপনার বয়স লাগবে ১৫ বছর বা তার বেশি। যাদের বয়স ১৮ বছরের কম তাদের অবশ্যই অভিভাবক থাকা বাধ্যতামূলক। 
সিঙ্গাপুরে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর। অন্যদিকে, কাজের ভিসার জন্য আবেদন করলে বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বছরের মধ্যে। বয়সের এই মানদণ্ড পূরণ না হলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যেতে কত সময় লাগে

বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে যেতে কত সময় লাগবে, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনি কোন এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ করছেন তার ওপর। কিছু দ্রুততম এয়ারলাইন্স কোম্পানির তথ্য নিচে উল্লেখ করা হলো:
  • মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স,
  • মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স,
  • বাংলাদেশ বিমান,
  • কাতার এয়ার ওয়েজ,
  • সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স,
  • এয়ার এশিয়া,
  • থাই এশিয়া এয়ার। ইত্যাদি।
বাংলাদেশের ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের দূরত্ব প্রায় ৩৫০০ কিলোমিটার। এই দূরত্ব অতিক্রম করতে বিমানে সময় লাগবে প্রায় সাত ঘন্টা থেকে সাড়ে সাত ঘণ্টা। ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিটের আনুমানিক মূল্য পড়বে প্রায় ৫০,০০০ টাকা থেকে ৫২,০০০ টাকা পর্যন্ত।

সিঙ্গাপুর দেশ কেমন?

সিঙ্গাপুর হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি ছোট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নগর-রাষ্ট্র। দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুরকে বর্ণনা করতে গেলে প্রধানত কয়েকটি বিষয় উঠে আসে:

১. অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও সমৃদ্ধি: সিঙ্গাপুরকে সাধারণত এশিয়ার অন্যতম 'অর্থনৈতিক বাঘ' হিসেবে গণ্য করা হয়। দেশটি বিশ্বের অন্যতম ধনী এবং দ্রুত উন্নত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে একটি। সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি মূলত একটি উন্নত, মুক্তবাজার অর্থনীতি। কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও কঠোর নীতি, ব্যবসায়-বান্ধব পরিবেশ এবং দুর্নীতির অনুপস্থিতির কারণে দেশটি দ্রুত উন্নতি করেছে।

এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম বন্দর এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি বড় কেন্দ্র। বিশেষ করে ব্যাঙ্কিং, শিপিং এবং তেল শিল্পের মতো আর্থিক ও বাণিজ্যিক খাতে দেশটি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। সিঙ্গাপুরের মানুষের মাথাপিছু আয় খুবই উচ্চ, যা তাদের জীবনযাত্রার উচ্চ মানকে নির্দেশ করে।

২. আধুনিকতা ও পরিচ্ছন্নতা: সিঙ্গাপুর তার অত্যাধুনিক অবকাঠামো, সুপরিকল্পিত নগরী এবং অসাধারণ পরিচ্ছন্নতার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। দেশটি একটি 'ভবিষ্যতের শহর' হিসেবে পরিচিত, যেখানে স্থাপত্য এবং প্রযুক্তির আধুনিক ব্যবহার দেখা যায়। এখানে অত্যন্ত সুবিন্যস্ত এবং যানজটমুক্ত রাস্তাঘাট রয়েছে।

সিঙ্গাপুরের আইনশৃঙ্খলা অত্যন্ত কঠোর। এখানে যত্রতত্র ময়লা ফেলা বা চুইংগাম খাওয়াও বড় ধরনের জরিমানার কারণ হতে পারে। এই কঠোরতার কারণেই দেশটি বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। শহর হওয়া সত্ত্বেও সিঙ্গাপুর তার মোট ভূখণ্ডের উল্লেখযোগ্য অংশ বনভূমি ও সবুজ স্থান বজায় রেখেছে, যা পরিবেশের প্রতি তাদের সচেতনতা প্রমাণ করে।

৩. বহুসাংস্কৃতিক সমাজ: সিঙ্গাপুর একটি বহুজাতি ও বহুসাংস্কৃতিক রাষ্ট্র। এখানে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষার মানুষের সহাবস্থান দেখা যায়। মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ চীনা, তবে মালয়, ভারতীয় (তামিল ভাষাভাষী সহ) এবং অন্যান্য জাতির মানুষও এখানে বসবাস করে।

দেশের প্রধান ভাষাগুলোর মধ্যে ইংরেজি, মালয়, মান্দারিন এবং তামিল অন্যতম। এখানে বৌদ্ধ, তাওবাদ, ইসলাম, খ্রিষ্টধর্ম এবং সনাতন ধর্মের অনুসারীরা মিলেমিশে থাকেন।

৪. শাসন ব্যবস্থা: সিঙ্গাপুরের সরকার বিশ্বজুড়ে একটি স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত সরকার হিসেবে পরিচিত। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, সিঙ্গাপুর বহুদিন ধরেই এশিয়ার সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে, যা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার অন্যতম প্রধান কারণ।

পরিশেষে বলা যায়, সিঙ্গাপুর একটি ছোট দেশ হলেও এটি বিশ্বের দরবারে একটি ধনী, নিরাপদ, অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, আধুনিক এবং বহুসাংস্কৃতিক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।শ

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর বিমান ভাড়া কত?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার বিমান ভাড়া সাধারণত প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যেতে কত সময় লাগে?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে বিমানে করে যেতে সাধারণত প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লাগে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর কত কিলোমিটার?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরের দূরত্ব প্রায় ৪ হাজার ২০ কিলোমিটার।

প্রশ্ন: সিঙ্গাপুর ভিসা ফি কত?
উত্তর: সিঙ্গাপুরের ভিসার আবেদন ফি ভিসার ক্যাটাগরি অনুসারে 50 ডলার থেকে 250 ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

প্রশ্ন: সিঙ্গাপুর ভিজিট ভিসা কত টাকা?
উত্তর: সিঙ্গাপুরের ভিজিট ভিসার জন্য খরচ সাধারণত প্রায় 50,000 টাকা থেকে 100,000 টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

লেখকের শেষ মতামত

সিঙ্গাপুরের ভিসার খরচ এজেন্সির প্রকারভেদ অনুসারে ভিন্ন হতে পারে। সরকারি প্রক্রিয়ায় কম খরচে সিঙ্গাপুর ভিসা তৈরি করা সম্ভব, তবে এই ক্ষেত্রে প্রচুর সংখ্যক আবেদনকারীর কারণে ভিসা পাওয়ার সুযোগ অনেক কম থাকে। সরকারিভাবে ভিসা তৈরির সময় দক্ষ শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

আজকের আলোচনায় আমরা জানলাম সিঙ্গাপুর ভিসা কত টাকা এবং সিঙ্গাপুর যেতে কি কি লাগে। এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে মন্তব্য করে জানাতে পারেন। আমি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url